বুধবার, ৫ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর জনগণ সব সম্ভাবনা হারিয়ে ফেলে

নিজস্ব প্রতিবেদক

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর জনগণ সব সম্ভাবনা হারিয়ে ফেলে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের স্বাধীনতা উপহার দেন। কিন্তু যারা এই স্বাধীনতা চায়নি ও এতে বিশ্বাসও করে না এবং যারা দেশের ভিতরে ও বাইরে থেকে স্বাধীনতার জন্য কোনো সহায়তাই করেনি তারাই ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। নৃশংস এই হত্যাকান্ডের পর বাংলাদেশের জনগণ সব সম্ভাবনা হারিয়ে ফেলেছিল। গত রবিবার স্বেচ্ছা রক্তদান কর্মসূচি উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাত স্মরণে ৪৫তম জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের সামনে কৃষক লীগ স্বেচ্ছা রক্তদান কর্মসূচি ও আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে অনলাইনে যুক্ত হয়ে এই কর্মসূচির উদ্বোধন ও বক্তব্য প্রদান করেন।  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে সরকার মানুষের মৌলিক চাহিদা নিশ্চিত করে উন্নত জীবন দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। তবে ২০০১-২০০৮ সাল পর্যন্ত দেশ এক অন্ধকার যুগের মধ্যে ছিল। ২০০৯ সালে আমরা জনগণের বিশাল ম্যান্ডেট নিয়ে আবার ক্ষমতায় আসি এবং তার পর থেকে আমরা কৃষক-শ্রমিকসহ সকল শ্রেণির ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। গরিব, এতিম ও অসহায়দের মুখে খাবার তুলে দেওয়ার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, বাংলাদেশকে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারলে জাতির পিতার স্বপ্নের বাস্তবায়ন হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ‘মুজিববর্ষ’ উদযাপনের লক্ষ্যে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছিল। তবে দুর্ভাগ্যক্রমে এ সময়ে বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারী আঘাত হানে এবং এ ভাইরাসের কারণে পুরো পৃথিবীর অর্থনীতি স্থবির হয়ে পড়েছে। কভিড-১৯ এর সংক্রমণ থেকে বাংলাদেশও বাদ যায়নি এবং এ অদৃশ্য শত্রু পুরো দেশকে অচল করে দিয়েছে। কৃষকদের ধান কাটা, জনগণের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ ও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের দাফনের কাজে সহায়তা করার জন্য কৃষক লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের অনলাইনে এ কর্মসূচিতে যুক্ত হন। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং যুগ্ম সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এতে বক্তব্য রাখেন। কৃষক লীগ সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ্রের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উম্মে কুলসুম স্মৃতি বক্তব্য রাখেন।

প্রধানমন্ত্রীকে মোদি-মমতার ঈদ শুভেচ্ছা : পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বাংলাদেশের জনগণকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একটি বার্তা পাঠিয়ে শুভেচ্ছা জানান। মোদির বার্তাকে উদ্ধৃত করে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম জানান, ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঈদুল আজহার উৎসব, যা ভারতের বেশ কয়েকটি অংশেও পালিত হয়, ‘আমাদের গভীর ঐতিহাসিক এবং সাংস্কৃতিক সংযোগের কথা মনে করিয়ে দেয়। তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি, এই উৎসবটি আমাদের নিজ নিজ সমাজে শান্তি ও সহনশীলতার চেতনা আরও বাড়িয়ে তুলবে এবং আমাদের দুই দেশের মধ্যে ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ককে উৎসাহিত করবে।’

প্রেস সচিব বলেন, মোদি ঈদ উপলক্ষে শেখ হাসিনা এবং বাংলাদেশের সকল মানুষের সুস্বাস্থ্য ও সমৃদ্ধি কামনা করেছেন। চলমান করোনাভাইরাস মহামারী সম্পর্কে বলতে গিয়ে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশে যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে তার প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন, ‘যেহেতু উভয় দেশ কভিড-১৯ পরিস্থিতি মোকাবিলা করে চলেছে, আমরা আপনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বের অধীনে বাংলাদেশে যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে তার জন্য প্রশংসা করি।’ মোদি আস্থা ব্যক্ত করে বলেন, ‘আমরা এই চ্যালেঞ্জিং সময় পাড়ি দিতে সক্ষম হব। স্বাস্থ্য খাতে সক্ষমতা বৃদ্ধিসহ আপনাদের যে কোনো উদ্যোগে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত রয়েছি।’ ঈদুল আজহা উপলক্ষে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশের জনগণকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠানো এক চিঠিতে এ শুভেচ্ছা জানান। চিঠিতে মমতা বলেন, ‘পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে আপনাকে, আপনার পরিবারকে এবং আপনার মাধ্যমে সকল বাংলাদেশিকে আমার অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।’ প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনার নেতৃত্বে আমাদের পরম প্রতিবেশী বাংলাদেশ রাষ্ট্রের আরও শ্রীবৃদ্ধি হবে, এই কামনা করছি।’ চিঠিতে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন।

মুক্তিযোদ্ধাদের প্রধানমন্ত্রীর ঈদ শুভেচ্ছা : প্রতিবছরের মতো এবারও ঈদুল আজহা উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের সকল মুক্তিযোদ্ধাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। পাশাপাশি শুভেচ্ছার নিদর্শনস্বরূপ ঈদের দিন প্রধানমন্ত্রী রাজধানীর মোহাম্মদপুরের গজনভি রোডে অবস্থিত শহীদ ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা পুনর্বাসন কেন্দ্র (মুক্তিযোদ্ধা টাওয়ার-১)-এ অবস্থানরত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের ফুল, ফল ও মিষ্টি উপহার পাঠান। প্রধানমন্ত্রীর সহকারী ব্যক্তিগত সচিব-২ গাজী হাফিজুর রহমান লিকু, উপ-প্রেস সচিব কে এম সাখাওয়াত মুন এবং সহকারী প্রেস সচিব এ বি এম সারওয়ার-ই-আলম সরকার সকালে তাদের হাতে এই উপহার সামগ্রী পৌঁছে দেন।

সর্বশেষ খবর