সোমবার, ২৫ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

চট্টগ্রাম নিয়ে চ্যালেঞ্জের মুখে ইসি

ভোট গ্রহণের প্রস্তুতি শেষ, পোলিং এজেন্টের মোবাইল ব্যবহার নিষিদ্ধ

গোলাম রাব্বানী

চট্টগ্রাম নিয়ে চ্যালেঞ্জের মুখে ইসি

চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ভাঙচুর করা হয় -বাংলাদেশ প্রতিদিন

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে নির্বাচন কমিশন। এবার প্রথম দলীয় প্রতীকে এ সিটিতে নির্বাচন হওয়ায় রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়ছে। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে দলীয় কোন্দল ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। নির্বাচনের জয়-পরাজয় নিয়ে চলছে নানা হিসাব-নিকাশ।

নির্বাচন বিশ্লেষকরা বলছেন, এ নির্বাচনে মূলত লড়াই হবে নৌকা-ধানের শীষ প্রতীকের মধ্যে। এ নির্বাচনে চারটি বিষয়কে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন ইসির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা। তারা বলছেন- নির্বাচন সুষ্ঠু করা, ভোটার উপস্থিতি বাড়ানো, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, দলীয় কোন্দলের কারণে সংঘাত-সহিংসতা নিয়ন্ত্রণ করা এ নির্বাচনের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। কর্মকর্তারা বলছেন, এ সিটি নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের হিড়িক চলছে। আইন লঙ্ঘন করেই চলছে মিছিল, মিটিং। ভোটের দিন নির্বাচনী আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ চ্যালেঞ্জ হবে। এ ছাড়া ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে দলীয় গ্রুপিংয়ের কারণে যে কোনো সময় সংঘাত-সহিংসতা হতে পারে। 

আগামী ২৭ জানুয়ারি ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) এ সিটিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আজ মধ্য রাতে এ নির্বাচনের প্রচারণার সময় শেষ হচ্ছে। শেষ মুহূর্তের প্রচার নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন মেয়র, সংরক্ষিত কাউন্সিলর ও সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থীরা। তবে শেষ মুহূর্তের  আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে খোদ নির্বাচন কমিশন। আগামী ২৭ জানুয়ারির এ নির্বাচনকে ঘিরে শঙ্কা রয়েছে ভোটার ও প্রার্থীদের মধ্যে। নির্বাচনী পরিস্থিতি নিয়ে আজ আনুষ্ঠানিক প্রেস ব্রিফিংয়ে আসার কথা রয়েছে একজন নির্বাচন কমিশনারের। এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে রক্ত ঝরেছে, দিন দিন নির্বাচনী মাঠ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের বিদায়ের আগে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এ নির্বাচনকে সুষ্ঠু শান্তিপূর্ণ করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে সাংবিধানিক এই প্রতিষ্ঠানটি। কেননা চট্টগ্রাম সিটির মতো হাইপ্রোফাইলের নির্বাচন এই কমিশনের আমলে আর নেই।

এদিকে গতকাল চট্টগ্রাম সিটি ভোট নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা নানা শঙ্কার কথা জানিয়েছেন সিইসিকে। বিশেষ করে দলীয় কোন্দল এ নির্বাচনে বড় সমস্যা হতে পারে। তবে সিইসি বলেছেন, প্রতিযোগিতায় নির্বাচন শুরু হবে। কিন্তু সহিংসতায় শেষ হবে না। নির্বাচনের চেয়ে জীবন অনেক মূল্যবান। সংঘাত-সংঘর্ষে জীবন চলে যাবে- এটা হতে পারে না। নির্বাচনে প্রতিযোগিতা করবেন, কিন্তু তা সহনশীল পর্যায়ে। এ নির্বাচন উপলক্ষে কয়েকজন নিরীহ মানুষের জীবন চলে গেছে। এভাবে সংঘাত-সংঘর্ষে জীবন চলে যাবে, এটা হতে পারে না। এ নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়ে রিটার্নিং অফিসার মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেছেন, সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আজ ২৫ জানুয়ারি মধ্যরাতে প্রচার শেষ হবে। তবে নির্বাচন নিয়ে কোনো চ্যালেঞ্জ নেই বলে মনে করছেন তিনি। এ সিটিতে মোট ভোটার ১৯ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৬ জন। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি ছাড়াও আরও পাঁচজন মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে সাধারণ ওয়ার্ড ৪১। এর মধ্যে একটি ওয়ার্ডে একজন কাউন্সিলর প্রার্থী মারা যাওয়ায় ভোট স্থগিত, আরেকটি ওয়ার্ডে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন। নির্বাচনের দিন চট্টগ্রাম সিটিতে কোনো সাধারণ ছুটি থাকছে না। এ নির্বাচনের ভোট গ্রহণের দিন পোলিং এজেন্টের মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ ঘোষণা করে পরিপত্র জারি করেছে কমিশন। ভোটের দিন প্রিসাইডিং অফিসার ও ভোট কেন্দ্রের নিরাপত্তায় নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছাড়া কেউ ভোট কেন্দ্রে মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবে না। গণপরিবহন চলাচলে কোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞা থাকছে না। কেননা অনেক ভোটার শহরের বাইরে থাকতে পারেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর