মঙ্গলবার, ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা
স্থানীয় সরকার নির্বাচন

অনিয়মে কর্মকর্তারা তদন্তে ইসি

গোলাম রাব্বানী

স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন নির্বাচনে ব্যালট ছিনতাই, অনিয়ম, জাল ভোট, ফলাফল পাল্টানো ও ইভি এম ভাঙচুরের ঘটনা তদন্তে নেমেছে নির্বাচন কমিশন। এ ছাড়া ফলাফল পাল্টানো ও জাল ভোট দিতে ইসির কর্মকর্তারা সহযোগিতা করেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি তিন ধাপের পৌরসভা নির্বাচন এবং সর্বশেষ চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনের ফলাফল পাল্টানোর অভিযোগ উঠেছে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। ইসি জানিয়েছে, নির্বাচন নিয়ে কারও অভিযোগ থাকলে সরাসরি নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিবের বরাবর লিখিত আবেদন করতে হবে এবং অভিযোগের বিষয়ে যথাযথ দলিয়াদি ইসির কাছে উপস্থাপন করলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে কমিশন। ইতিমধ্যে চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে ইভিএম ভাঙচুরের বিষয়ে মামলা হয়েছে। চট্টগ্রামের বিষয়ে অভিযোগ ইসির কাছে আসতে শুরু করেছে।

তৃতীয় ধাপের পৌরসভা ভোট শেষে ইসি জানিয়েছে, জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে ব্যালট পেপার হারিয়ে গেছে। কীভাবে হারিয়েছে সেটি ফাইন্ডআউট করা হচ্ছে, কয়েকটি বই হারিয়ে গেছে। ১০-১২টা বইয়ের পাতাও ছিল না। ব্যালট পেপার হারিয়ে যাওয়ার কারণে প্রিসাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসারসহ যারা ওই কেন্দ্রের দায়িত্বে ছিলেন, তাদের গ্রেফতার করা হয়। ওই কেন্দ্রের নির্বাচন বন্ধ করা হয়েছে। আর কুমিল্লার বরুড়ায় ব্যালট বাক্স তছনছ করা হয়েছে। সে কারণে সেই কেন্দ্রের ভোটও বন্ধ করা হয়েছে। ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, তৃতীয় ধাপের পৌরসভা নির্বাচনে অনেক জায়গায় নির্বাচনী অনিয়ম হয়েছে। এর মধ্য জামালপুরের সরিষাবাড়ী পৌরসভায় অনিয়মের কারণে এক ভোট কেন্দ্রের নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। এ ছাড়া কুমিল্লার বরুড়া পৌরসভার একটি কেন্দ্রে নির্বাচনও স্থগিত রয়েছে অনিয়মের কারণে। এ ছাড়া ময়মনসিংহের গৌরীপুর পৌরসভায় ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের অভিযোগে দুই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও একজন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানকে আটক করা হয়েছিল। এ ছাড়া লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ পৌরসভায় ৬ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম কাজিরখীল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের বাইরে দুই পক্ষে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘঠেছে। টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে কাউন্সিল প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে হামলায় নারীসহ ১০ জন আহত হয়েছে। এ ছাড়াও বিভিন্ন কেন্দ্রে সরকারি দলের মেয়র প্রার্থীর সঙ্গে দলীয় প্রতিপক্ষ বা অন্য দলের মেয়র প্রার্থীর, কোথাও কাউন্সিলর প্রার্থীর সঙ্গে প্রতিপক্ষ কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষ ঘটেছে। মুন্সীগঞ্জে পৌরসভা নির্বাচনে জোর করে ব্যালট ছিনিয়ে নৌকা প্রতীকে সিল মারা ঠেকাতে না পারায় এক সহকারী প্রিসাইডিং ও এক পোলিং অফিসারকে প্রত্যাহার করা হয়। তাদের অনিয়মে জড়িয়ে পড়ার বিষয়েও তদন্ত হচ্ছে। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নির্বাচনে অনিয়ম-বিশৃঙ্খলার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেছেন, পূর্বের যে বিশৃঙ্খলাগুলো আছে, সেগুলো যাতে আগামীতে না ঘটে। এ জন্য আইশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে লক্ষ্য রাখতে বলেছি। ৩০ জানুয়ারি পৌরসভা নির্বাচনের দুই-তিনটি ঘটনা আমরা আমলে নিয়েছি। সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারকে প্রতিবেদন দিতে বলেছি। প্রতিবেদনে যদি অপরাধের বিষয়টি উঠে আসে, তবে আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ নেব। এ ছাড়া যেসব কেন্দ্রে ঝামেলা হয়েছে, আমরা সেখানে ফলাফল স্থগিত করেছি। নির্বাচনী কর্মকর্তাদের দায়িত্বপালনে ব্যর্থতার বিষয়ে তিনি বলেন, চরভদ্রাসনে আমরা রিটার্নিং অফিসারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। তবে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে অবশ্যই আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেব। নির্বাচনী অনিয়মের তদন্তের বিষয়ে তিনি বলেছেন, সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারদের আমরা তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলেছি। প্রিসাইডিং অফিসারের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ আছে, আমরা সেটাও তদন্তে নেমেছি। আমরা দেখব তারা কী ধরনের অসদাচরণ করেছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর