বৃহস্পতিবার, ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

সরকারকে নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায় থাকতে হবে

শামসুল হক

সরকারকে নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায় থাকতে হবে

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. এম শামসুল হক বলেছেন, সরকারকে গণপরিবহনের পুরোটাই বেসরকারি খাতে ছাড়তে হবে। তবে এখন  যেভাবে আছে সেভাবে নয়। এখন খন্ডিত বিখন্ডিত গণমালিকনির্ভর সেবা দেওয়া হচ্ছে। তাই সাধারণ মানুষ সেবা পাচ্ছে না। আমরা যদি অন্যান্য দেশের সঙ্গে তুলনা করি তাহলে সরকারকে অবকাঠামো দিতে হবে। ভালো রাস্তা তৈরি করে দিতে হবে। ডিপো ও টার্মিনাল করে দেওয়া চাই। আর বেসরকারি পর্যায় থেকে গণপরিবহন চলবে। বেসরকারি পর্যায় থেকেই  পরিবহনগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করবে। তবে সরকার নিয়ন্ত্রণের ভূমিকায় থাকবে। এখান থেকে কিছু রেভিনিউ নেবে। এ মডেলে প্রাইভেট সেক্টর সেবাও দিতে পারবে, মানও বজায় রাখবে। গতকাল সন্ধ্যায় বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে ফোনে আলাপচারিতায় তিনি এ কথা বলেন। বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক এ পরিচালক বলেন, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে সচল করা যায় না। এটা ধীরে ধীরে নির্জীব হয়ে যায়। শুধু বিআরটিসিই নয়, রাষ্ট্রীয় অন্যসব প্রতিষ্ঠানেরও একই অবস্থা। আগে এসব প্রতিষ্ঠানের দরদ ছিল, দায়বদ্ধতা ছিল। এখন তা নেই। পাট, চিনি বা বিমানের দিকে যদি তাকাই তাহলে দেখব এখানে যোগ্যতা প্রমাণের সুযোগ নেই। পারফরম্যান্সের মূল্যায়ন নেই। তিনি বলেন, বিআরটিসি যদি লাভজনক প্রতিষ্ঠানও হয়, এই লাভ ভাগ করা যাবে না। কেউ অংশীদারও হতে পারবে না। সুতরাং এখানে সুযোগ-সন্ধানীরাই থাকে। যে যেভাবে পারছে তারা লুটপাট করে খাচ্ছে। কারণ, এখানে কারও কোনো দায়বদ্ধতা নেই। আমরা যদি নৌপরিবহনের দিকে তাকাই, সরকার নদীর নাব্য ঠিক রাখে। টার্মিনালও দেয়। সব বেসরকারি সুন্দর সুন্দর লঞ্চ চলে। দ্রুত গতিসম্পন্ন ভালো কেবিনবিশিষ্ট লঞ্চ চলছে। ভালো সার্ভিস দেওয়া হচ্ছে। এগুলো সরকারের হাতে ছেড়ে দেওয়া হলে দেউলিয়া প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে।

অধ্যাপক এম শামসুল হক বলেন, মানুষকে দুর্নীতি করার জন্য যদি কোথাও পাঠাতে হয়, তাহলে সরকারি প্রতিষ্ঠানে পাঠাতে হবে। কারণ, এখানে কাজের কোনো মূল্যায়ন হয় না। প্রবৃদ্ধির কোনো শেয়ার নেই। মানুষ বিশ্বাসও করে, সরকার সেবা দিতে পারে না। কিন্তু সরকার নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা পালন করতে পারে, ভালো পলিসি করে, তাহলে সেবার মান দিন দিন বাড়বে। আমাদের বিমান ও নৌপথে এটা আছে। আমাদের সড়কপথেও এটা করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, সরকার রাষ্ট্রীয় মালিকানার প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভর্তুকি দিয়ে চালাচ্ছে। ২০২১ সালে এসে এই পর্যায়ে এটা মেলে না। সেবার মান বাড়াতে হবে। বিআরটিসির ব্যবস্থাপনাই এমন যে, এখানে কোনো চালিকা শক্তি নেই। এ সেক্টরকে আধুনিকায়ন করতে হলে পরিচালনায় আধুনিক হতে হবে। দেশ এগোচ্ছে। সনাতন ধ্যান-ধারণায় সেবা দিতে পারে না বলেই মানুষ বেসরকারি খাতের দিকে ঝুঁকছে। কিন্তু সেখানে অসম প্রতিযোগিতা হয় কি না সরকার নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায় আছে।

সর্বশেষ খবর