রবিবার, ১৮ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

আবারও চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংস

ক্রীড়া প্রতিবেদক

আবারও চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংস

করোনাভাইরাসের কারণে কমলাপুর স্টেডিয়ামে দর্শকের দেখা মেলেনি। তবে উন্মাদনার কমতি ছিল না। বসুন্ধরা কিংসের নারী ফুটলারদের চ্যাম্পিয়ন, চ্যাম্পিয়ন চিৎকারে বীর শ্রেষ্ঠ শহীদ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়াম জেগে উঠেছিল। আরেকটি ইতিহাস লেখা হয়ে গেল বাংলাদেশের সবচেয়ে আলোচিত ক্লাব বসুন্ধরা কিংসের। গতবার অভিষেক আসরেই রেকর্ডের ছড়াছড়িতে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল সাবিনা খাতুনের নেতৃত্ব দেওয়া দলটি। আবারও সেই শিরোপার উৎসব। টানা দ্বিতীয়বার চ্যাম্পিয়ন হয়ে কিংসই লিখে ফেলল নতুন আরেক ইতিহাস। ড্র করলেই ট্রফিটা কিংসেরই ঘরে থাকত। কিন্তু কিংস যখন দেশের ফুটবলের কিং তাদের উৎসবটা স্মরণীয় না হলে তা কি মানায়?

সাবিনা-কৃষ্ণাদের উল্লাসটা হয়েছে তেমনি। জামালপুর কাঁচি ঝুলিকে ১৮ গোলের বন্যায় ভাসিয়ে টানা দ্বিতীয় বার চ্যাম্পিয়ন ফুটবলের কিং বসুন্ধরা কিংস। প্রথমার্ধেই ব্যবধান ৭-০ হওয়ায় কিংসের শিরোপা নিশ্চিত হয়ে যায়। কিন্তু গোলের নেশা যখন পেয়ে যায় তখন কি আর থামানো যায়। দ্বিতীয়ার্ধে এল আরও ১১ গোল। সত্যি বলতে কি ম্যাচ দেখে মনে হচ্ছিল কৃষ্ণারা যেন গোল পোস্টে শর্ট নিতে অনুশীলন করছে। এক তরফা ম্যাচে প্রতিপক্ষ জামালপুরকে বড্ড অসহায় মনে হচ্ছিল। তাদেরই ভাবখানা দেখে মনে হচ্ছিল রেফারির শেষ বাঁশি বাজলেই বেঁচে যায়। লড়াই যেন বসুন্ধরা বনাম বসুন্ধরা। কে কখন জালে বল পাঠাবেন এটাই ছিল প্রতিযোগিতা।

১৩ ম্যাচে কিংস পূর্ণ ৩৯ পয়েন্ট অ্যাকাউন্টে জমা রেখেছে। শেষ ম্যাচে হারলেও তাদের কোনো যায় আসে না। আসলে কথাটি কথার জন্যই বলা। শেষ ম্যাচে বসুন্ধরা হারা মানে ভুটান যেন আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে দেওয়া। নাসরিন স্পোর্টিংকে কত গোলে হারাবে সেটাই প্রশ্ন। অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েই সাবিনার হাতে ট্রফি উঠবে এ নিয়ে সংশয় নেই। গত আসরে লিগ শেষে কিংসের গোল সংখ্যা ছিল ১১৯। এবার এখন পর্যন্ত ১০৭ গোল। সুতরাং পূর্বের রেকর্ড ভাঙ্গারও সম্ভাবনা আছে।

পেশাদার লিগে যেন গোলের খরা চলছে। বিশেষ করে স্থানীয়রা এক্ষেত্রে বড্ড ম্লান। নারী লিগে বসুন্ধরার ফুটবলারাই গোল প্রতিযোগিতায় মেতেছিল। শিরোপা এমনই স্মরণীয় হওয়া উচিত। গতকাল ১৮ গোলে চার হ্যাটট্রিকে বিজয় নিশানা উড়িয়েছে বসুন্ধরা কিংস। কৃষ্ণারানী সরকার ৫, সাবিনা খাতুন ৪, শামসুন্নাহার জুনিয়র ও সানজিদা খাতুন ৩টি করে গোল করেন। ১টি করে অনু চাকমা, আনাই ও সুমাইয়া গোল করেন।

শুধু তাই নয়, নিজেদের মধ্যে এখনো আরেকটি প্রতিযোগিতা বাকি রয়েছে। কৃষ্ণা ২৪ ও সাবিনার গোল সংখ্যা ২১। সুতরাং লিগে কে হবেন সর্বোচ্চ গোলদাতা কিংসের শেষ ম্যাচ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গে এ-এক স্মরণীয় দৃশ্য ম্যাচে জার্সি পাল্টে চ্যাম্পিয়ন লেখা জার্সি গায়ে চড়িয়ে বাঁধ ভাঙ্গা উৎসবে মেতে উঠে সাবিনারা। পেশাদার লিগে অভিষেকের দুই বছরে মাথায় ফুটবলে ছয় শিরোপা। এ রেকর্ড শুধু কিংসকে মানায়। এর উল্লাসের মধ্যে এক কর্মকর্তা বলে উঠলেন এবার অপেক্ষা হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়ন।

বসুন্ধরার যত গোল

মনিকা ৩ মিনিট

আনাই মগিনি ৯ মিনিট

সাবিনা ১৬, ৬৩, ৮০, ৯০+৩ মিনিট

কৃষ্ণা ২৬, ২৮, ৩৯, ৫৩, ৮৯

সুমাইয়া ৩৬ মিনিট

সানজিদা ৫৫, ৭০, ৯০+২ মিনিট

শামসুন্নাহার ৬১, ৭৪, ৮৬ মিনিট

সর্বশেষ খবর