সোমবার, ২৪ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

প্রধানমন্ত্রীর কাছে আলাদা সময় চাইবে পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

এবারের পুলিশ সপ্তাহ-২০২২ এর দরবার না হওয়ায় পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আলাদা সময় চাইবে পুলিশ। সেখানেই তাঁর কাছে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া এবং পুলিশের বিভিন্ন অর্জন সম্পর্কে অবহিত করা হবে। একই সঙ্গে সাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতি হিসেবে বহুল কাক্সিক্ষত ‘বিপিএম’ এবং ‘পিপিএম’ পদকও তখন প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে গ্রহণ করবেন পুলিশ সদস্যরা। করোনা মহামারিতে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করার কারণে গতকাল শুরু হওয়া পুলিশ সপ্তাহ-২০২২ এর প্রথম দিনে পুলিশ সদস্যদের পদক পরানো হয়নি। তবে সাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতি হিসেবে ২৩০ জনই তাদের নামের শেষে এসব পদবি ব্যবহার করতে পারবেন।

গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান মরণোত্তর পদকপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যদের পরিবারের সদস্যদের এবং র‌্যাব মহাপরিচালকের নেতৃত্বে আটজনকে পদক পরিয়ে দেন। পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক মো. কামরুজ্জামান বলেন, যাদের পদক পরিয়ে দেওয়া হয়নি তাদের বিশেষ একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পদক পরিয়ে দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রীর সময় পাওয়া গেলে তিনিই পদক পরিয়ে দেবেন বলে আমাদের প্রত্যাশা। নইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে পদক পরিয়ে দেবেন। এদিকে গতকাল সকাল ১০টায় ভার্চুয়ালি পাঁচ দিনব্যাপী (২৩-২৭ জানুয়ারি) পুলিশ সপ্তাহ-২০২২ এর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ‘দক্ষ পুলিশ, সমৃদ্ধ দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’ স্লোগানে শুরু হওয়া রাজারবাগ পুলিশ লাইনস মাঠে বার্ষিক পুলিশ প্যারেডের মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী প্যারেডে ভার্চুয়ালি উপস্থিত থেকে পুলিশের বিভিন্ন কন্টিনজেন্ট ও পতাকাবাহী দলের সুশৃঙ্খল ও দৃষ্টিনন্দন প্যারেড পরিদর্শন এবং অভিবাদন গ্রহণ করেন। গতকালের বার্ষিক পুলিশ প্যারেডে অধিনায়ক হিসেবে নেতৃত্ব দেন গাজীপুর ইনসার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারের কমান্ড্যান্ট (পুলিশ সুপার) মো. ছালেহ উদ্দিন। তার নেতৃত্বে বিভিন্ন কন্টিনজেন্টের পুলিশ সদস্যরা সুশৃঙ্খল ও দৃষ্টিনন্দন প্যারেডে অংশ নেন। প্রধানমন্ত্রী পুলিশ সপ্তাহের প্যারেড পরিদর্শন করেন এবং অভিবাদন গ্রহণ করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে প্যারেড গ্রাউন্ডে উপস্থিত থেকে প্যারেড পরিদর্শন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। খোলা জিপে প্যারেড পরিদর্শনের সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন আইজিপি ড.  বেনজীর আহমেদ। প্যারেড পরিদর্শন শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বাংলাদেশ পুলিশ পদক তুলে দেন বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার এবং মরণোত্তর কর্মকর্তাদের পরিবারের হাতে। রাজারবাগে ঢাকা মহানগর পুলিশ লাইনসে এ অনুষ্ঠানে পুলিশ মহাপরিদর্শক  বেনজীর আহমেদসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। করোনা সংক্রমণের কারণে গত বছর পুলিশ সপ্তাহ অনুষ্ঠিত হয়নি। পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে ২০২০ সালে ১১৫ এবং ২০২১ সালে ১১৫ জনসহ মোট ২৩০ পুলিশ সদস্যকে পদক দেওয়া হয়। পদকের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম), বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম)-সেবা, রাষ্ট্রপতির পুলিশ পদক (পিপিএম) এবং রাষ্ট্রপতির পুলিশ পদক (পিপিএম)-সেবা।

এদিকে বাংলাদেশ পুলিশের ইতিহাসে এবারই প্রথম স্ত্রীর উপস্থিতিতে র‌্যাঙ্ক ব্যাজ পরলেন সদ্য পদোন্নতিপ্রাপ্ত সাত অতিরিক্ত আইজিপি। গতকাল বিকালে পুলিশ সদর দফতরের হল অব প্রাইডে আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ এবং অতিরিক্ত আইজি ড. মো. মইনুর রহমান চৌধুরী পদোন্নতিপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের র‌্যাঙ্ক ব্যাজ পরিয়ে দেন। পরে নতুন অতিরিক্ত আইজিপিদের উদ্দেশ্যে আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, দেশ ও জনগণের কল্যাণে আরও নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করতে হবে। পুলিশের কাছে মানুষের প্রত্যাশা আকাশচুম্বী। মানুষের প্রত্যাশা পূরণে নিজেদের অতিক্রম করে তাদের সেবা দিতে হবে। পদোন্নতিপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা হলেন- পুলিশ সদর দফতরের ডিআইজি আবু হাসান মুহম্মদ তারিক, পিবিআইর ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার, কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের পরিচালক (ডিআইজি) ড. হাসান উল হায়দার, স্পেশাল ব্রাঞ্চের অতিরিক্ত আইজি (চলতি দায়িত্ব) মো. মনিরুল ইসলাম, বরিশাল  মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান, শিল্পাঞ্চল পুলিশের ডিআইজি মো. মাহাবুবর রহমান ও ময়মনসিংহ রেঞ্জের ডিআইজি ব্যারিস্টার  মো. হারুন অর রশিদ।

সর্বশেষ খবর