শুক্রবার, ২২ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন

তিন দিনেও শনাক্ত হয়নি অপরাধী আন্দোলনে অনড় শিক্ষার্থীরা

চবি প্রতিনিধি

তিন দিনেও শনাক্ত হয়নি অপরাধী আন্দোলনে অনড় শিক্ষার্থীরা

ছাত্রী নির্যাতনের প্রতিবাদে গতকাল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ -বাংলাদেশ প্রতিদিন

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ছাত্রী হেনস্তার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্লাস বর্জন করে দফায় দফায় আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। রবিবার রাত ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেনের পুকুরপাড়ে এক ছাত্রীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের পর ভিডিও ধারণ এবং মোবাইল-টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আন্দোলনের সূত্রপাত হয়। তিন দিন পেরিয়ে যাওয়ার পরও প্রশাসন কাউকে শনাক্ত করতে না পারায় ক্ষোভ পুঞ্জীভূত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে। ঘটনার তিন দিন পর বুধবার হাটহাজারী থানায় অজ্ঞাতনামা পাঁচজনকে আসামি করে মামলাও করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। গতকাল তিন দফায় শিক্ষার্থীরা প্রগতিশীল ছাত্র জোট ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে আন্দোলন করেন। বেলা ১১টায় বিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে প্রথম দফায় আন্দোলন শুরু করেন। নিরাপদ ক্যাম্পাস ও দোষীদের বিচারের দাবিতে দ্বিতীয় দফায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। তৃতীয় দফায় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে সব শিক্ষার্থী এক হয়ে বেলা ১টা পর্যন্ত আন্দোলন করেন। এতে কয়েকজন শিক্ষকও যোগ দেন।

আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা দাবি করে, ঘটনার চার দিন পেরিয়ে গেলেও বিচার করতে পারেনি প্রশাসন। শুধু এ ঘটনা নয়, এর আগেও ছাত্রীদের শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটেছে ক্যাম্পাসে। তবে কোনো বিচার হয়নি। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এমন নিকৃষ্ট ঘটনার বিচার চার ঘণ্টার মধ্যে হওয়ার কথা ছিল কিন্তু তা চার দিনেও হয়নি। শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অভিভাবক বলে জানেন কিন্তু প্রশাসন তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারছেন না। এর আগে বুধবার রাত ১০টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন ছাত্রীরা। চার দফা দাবি নিয়ে বিক্ষোভ করেন তারা। দাবিগুলো হলো- এক. বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল ও মেডিকেল সেন্টারে প্রবেশের সময়সীমা তুলে নেওয়া ও ক্যাম্পাসে ২৪ ঘণ্টা নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। দুই. যৌন নিপীড়ন সেল ভেঙে নতুন কার্যকরী যৌন নিপীড়ন সেল গঠন এবং গঠিত সেলে বিচার নিশ্চিতের জন্য সর্বোচ্চ সময় থাকবে এক মাস। এক মাসে বিচার নিশ্চিতে ব্যর্থ হলে যৌন নিপীড়ন সেল নিজে শাস্তির আওতাভুক্ত হবে। তিন. যৌন নিপীড়ন সেলে বর্তমান চলমান কেসগুলো আগামী চার কার্যদিবসের মধ্যে সমাধান করে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। চার. চলমান ঘটনাগুলোর বিচার আগামী চার কার্যদিবসের মধ্যে করতে না পারলে প্রক্টরিয়াল বডির সবাইকে পদত্যাগ করতে হবে। লিখিত আকারে পেশকৃত এসব দাবি মেনে নিয়ে স্বাক্ষর করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক এস এম মনিরুল হাসান। তিনি বলেন, এসব সমস্যা চার কর্মদিবসের মধ্যে মীমাংসা না করতে পারলে প্রক্টরিয়াল বডি পদত্যাগ করবেন।

 

সর্বশেষ খবর