মঙ্গলবার, ১৬ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

লাল ফিতায় বন্দি প্লাস্টিক শিল্পনগরী

দ্রুত বাস্তবায়নে তাগিদ দিলেন ব্যবসায়ীরা

রুহুল আমিন রাসেল

পুরান ঢাকার ঝুঁকিপূর্ণ প্লাস্টিক কারখানা স্থানান্তর প্রকল্প দীর্ঘ সাত বছর ধরে আমলাতন্ত্রের লাল ফিতায় বন্দি। অথচ কারখানাগুলোকে পরিকল্পিত শিল্পনগরীতে স্থানান্তরের দাবি দীর্ঘদিনের। জানা গেছে, দেশে ছোট-বড় প্রায় ৫ হাজার প্লাস্টিক কারখানা রয়েছে। এ খাতের ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) আওতায় প্লাস্টিক শিল্পনগরী স্থাপনের প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। ২০১৫ সালে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে প্লাস্টিক শিল্পনগরী প্রকল্পটি একনেকে চূড়ান্ত অনুমোদন পেলেও আজও আলোর মুখ দেখেনি।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ প্লাস্টিক দ্রব্য প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি- বিপিজিএমইএ সভাপতি শামীম আহমেদ গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, প্লাস্টিক শিল্পনগরী গড়ে তোলার জন্য দীর্ঘদিন মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট সরকারি দফতরে ঘুরে ঘুরে হয়রান হয়েছি। আমলাতন্ত্রের লাল ফিতায় বন্দি হয়ে আছে প্লাস্টিক শিল্পনগরী প্রকল্প। ফলে পুরান ঢাকা থেকে দীর্ঘদিনেও সরানো যায়নি ঝুঁকিপূর্ণ প্লাস্টিক শিল্প-কারখানাগুলো। আমাদের দাবি দ্রুত প্লাস্টিক শিল্পনগরী প্রকল্প বাস্তবায়ন হোক। যত দ্রুত প্লাস্টিক শিল্পনগরী হবে, ততই কমবে অগ্নিকাণ্ড।  

তথ্যমতে, ২০১৫ সালের ১ ডিসেম্বর মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে এই প্লাস্টিক শিল্পনগরী প্রকল্পটি একনেকে চূড়ান্ত অনুমোদন হয়। ধলেশ্বরী সেতুর পশ্চিম পাশে বড়বর্ত্তা মৌজায় ৫০ একর জমিতে গড়ে উঠবে এই শিল্পনগরী। এ জন্য সরকারের নির্মাণ ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ২১০ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। নগরীতে ৩৪৮টি শিল্প-কারখানা স্থাপন করা হবে। এতে প্রায় ২০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে। এ উদ্যোগ দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশে পরিবেশবান্ধব প্লাস্টিক শিল্প গড়ে তোলার অভিযাত্রাকে এগিয়ে নেবে বলে মনে করেন উদ্যোক্তারা। এ প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ কয়েক দফা পরিবর্তন করে সর্বশেষ ২০২৩ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।

বিপিজিএমইএ জানায়, বর্তমানে প্লাস্টিক শিল্পনগরী প্রকল্পটি জমি অধিগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে। জমি অধিগ্রহণ মূল্য ইতোমধ্যে পরিশোধ করা হয়েছে। তবে প্লাটিক খাতের জন্য বরাদ্দ হওয়া প্রকল্পের বরাদ্দ বাতিলের প্রচেষ্টা চলছে। ওই ৫০ একর জমিতে ‘ডিসি নিবাস’ বানানো হতে পারে। একটি চক্র প্লাস্টিক শিল্প প্রকল্পটি বাতিলের চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছে। যদিও বাস্তব প্রয়োজনে ও দেশের শিল্পায়নের স্বার্থে ২০০৬ সাল থেকে বিপিজিএমইএ প্লাস্টিক খাতের জন্য আলাদা শিল্পনগরী স্থাপনের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে আসছে।

বিপিজিএমইএ বলছে, বর্তমানের চাহিদা অনুসারে কমপ্লায়েন্স ইস্যু পরিপালন ও রক্ষণাবেক্ষণে প্লাস্টিক শিল্প এস্টেটের দ্রুত বাস্তবায়নের কোনো বিকল্প নেই। প্লাস্টিক শিল্পনগরীতে পুরান ঢাকায় বিক্ষিপ্ত প্লাস্টিক কারখানা স্থানান্তর করা গেলে বাণিজ্য বৃদ্ধি, দুর্ঘটনা হ্রাস এবং আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশি পণ্য প্রতিযোগী ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া সম্ভব হবে, রপ্তানি আয় বাড়বে।

 

সর্বশেষ খবর