মঙ্গলবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

কমোডিটি এক্সচেঞ্জে বন্ধ হবে আন্ডার ও ওভার ইনভয়েসিং

শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম

নিজস্ব প্রতিবেদক

কমোডিটি এক্সচেঞ্জে বন্ধ হবে আন্ডার ও ওভার ইনভয়েসিং

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেছেন, দেশে কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালুর লক্ষ্যে কাজ চলছে। কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালু হলে সারা পৃথিবীর বাজার এবং নিজেদের বাজার পরিস্থিতি দেশের   ভিতরে বসেই দেখা যাবে। এতে আন্ডার ইনভয়েসিং, ওভার ইনভয়েসিংয়ের সুযোগ থাকবে না। গতকাল ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত ‘বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের সমস্যা ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ইআরএফের সভাপতি শারমিন রিনভীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় সেমিনারে প্যানেল আলোচক ছিলেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমান, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজের (বিএপিএলসি) সাবেক সভাপতি আজম জে চৌধুরী এবং বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকারস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সহ-সভাপতি মো.মনিরুজ্জামান। বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমাদের দেশের প্রধান সমস্যা কর্মসংস্থান। ভালো লোককে ভালো বেতন দিয়ে ভালো কর্ম ঠিক করে দেওয়ার লক্ষ্যে আমরা কাজ করছিলাম। ঠিক সে সময় এমন এক জায়গায় যুদ্ধ বেধে গেল, সারা বিশ্বের অর্থনীতিতে এর প্রভাব পড়ল। যুদ্ধের কারণে পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম গ্যাস ও জ্বালানি তেল উৎপাদনকারী দেশের সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। যেখান থেকে বেসিক ফুডগুলো বিভিন্ন দেশে যায়, সেই দেশ যুদ্ধে জড়িয়ে গেল। তার সঙ্গে ইউরোপের অন্যান্য দেশে প্রভাব পড়তে শুরু করল।’

শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, ‘যে ধাক্কা আমাদের লাগার কথা ছিল, তার থেকে কম লেগেছে। সারা পৃথিবীতে পুঁজিবাজারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর সংখ্যা ৮০-৯০ শতাংশ। আমাদের দেশে ঠিক উল্টো। যেখানে ৮০ শতাংশ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী, সেখানে আমাদের প্রটেকশনের ব্যবস্থা নিতেই হবে। সে কারণে আমরা ফ্লোর প্রাইস দিয়ে সাময়িক একটা ব্যবস্থা নিয়েছি। এটা স্থায়ী কোনো ব্যবস্থা নয়।’ বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমাদের নিজেদের যদি কমোডিটি এক্সচেঞ্জ হয়ে যায়, তখন আপনারা এখানে বসেই দেখতে পারবেন ঘানায় আজকে চালের দাম কত বা আমাদের গার্মেন্ট পণ্য কোন দেশ কত দামে নিতে চায়। আমরা এখানে বসেই সারা পৃথিবীর বাজার এবং নিজেদের বাজার দেখতে পারব। তখন আন্ডার ইনভয়েসিং, ওভার ইনভয়েসিংয়ের সুযোগ থাকবে না।’ সেমিনারে পুঁজিবাজারের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ তুলে ধরেন ডিএসইর চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমান। তিনি বলেন, ‘আমাদের বাজারে অপর্যাপ্ত পলিসি সাপোর্ট। ব্যাংকের ৬-৯ যে সুদের হার আছে, এর অর্থ হলো আমি ব্যাংক থেকে ৯ শতাংশ সুদে ঋণ নিতে পারব। কিন্তু বড় কোম্পানিগুলো ব্যাংকের কাছে গেলে ৮ শতাংশ সুদেও ঋণ দেবে। তখন কি তারা পুঁজিবাজারে যাবে? পুঁজিবাজারে এলে তাকে এর থেকে বেশি হারে লভ্যাংশ দিতে হবে।’ চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম বলেন, ‘আমাদের দেশের অর্থনীতির আকার অনুযায়ী কমোডিটি এক্সচেঞ্জ নেই। খুব তাড়াতাড়ি আমরা ভারতের মাল্টি কমোডিটি এক্সচেঞ্জের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হব। আমরা ইতোমধ্যে রুলস করে বিএসইসির কাছে পাঠিয়েছি। বিএসইসি অনুমোদন দিলে আমরা আশা করছি শিগগিরই কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালু করতে পারব।’

সর্বশেষ খবর