শনিবার, ২৫ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

সেপ্টেম্বরে রেল যাবে মোংলায় বন্দর ঘিরে নতুন সম্ভাবনা

চলছে ছোটখাটো ব্রিজ নির্মাণ ও রেলস্টেশন ফিনিশিংয়ের কাজ

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

সেপ্টেম্বরে রেল যাবে মোংলায় বন্দর ঘিরে নতুন সম্ভাবনা

খুলনা থেকে মোংলা বন্দর পর্যন্ত রেলপথ ৬৪.৭৫ কিলোমিটার। ইতোমধ্যে রেললাইনের অধিকাংশ কাজই শেষ হয়েছে। প্রকল্প এলাকায় মাটি পরীক্ষার (সয়েল টেস্ট) পর ডিজাইনে কিছু পরিবর্তন আসায় এখন শেষ মুহূর্তে ছোটখাটো ব্রিজ নির্মাণ ও কয়েকটি রেলস্টেশনের ফিনিশিং কাজ চলছে। প্রকল্পের কর্মকর্তারা বলছেন, ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পটি শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনাসহ বিভিন্ন কারণে বিলম্ব হওয়ায় ২০২৩ সালের জুলাই পর্যন্ত সময় বৃদ্ধির জন্য আবেদন করা হয়। এর মধ্যে ডিজাইন নিয়ে কিছুটা জটিলতা হওয়ায় প্রকল্পের সময় আরও তিন মাস বাড়ানো হয়। তবে সেপ্টেম্বরেই খুলনার ফুলতলা থেকে মোংলা বন্দর পর্যন্ত রেল চলাচল শুরু হবে। এতে বন্দর দিয়ে পণ্য আনা-নেওয়ার সুবিধা কাজে লাগিয়ে ভারত, নেপাল ও ভুটানের সঙ্গেও ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারিত হবে। জানা যায়, খুলনা শহর থেকে ৪৮ কিলোমিটার দক্ষিণে মোংলা-পশুর নদের সংযোগস্থলে দ্বিতীয় বৃহত্তম মোংলা সমুদ্রবন্দরের অবস্থান। আমদানিকারকরা বলছেন, বন্দরের সঙ্গে রেলসংযোগ না থাকায় পণ্য পরিবহন ভোগান্তিতে এতদিন বন্দরে অন্যান্য দেশের বড় মালবাহী জাহাজ ভিড়তে আগ্রহ দেখাচ্ছিল না। এ অবস্থায় বন্দর ঘিরে বাণিজ্যিক সমৃদ্ধির কথা বিবেচনায় ভারত, নেপাল, ভুটানসহ অন্যান্য দেশের সঙ্গে যোগাযোগ সম্প্রসারণে মোংলা বন্দরকে রেলসেবার আওতায় আনা হচ্ছে। খুলনা-মোংলা রেলপথ প্রকল্পের উপপরিচালক আহমেদ হোসেন মাসুম বলেন, ‘পদ্মা সেতু চালুর পর মোংলা বন্দর ঘিরে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে। পণ্য পরিবহনে মোংলা বন্দরকে রেলসেবার আওতায় আনতে খুলনা-মোংলা রেলপথ নির্মাণকাজ এখন শেষ পর্যায়ে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে আমরা ফুলতলা থেকে মোংলা পর্যন্ত রেল চালাতে পারব। ২০২২ সালে ডিসেম্বরে কাজটি শেষ করতে পারতাম। কিন্তু সয়েল টেস্টের পর ডিজাইনে কিছু পরিবর্তন আসায় তা সমাধান করতে সময় লাগছে। তবে সেপ্টেম্বরের আগেই নির্মাণকাজ শেষ করার লক্ষ্য রয়েছে।’ খুলনা-মোংলা রেলপথ প্রকল্পটি কয়েক ভাগে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। রেললাইনের পাশাপাশি রূপসা নদীর ওপর ৫ দশমিক ১৩ কিলোমিটার রেলসেতু নির্মাণ করা হয়েছে। ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এল অ্যান্ড টির প্রকল্পপ্রধান অমৃতোষ কুমার ঝাঁ বলেন, ‘করোনাসহ বিভিন্ন কারণে কয়েকটি ধাপে সময় ক্ষেপণ হওয়ায় কাজ শেষ করতে দেরি হয়েছে। তার পরও প্রকল্পটি শেষ পর্যায়ে থাকায় আমরা খুশি।’ বিশ্লেষকরা বলছেন, বন্দরের সঙ্গে রেলসেবা চালু হলে যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নে পাশের দেশের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারিত হবে। বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফ-উজ্জামান বলেন, খুলনা-মোংলা রেললাইন এ অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্যের একটি ইতিবাচক দিক। এটি চালু হলে আঞ্চলিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে; যা ডেল্টা অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

 

সর্বশেষ খবর