শুক্রবার, ১২ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

মন্ত্রী আমলাদের অহেতুক বিদেশ সফর নয়

২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকার এডিপি অনুমোদন, সর্বোচ্চ বরাদ্দ পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে

নিজস্ব প্রতিবেদক

মন্ত্রী আমলাদের অহেতুক বিদেশ সফর নয়

আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এবার সর্বোচ্চ ৭৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ পেয়েছে পরিবহন ও যোগাযোগ খাত। এর মধ্যে তিন মেট্রোরেল রুটের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ৮ হাজার ২২৫ কোটি টাকা। এমআরটি লাইন-৬ এর জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৩ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা, আর এমআরটি-১ এর জন্য বরাদ্দ ৩ হাজার ৯১০ কোটি টাকা। এ ছাড়া ৮৮০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে এমআরটি-৫ এর জন্য। গতকাল রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও এনইসি চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা। বৈঠক শেষে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এবং প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। এডিপি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, যোগাযোগ খাতের মোট বরাদ্দের মধ্যে ৪৪ হাজার ৫৭১ কোটি টাকা সরকারি ব্যয়, আর উন্নয়ন সহযোগীরা দেবে ৩১ হাজার ৩৭৩ কোটি টাকা। যোগাযোগ খাতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ পেয়েছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। এই বিভাগের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৩৪ হাজার ৬২ কোটি টাকা। এরপরই রেলপথ মন্ত্রণালয়ের জন্য ১৪ হাজার ৯৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের জন্য ৯ হাজার ৪৭৩ কোটি টাকা, সেতু বিভাগের জন্য ৯ হাজার ৬৪ কোটি, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের জন্য ৬ হাজার ৪৭০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৪৪ হাজার ৩৯৩ কোটি টাকা। এ খাতে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ পাচ্ছে বিদ্যুৎ বিভাগ। এ বিভাগের জন্য বরাদ্দ ৩৩ হাজার ৭৭৫ কোটি টাকা। এরপরই রয়েছে শিক্ষা খাত। আগামী এডিপিতে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২৯ হাজার ৮৮৯ কোটি টাকা, যা মোট এডিপির ১১ দশমিক ৩৬ শতাংশ এসবগুলো খাতের এডিপির মধ্যে তৃতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ এটি।

প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন : এনইসি সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারও কৃচ্ছ্রসাধন করতে বলেছেন। তিনি বলেন, ব্যয় বন্ধ করা হবে না। ব্যয় বন্ধ হলে অর্থনীতি অচল হয়ে যাবে। যেখানে দরকার সেখানে অবশ্যই ব্যয় করতে হবে। অহেতুক ব্যয়, আয়েশি ব্যয়, বিলাসী মনোভাব পরিহার করতে হবে। ঐহিত্যগতভাবে যদি কারও এসব মনোভাব থেকেও থাকে তা ভুলে যেতে হবে। এনইসি সভা শেষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসনগুলোর কথা তুলে ধরেন। কৃচ্ছ্রসাধনের কথা বলে মন্ত্রী বলেন, টাকা ঘরে রেখে আমরা ঘুমাব না। যেখানে নিয়ম ও আইন অনুযায়ী দরকার সেখানে ব্যয় করব এবং যেখানে লাভ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। টাকায় না হোক সেবায় লাভ হয়, জনগণের তুষ্টি হয়। মন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী সরকারের আমলা, কর্মকর্তা ও মন্ত্রিসভার সদস্যদের অহেতুক বিদেশ সফর নিরুৎসাহিত করতে বলেছেন। আপনারা জানেন ইতোমধ্যে এটা নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। আগামীতে আরও নিরুৎসাহিত করা হবে।

বিদেশি ঋণকে এইড নয়, ঋণই বলা হবে : এখন থেকে বিদেশি ঋণকে ফরেন এইড না বলে ঋণই বলা হবে বলে এনইসি বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আমরা ফরেন এইড শব্দটির পরিবর্তে বিদেশি ঋণ শব্দটি প্রতিস্থাপন করেছি। এখন থেকে এটা ব্যবহার হবে। আমরা কালোকে কালো এবং সাদাকে সাদাই বলব। ঋণকে আমরা ঋণই বলব। আমরা সুদে-আসলে এটা পরিশোধ করি। কাজেই এটাকে ঋণই বলব।

সাময়িক হিসাবে জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমে .০৩% : সাময়িক হিসাবে চলতি অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) ৬ দশমিক ০৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম। গতকাল শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি) বৈঠক পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।

সর্বশেষ খবর