বৃহস্পতিবার, ১৮ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৮২ টাকা দরে চিনি কিনবে সরকার

নিজস্ব প্রতিবেদক

কৃষি খাতে সারের চাহিদা মেটাতে রাষ্ট্রীয় চুক্তির আওতায় বিভিন্ন দেশ থেকে ২ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন বিভিন্ন ধরনের সার আমদানির ছয়টি এবং ১২ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন চিনি আমদানির একটি প্রস্তাবসহ মোট ৯টি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এতে ব্যয় হবে ১ হাজার ১৭৯ কোটি ২৩ লাখ ৮৩ হাজার ৮৮৬ টাকা। গতকাল অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে কমিটির ভার্চুয়াল সভায় ক্রয় প্রস্তাবগুলোতে অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় কমিটির সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে অনুমোদিত প্রস্তাবগুলোর বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান।

অতিরিক্ত সচিব বলেন, আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ১২ হাজার ৫০০ (+৫%) মেট্রিক টন চিনি আমদানির একটি প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডধারী ১ কোটি পরিবারের কাছে ভর্তুকি মূল্যে এই চিনি বিক্রি হবে। চিনি আমদানির জন্য আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করা হলে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অ্যাকসেনচ্যুয়েট টেকনোলজি ইনকরপোরেশন (স্থানীয় এজেন্ট : ওএমসি লিমিটেড, ঢাকা) সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে এই চিনি সরবরাহ করবে। প্রতি মেট্রিক টন ৪৯৫.৫০ মার্কিন ডলার হিসেবে ১২ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন চিনি আমদানিতে ব্যয় হবে ৬৬ কোটি ২৭ লাখ ৩১ হাজার ২৫০ টাকা। প্রতি কেজি চিনির দাম পড়বে ৮২.৮৫৮ টাকা। এদিকে, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্র থেকে কোনো পণ্য কেনা হবে না। বিষয়টি সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় আলোচনা হয়েছে কি না সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে এমন প্রশ্ন করা হলে সাঈদ মাহবুব খান বলেন, না, এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। প্রধানমন্ত্রী বলার পরও যুক্তরাষ্ট্র থেকে চিনি কেনার অনুমোদন দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশার লঙ্ঘন হলো কি না? সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে এমন পাল্টা প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে মন্তব্য করার এখতিয়ার আমি রাখি না। সভায়, ‘বাংলাদেশের ২৩টি পৌরসভায় পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন (প্রথম সংশোধিত)’ প্রকল্পে নিয়োজিত পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের ভেরিয়েশন প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এ কাজের জন্য ১১ কোটি ১৩ লাখ ৮৯ হাজার ২৫৬ টাকা ব্যয় বৃদ্ধির প্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় চট্টগ্রামের টিএসপি কমপ্লেক্স লিমিটেডের জন্য ১০ হাজার মেট্রিক টন (+১০%) ফসফরিক অ্যাসিড আমদানির একটি প্রস্তাবের অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এতে ব্যয় হবে ৬০ কোটি ৯৫ লাখ ৫৪ হাজার টাকা। অতিরিক্ত সচিব বলেন, কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো), বাংলাদেশ এর কাছ থেকে ১৭তম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার ক্রয়ের একটি প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি।

কাফকোর সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী সারের মূল্য নির্ধারণ করা হয় ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার প্রতি মেট্রিক টন ৩৭১.২৫ মার্কিন ডলার হিসেবে মোট ব্যয় হবে ১ কোটি ১১ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার সমপরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় ১২০ কোটি ৩ লাখ ৯৯ হাজার ৭৫০ টাকা। তিনি বলেন, রাষ্ট্রীয় চুক্তির আওতায় সৌদি আরব থেকে ২২তম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন (১০%+) বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানির একটি প্রস্তাবের অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এতে ব্যয় হবে ৯৮ লাখ ১৯ হাজার ৯০০ মার্কিন ডলার সমপরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় ১০৬ কোটি ২৫ লাখ ১৩ হাজার ১৮০ টাকা। এ ছাড়া সৌদি আরব থেকে তৃতীয় লটে ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি সার আমদানির একটি প্রস্তাবের অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। প্রতি মেট্রিক টন ডিএপি সার ৫৩২ মার্কিন ডলার হিসাবে মোট ব্যয় হবে ২ কোটি ১২ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার সমপরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় ২২৯ কোটি ৩৩ লাখ ৪৫ হাজার ৬০০ টাকা। সভায় রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় মরক্কো থেকে তৃতীয় লটে ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি সার আমদানির প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ডিএপি সার আমদানিতে ব্যয় হবে বর্তমান আন্তর্জাতিক বাজার মূল্যে সর্বমোট ২ কোটি ১৬ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার সমপরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় ২৩৩ কোটি ৪২ লাখ ৯৮ হাজার ২০০ টাকা। প্রতি মেট্রিক টন ডিএপি সার ৫৪১.৫০ মার্কিন ডলার। অতিরিক্ত সচিব বলেন, রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় কানাডা থেকে চতুর্থ লটে ৫০ হাজার মেট্রিক টন মিউরেট-অব-পটাশ (এমওপি) সার আমদানির প্রস্তাবের অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। কানাডা থেকে চতুর্থ লটে ৫০ হাজার (+১০%) মেট্রিক টন এমওপি সার আমদানিতে ব্যয় হবে বর্তমান আন্তর্জাতিক বাজার মূল্যে সর্বমোট ২ কোটি ৯ লাখ মার্কিন ডলার সমপরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় ২২৫ কোটি ২৩ লাখ ৯৩ হাজার টাকা। প্রতি মেট্রিক টন এমওপি সার ৪১৮ মা. ডলার।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর