আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য, কেন্দ্রীয় ১৪-দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু বলেছেন, শেখ হাসিনা কারও দয়ায় ক্ষমতায় আসেন নাই। এ দেশের মানুষের ভোটে বারবার নির্বাচিত হয়ে তিনি সরকার গঠন করেছেন। আজকে যারা নির্বাচন ও গণতন্ত্রকে ভয় পায়, তারাই ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসার চেষ্টা করেছে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে যারা এ দেশে হত্যা-ক্যু ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি সূচনা করেছে তারা গণতন্ত্রকে পেছন থেকে ছুরিকাঘাত করে ক্ষমতায় আসতে চায়। এ জন্যই তারা নির্বাচন বানচাল করতে চায়। গতকাল বিকালে রাজধানীর উত্তরায় রাজলক্ষ্মী আমির কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে ঢাকা মহানগর উত্তর ১৪-দলের ‘শান্তি সমাবেশে’ তিনি এসব কথা বলেন।
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস, ন্যাপের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট আবদুর রহমান, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি, স্থানীয় সংসদ সদস্য হাবিব হাসান প্রমুখ। আমির হোসেন আমু বলেন, ২০১৩-১৪ সালে তোমরা আন্দোলনের নামে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা করেছিলে, হাজার হাজার গাছ কেটে মানুষের চলার পথ বন্ধ করার চেষ্টা করেছিলে, শত শত স্কুল-কলেজ পুড়িয়েছিলে। কিন্তু তোমরা সফল হতে পার নাই। এ দেশের মানুষ প্রমাণ করেছে, তারা তোমাদের হত্যা, ক্যু ও আগুনসন্ত্রাস চায় না। তারা তোমাদের প্রত্যাখ্যান করেছিল। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা দেশের মানুষের খাদ্যের নিরাপত্তা দিতে সক্ষম হয়েছেন। কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে গ্রামে গ্রামে মানুষের চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা করেছেন। বঙ্গবন্ধুকন্যা গৃহহীন-ভূমিহীন মানুষদের জন্য ঘরের ব্যবস্থা করেছেন, করছেন। তিনি শুধু দেশের উন্নয়নই নয়, মানুষের পাঁচটি মৌলিক দাবি- খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসার সুযোগ করে দিয়েছেন। আল্লাহতায়ালা এসব নিরীহ মানুষের মুখের দিকে তাকিয়ে তাঁকে (শেখ হাসিনাকে) বাঁচিয়ে রেখেছেন, ক্ষমতায় রেখেছেন।
আমির হোসেন আমু বলেন, আজকে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠন হয়েছে। আগামী দিনেও এ দেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। মনে রাখবেন- তাদের যে আন্দোলন, নির্বাচন সামনে রেখে সেটা আসল কথা নয়। আজকে শেখ হাসিনা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করে অপরাধীদের শাস্তি দিয়েছেন। জাতীয় চার মূলনীতি সংবিধানে পুনর্নির্মাণ করেছেন। অসাম্প্রদায়িক রাজনীতি পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছেন। এ কাজগুলো তারা সহ্য করতে পারে না। এখানেই তাদের আঁতে ঘা লেগেছে।
১৪-দলের মুখপাত্র বলেন, তারা মুখে যাই বলুক, মূলত শেখ হাসিনা যখন পাকিস্তানকে পিছে ফেলে দিয়ে সব সূচকে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, আজকে সারা বিশ্ব যখন বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসা করে তখন তাদের গাত্রদাহ হয়। এ পাকিস্তানের প্রেতাত্মাদের এটা সহ্য হয় না। সেই গাত্রদাহ থেকেই তারা শেখ হাসিনাকে আঘাত করতে চায়। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে চায়। তাই এ দেশের শান্তি ও গণতন্ত্রকামী, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী অসাম্প্রদায়িক মানুষ সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব- এটাই হোক আমাদের আজকের শপথ। ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, তাদের লক্ষ্য নির্বাচন নয়, আজকে তারা সব দক্ষিণপন্থি শক্তিকে এক করেছে। তাদের লক্ষ্য শেখ হাসিনা সরকার। তারা তাঁকে পছন্দ করে না। কারণ শেখ হাসিনা সরকার তাদের গ্যাস দেয় নাই। শেখ হাসিনা সরকার তাদের বঙ্গোপসাগরে কোনো ঘাঁটি করতে দেবে না। শেখ হাসিনা সরকার তাদের হুকুম মাফিক চলবে না।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, পরিষ্কার কথা- আমরা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। যদি সাহস থাকে নির্বাচনে আসেন। নির্বাচনে না আসলেও যথাসময়ে নির্বাচন হবে। কে আসলো কে আসলো না, তার কোনো তোয়াক্কা আমরা করি না। নির্বাচন সংবিধান মেনে যথাসময়ে হবে।
জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার বলেন, আসুন সবাই মিলে এই অপশক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াই। বাংলাদেশের মাটিতে অবশ্যই মুক্তিযুদ্ধের শক্তিকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। এ দেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাবে। আগামী নির্বাচন সময়মতো হবে। সেখানে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আবার সরকার গঠন হবে। বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক কমরেড দিলীপ বড়ুয়া বলেন, বিএনপি ১৫ বছর ক্ষমতার বাইরে আছে, তারা বর্তমানে ক্ষুধার্ত। এসে যা কিছু পাবে খাবে। সুতরাং তারা ক্ষমতায় আসলে তাদের খাওয়ার হিংস্রতা আরও বেড়ে যাবে। এ সময় সবাইকে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান এই নেতা।