প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেছেন, প্রবাসীদের যথাযথ সম্মান জানাতে বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামী এক মাসের মধ্যে বিমানবন্দরে প্রবাসীদের জন্য ভিআইপি সেবা চালু হবে। প্রথম ধাপে মধ্যপ্রাচ্য থেকে দেশে আসা প্রবাসীরা এটা পাবেন। লাউঞ্জ ও বিশেষ ইমিগ্রেশন ডেস্ক ছাড়া ভিআইপিদের বাকি সব সুবিধা পাবেন প্রবাসীরা।
গতকাল প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। আসিফ নজরুল আরও বলেন, মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার নিয়ে সৃষ্ট জট খুলতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রভাব কাজে লাগানো হবে। আগামী দুই মাসের মধ্যে শ্রমবাজার সম্প্রসারণের নতুন খবর দেওয়া হবে। তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সমর্থন দিয়ে বিভিন্ন দেশে বিক্ষোভ করে প্রবাসীরা গ্রেপ্তার হয়েছেন, কারাবাস করে দেশে ফিরেছেন এমন ৮৭ জনের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রধান উপদেষ্টার উদ্যোগে আরব আমিরাত থেকে ৫৭ জন বিশেষ ক্ষমা পেয়ে দেশে ফিরেছেন। তাদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। এ সময় প্রবাসী আয় বাড়াতে বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে আসিফ নজরুল বলেন, প্রবাসীরা এখন থেকে সরাসরি প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংকে রেমিট্যান্স পাঠিয়ে তাদের ঋণের কিস্তি শোধ করতে পারবেন। এ সুযোগ এতদিন ছিল না। এতে প্রবাসী আয় বাড়বে। তিনি বলেন, প্রবাসীদের ঋণসহায়তা দিতে ১২টি বাণিজ্যিক ব্যাংক রাজি হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক ক্রেডিট গ্যারান্টি দিলেই এটি চালু হবে। দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় যেখানে প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংকের শাখা নেই, সেখানে সোনালী ও অগ্রণী ব্যাংকের শাখায় প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংকের বুথ চালু করা হবে। ১ কোটি টাকা পর্যন্ত ওয়েজ আর্নার্স বন্ড কেনার সীমাবদ্ধতা তুলে দেওয়া হয়েছে। এখন থেকে প্রবাসীরা যে কোনো পরিমাণ বন্ড কিনতে পারবেন। এতেও প্রবাসী আয় বাড়বে।
মালয়েশিয়া যেতে না পারা কর্মীদের টাকা ফেরতের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রবাসীকল্যাণ উপদেষ্টা বলেন, ১৭ হাজার কর্মীর মধ্যে ২৫ শতাংশ টাকা ফেরত পেয়েছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। শতভাগ কর্মীর টাকা ফেরত দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে। এ ছাড়া মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে চক্র গঠন নিয়ে তিনি বলেন, চক্র যেন ভেঙে যায়, সে চেষ্টাই করা হচ্ছে। দুর্নীতির তদন্ত করা হবে। তিনি বলেন, বিদেশে কর্মী পাঠাতে তিনটি সংস্থার অনুমতি লাগে, এখন থেকে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে আর নিয়োগ অনুমতি লাগবে না। এতে কর্মীদের ভোগান্তি ও সময় কমবে। এ ছাড়া অভিবাসন খরচ বাড়াতে দালাল বা মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য ভূমিকা রাখে। তাই দালালদের নিবন্ধন করা হবে। অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে রিক্রুটিং এজেন্সিকে ক্যাটাগরি সনদ দেওয়া হবে। এতে এজেন্সির মান সম্পর্কে সবাই জানতে পারবে।