গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে জুলাই-আগস্ট গণহত্যা মামলার প্রধান আসামি হওয়ায় শেখ হাসিনা আগে যত বিদ্বেষমূলক বক্তব্য দিয়েছেন তা সব মাধ্যম থেকে সরাতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। প্রসিকিউশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। এর আগে, সকালে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আবেদন করে প্রসিকিউশন টিম। আদেশের পর প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম সাংবাদিকদের জানান, আমাদের আবেদন ট্রাইব্যুনাল শুনেছেন এবং মঞ্জুর করেছেন। বাংলাদেশ সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষকে আদেশ দিয়েছেন যে, যেসব হেটস্পিচ (বিদ্বেষমূলক বক্তব্য) এখনো আছে, সেগুলো যেন অতি দ্রুত রিমুভ (সরানো) হয়। ভবিষ্যতে যেন শেখ হাসিনার কোনো ধরনের হেটস্পিচ সম্প্রচার বা প্রকাশ না হয় সে জন্য ট্রাইব্যুনাল আদেশ দিয়েছেন।
ট্রাইব্যুনাল আরও বলেছেন, বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের কারণে মামলার বিচারের সময় সাক্ষী এবং ভুক্তভোগীদের ট্রাইব্যুনালে আনা যাবে না। তারা ভয়ে আসবেন না। প্রসিকিউটর তামিম বলেন, আমরা আবেদনটি করেছিলাম একজন আসামির হেটস্পিচের বিষয়ে, তিনি হলেন শেখ হাসিনা। কারণ এখন পর্যন্ত শুধু ওনার হেটস্পিচগুলো আমাদের কাছে আছে, যেগুলোর প্রমাণ পেয়েছি। এগুলো তদন্তকে বাধাগ্রস্ত করে। আদালতের আদেশটি আমরা ফেসবুক, এক্স এবং ইউটিউবসহ আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফরমের যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে পৌঁছানো হবে বলে জানান তামিম। গত কয়েক দিন ধরে সামাজিক যোগোযোগমাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারকে নিয়ে নানা কটূক্তি করেছেন ভারতে অবস্থানরত শেখ হাসিনা যা বিভিন্নভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালান। এরপর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এই আন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তাঁর সরকারের বেশ কয়েকজন মন্ত্রী ও দলের নেতাদের, ১৪ দলের নেতা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাবেক শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত গুম, হত্যা, গণহত্যাসহ দেড় শর বেশি অভিযোগ ট্রাইব্যুনালে জমা পড়েছে।