জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে সংঘটিত গণহত্যা এবং আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে গুম, হত্যাসহ অপরাধের বিচার কার্যক্রম নির্বাচনের পরও যাতে চলমান থাকে, সেজন্য অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে রোডম্যাপের দাবি করেছেন বলে জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। গতকাল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে করা একটি মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিতে গতকাল দুপুরে ট্রাইব্যুনালে এসেছিলেন নাহিদ ইসলাম। তবে এ মামলার ৪৬তম সাক্ষী হিসেবে আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের জেরা শেষ না হওয়ায় গতকাল তিনি সাক্ষ্য দিতে পারেননি। পরে বেলা ৩টার দিকে ট্রাইব্যুনাল ত্যাগ করেন তিনি।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার ওপর যে ধরনের নৃশংসতা হয়েছিল, অভ্যুত্থান-পরবর্তী সরকার গঠনের পর আমাদের প্রথম দাবি ছিল বিচারপ্রক্রিয়া যাতে যথাসময়ে ও সুষ্ঠুভাবে সম্পাদিত হয়। আমরা আশা করছি, তারা ন্যায়বিচার পাবেন।’ এই বিচারপ্রক্রিয়া একটা দীর্ঘ সময় ধরে চলবে উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, নির্বাচনের পরও যাতে এই বিচারপ্রক্রিয়া কোনোভাবেই বাধাগ্রস্ত না হয়, সেটা যেন এই ট্রাইব্যুনাল এবং অন্যান্য যে বিচারপ্রক্রিয়া রয়েছে সাধারণ কোর্টে, সেটা যাতে অব্যাহত থাকে সেই প্রতিশ্রুতি দিতে এই সরকারের পক্ষ থেকে একটা রোডম্যাপের দাবি জানিয়েছেন। সব রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে সেই কমিটমেন্ট যাতে তাদের ইশতেহারেও থাকে সেটা তাদের প্রত্যাশা থাকবে। যাতে জুলাই গণহত্যার যে বিচার, গত ১৬ বছরে গুমসহ আরও নানান ফ্যাসিবাদী হত্যাকাণ্ড হয়েছে, অপরাধ হয়েছে, তার বিচারপ্রক্রিয়া চলমান থাকে। এই ট্রাইব্যুনালে বিচারিক কার্যক্রমে সন্তুষ্ট কি না, জানতে চাইলে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমরা সন্তুষ্ট যে প্রক্রিয়া চলমান আছে এবং রায়ের দিকেই দ্রুত সময়ের মধ্যে যাবে।
তবে আরও যে মামলাগুলো রয়েছে, আমরা চাইব যে সেটার বিচারপ্রক্রিয়ায়ও যাতে যথাযথ গুরুত্বের সঙ্গে এগিয়ে চলে এবং সরকার যাতে একটা সমন্বিত রোডম্যাপ সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে মিলে ঘোষণা করে নির্বাচনের আগে।’
শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে বরাবরই বলে আসছেন উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘একটি কূটনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে এবং আন্তর্জাতিক জনমত তৈরি করে সরকারকে এগোতে হবে। তাকে ফিরিয়ে এনে শাস্তি প্রদান করাই এই সরকার এবং যে কোনো সরকারের জন্য এটা নৈতিক এবং আইনি দায়িত্ব থাকবে। আমরা আশা করব, এই সরকার সে দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করবে।’