নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের দু’টি মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় স্তব্ধ পুরো বিশ্ব। উঠেছে নিন্দার ঝড়। এ হামলায় অন্তত ৪৯ জন নিহত হয়েছেন। ৪১ জন নিহত হয়েছেন আল নূর মসজিদে এবং ৭ জন মারা গেছেন লিনউড মসজিদের ঘটনায়। আরেকজন হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার সময় মারা যান।
নিহতের মধ্যে একজন নাইম রশিদ। নিউজিল্যান্ডে মসজিদে হত্যাযজ্ঞের সময় নিজের জীবনের দিকে ফিরে তাকাননি। হামলাকারী যখন নির্বিচারে মুসল্লিদের গুলি করে হত্যা করছিল, তখন তিনি দেখিয়েছেন অসীম সাহসিকতা। জাপটে ধরে হামলাকারীর বন্দুক কেড়ে নেয়ার জন্য ধস্তাধস্তি করেন।
ততক্ষণে লাশের সারিতে যোগ হয়েছে তারই ছেলে তালহা (২১)। তবুও জীবন বাজি রেখে তিনি লড়াই চালিয়ে যান হামলাকারীর সঙ্গে। তবে শেষ পর্যন্ত তিনি বাঁচতে পারেননি। তাকে মারাত্মক আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেয়ার পর সেখানেই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন। তাই বিশ্ব মিডিয়া তাকে হিরো বা নায়ক হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।
এ ব্যাপারে লন্ডনের একটি ট্যাবলয়েড পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ লিখেছে, হামলার সময় নামাজ আদায় করতে যাওয়া ভাইদের রক্ষার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়লেন রশিদ। তিনি হামলাকারী ব্রেন্টন ট্যারেন্টের অস্ত্র কেড়ে নেয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। এতে মারাত্মকভাবে আহত হন রশিদ। এক পর্যায়ে হামলাকারী মসজিদ থেকে বেরিয়ে পালায়। সঙ্গে সঙ্গে অন্য মুসলিমরা রশিদকে উদ্ধার করে দ্রুত নিয়ে যান হাসপাতালে। শুক্রবার রাতের শেষভাগে তিনি মারা যান।
জানা গেছে, পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে নাইম রশিদের বাড়ি। পাকিস্তানে তিনি একটি বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি করতেন। কিন্তু একজন শিক্ষক হিসেবে চাকরি পেয়ে যান নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে। সেখানে গিয়ে জীবনযাপন শুরু করেন।
পাকিস্তানের এআরওয়াই নিউজকে ড. খুরশিদ আলম নিশ্চিত করেছেন নিহত নাইম রশিদ তার ভাই। তাকে ও তার ভাতিজা তালহাকে শুক্রবারের নৃশংস হামলায় হত্যা করা হয়েছে।
এর আগে ওয়েলিংটনে পাকিস্তানের হাইকমিশন নিশ্চিত করেছে, হামলায় ৪ জন পাকিস্তানি আহত হয়েছেন। ৫ জন রয়েছেন নিখোঁজ।
বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ