এনআরসি নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আনুষ্ঠানিক বক্তব্য
গত ৩১ আগস্ট (শনিবার) ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামের জাতীয় নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি) চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।
চূড়ান্ত এই তালিকায় জায়গা পেয়েছেন ৩ কোটি ১১ লাখ ২১ হাজার ৪ জন। আর বাদ পড়েছেন ১৯ লাখ ৬ হাজার ৬৫৭ মানুষ।
বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিবেদন এসেছে। কোনও কোনও গণমাধ্যমে বাদ পড়া এই ১৯ লাখ মানুষের ভবিষ্যত অনিশ্চিত বলা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের এসব প্রতিবেদন আমলে নিয়ে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এক ভিডিও বার্তায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র প্রথমে গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন নেতিবাচক বিষয়গুলো ভুল হিসেবে আখ্যা দেন।
তিনি বলেন, ভারত সরকার আসাম অ্যাকর্ড সই করে ১৯৮৫ সালে। এতে আসামের নাগরিকদের যথাযথ যত্ন নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সরকার। এনআরসি সেই প্রতিশ্রতির একটি অংশ। দেশের সুপ্রিম কোর্ট সরকারকে ম্যানডেট দিয়েছে এনআরসি হালনাগাদ করার। শুধু তা-ই নয়, সুপ্রিম কোর্ট এনআরসি প্রকাশ পর্যন্ত প্রতিটি পদক্ষেপের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের আদেশ অনুযায়ী এনআরসি প্রকাশ করা হয়েছে।
মুখপাত্র বলেন, চূড়ান্ত তালিকায় বাদ পড়াদের সুযোগ এখনই শেষ হয়ে যায়নি। তারা এ সংক্রান্ত ট্রাইব্যুনালে আবেদন করতে পারবেন। বর্তমানে আসামে ১০০ ট্রাইব্যুনাল রয়েছে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে আরও ২০০ ট্রাইব্যুনাল স্থাপন করা হবে। এসব ট্রাইব্যুনালে তারা আইনি লড়াই চালিয়ে যেতে পারবেন।
এছাড়াও যারা ট্রাইব্যুনালে আইনি প্রক্রিয়ায় হেরে যাবেন, তারা হাইকোর্ট এমনকি সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্তও যেতে পারবেন। আইনি প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত তারা আগের মতই সকল ধরনের নাগরিক সুবিধা পাবেন। এতে কোনও ব্যতয় ঘটবে না, যোগ করে তিনি।
তিনি আরও বলেন, গত ৩১ আগস্ট প্রকাশিত এনআরসি তালিকা একটি স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য তালিকা। এটি বেজ্ঞানিকভাবে দলিল-প্রমাণাদির মাধ্যমে প্রস্তুত করা হয়েছে। এটা প্রস্তুত করতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য যাচাই করা হয়েছে। যারা ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চের পর আসামে এসেছেন তাদেরকে সনাক্ত করতেই এই তালিকা করা হয়েছে। এর আগে থেকে যারা আসামে আছেন এবং এ সংক্রান্ত ডকুমেন্ট দেখাতে পেরেছেন তারা সবাই এই তালিকায় আছেন।
মুখপাত্র বলেন, এই তালিকা তৈরিতে কোনও ধরনের বৈষম্যের আশ্রয় নেওয়া হয়নি। এখানে কোনও ধরনের অন্যায়, পক্ষপাতিত্ব ও ধর্মীয় ইস্যুর সুযোগ নেই। এনআরসি ডাটা এখনও অনলাইনে রয়েছে। এখানে কোনও ধরনের ধর্মীয় ডকুমেন্ট চাওয়া হয়নি।
তিনি আরও বলেন, যারা এই তালিকায় নেই তারা ১২০ দিনের মধ্যে আপিল করতে পারবেন। এরপর আদালতের মাধ্যমে বিষয়টি চূড়ান্ত হবে।
বিডি প্রতিদিন/কালাম