২৮ জানুয়ারি, ২০২০ ০৮:৩৫

করোনা-বিধ্বস্ত উহানে আপেল সিদ্ধ খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন বাঙালি গবেষক

অনলাইন ডেস্ক

করোনা-বিধ্বস্ত উহানে আপেল সিদ্ধ খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন বাঙালি গবেষক

সাম্য কুমার রায়

গণিতে উচ্চশিক্ষার জন্য চীনের উহানকে বেছে নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু পোস্ট ডক্টরেট ডিগ্রি পেতে গিয়ে জীবনই বিপন্ন হয়ে পড়েছে ভারতের বর্ধমানের গবেষক সাম্য কুমার রায়ের। করোনা সংক্রমণের আতঙ্কে গৃহবন্দি অবস্থায় নাওয়া-খাওয়াও ভুলে গেছেন তিনি। কার্যত অনাহারে দিন কাটাতে হচ্ছে তাকে।

হোস্টেল থেকে ক্যান্টিন পর্যন্ত যেতে পারছেন না ৩০ বছর বয়সী এই বাঙালি গবেষক। চরম উদ্বেগে মা-বাবা। ভারত সরকারের  কাছে তাদের আবেদন চীন থেকে বাঙালি তথা ভারতীয়দের নিরাপদে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হোক।

উহানে আটকা পড়েছেন প্রচুর ভারতীয় শিক্ষার্থী। পরিস্থিতি এতটা সংকটজনক বুঝে চীন থেকে নাগরিকদের ফেরাতে ভারতীয় সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ বিমানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

বর্ধমানের কালীবাজার আমতলার বাসিন্দা সাম্য কুমার রায়। মেধাবী এই শিক্ষার্থী বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল স্কুলে পড়াশোনা শেষ করে গণিতশাস্ত্র নিয়ে বেলুড় রামকৃষ্ণ মিশন থেকে স্নাতক হন। এরপর আইআইএসসি, বেঙ্গালুরুতে স্নাতকোত্তর এবং আইআইটি, কানপুর থেকে পিএইচডি শেষ করেন। পোস্ট ডক্টরেটের জন্য পরীক্ষা দিয়ে চলে যান চীনের উহান বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০১৯ সালের মার্চ মাস থেকে গবেষণায় যোগ দেন। গত ডিসেম্বরে ৪৫ দিনের ছুটি নিয়ে বাড়িতে ফিরেছিলেন সাম্য। ২১ জানুয়ারি উহানে ফিরে যান তিনি।

ততদিনে উহানে থাবা বসিয়েছে করোনা ভাইরাস। সংক্রমণ ছড়িয়েছে, বিপদ বেড়েছে। করোনার সংক্রমণ রুখতে উহানকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে গোটা দেশ থেকে। এমনকি বাস, ট্রেনও বন্ধ। ফলে সেখানে ফিরে কার্যত ঘরবন্দি হয়ে পড়েছেন সাম্য কুমার রায়। 

সংবাদ মাধ্যমকে তিনি বলেছেন, “এমনিতে এখানে এখন বেশ ঠান্ডা। তাপমাত্রা মাইনাস ১ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। ফলে ঠান্ডা লেগে সর্দি-কাশি হচ্ছে নাকি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণে এসব হচ্ছে, তা বুঝতে পারছি না। চিন্তা হচ্ছে। ক্লাস হচ্ছে না। হোস্টেলে ঘরের মধ্যেই বসে থাকতে হচ্ছে। ক্যান্টিনে খেতে যেতে পারছি না। কারণ, ওখানের খাবার থেকে যদি সংক্রমণ হয়ে যায়, সেই আশঙ্কা আছে। আমি একদম কাছের একটা মার্কেট থেকে সবজি, ফল কিনে তা ঘরে এনে সিদ্ধ করে খাচ্ছি। এভাবেই ক্ষুধা মেটাচ্ছি।”

তিনি আরও বলেন, “এভাবে একা ঘরে এক সপ্তাহ ধরে বন্দি থাকলে তো অসুস্থ হয়ে পড়ব। এখন তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরতে চাই। চীনা দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। ওরা আশ্বস্ত করেছেন আমাদের সাহায্য করতে। কিন্তু কবে সেই সাহায্য পাব, জানি না। ফ্রান্স সরকার যেমন ওদের দেশের শিক্ষার্থীদের ফিরিয়ে নিয়ে যেতে আলাদা করে বিমান এবং বাসের ব্যবস্থা করেছে। শহরে তো বাস চলাচল করছে না। তাই ফ্রান্সের বিশেষ বাস শহর থেকে বিমানবন্দরে নিয়ে যাবে, সেখান থেকে বিমানে ওরা উড়ে যাবে ফ্রান্সে। আমাদের জন্যও যদি এরকম ব্যবস্থা করা যেত।”সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন

বিডি প্রতিদিন/কালাম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর