২৬ জানুয়ারি, ২০২১ ১৬:৩৬

ভারতে নানা আয়োজনে প্রজাতন্ত্র দিবস উদযাপিত

কলকাতা প্রতিনিধি:

ভারতে নানা আয়োজনে প্রজাতন্ত্র দিবস উদযাপিত

যথাযথ মর্যাদায় ২৬ জানুয়ারী ভারত জুড়ে উদযাপন করা হল ৭২ তম প্রজাতন্ত্র দিবস। মঙ্গলবার দেশটির রাজধানী দিল্লির বিজয়চকে সেনাবাহিনীর কুচকাওয়াজের অভিবাদন গ্রহণ করেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপরাষ্ট্রপতি এম. ভেঙ্কাইয়া নাইডু, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সদস্যরা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা, দেশটির তিন সেনাবাহিনীর প্রধান। 

তবে এবারের অনুষ্ঠানে প্রধান অথিতি হিসেবে ব্রিটিশ প্রধান বরিস জনসন আমন্ত্রিত থাকলেও নিজের দেশে করোনার নতুন স্ট্রেন’এর প্রকোপ দেখা দেয়ায় দিল্লি সফর বাতিল করেন তিনি। যদিও এক ভিডিও শুভেচ্ছা বার্তায় জনসন এদিন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আপনার আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে আমি এই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে চেয়েছিলাম। এদিকে আমাদের একসাথে কোভিডের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হচ্ছে তাই বাধ্য হয়ে লন্ডনে থেকে যেতে হল আমাকে। মানবিকতার স্বার্থে দুই দেশই মহামারী মুক্ত করতে সহায়তা করবে।’ তিনি আরও বলেন ‘ভারতের একটি অসাধারণ সংবিধান আছে যা তাকে বিশ্বের বৃহত্তম সার্বভৌম গণতন্ত্র হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেছিল।’ 

চলতি বছরই ভারতে আশার ইচ্ছা প্রকাশ করে তিনি বলেন আমাদের বন্ধুত্বকে জোরদার করতে এই বছরের শেষের দিকে ভারত সফরে যেতে পারি।’ 

এদিন সকাল পৌণে দশটা নাগাদ ভারতীয় রাষ্ট্রপতির জাতীয় পতাকা (তিরঙ্গা) উত্তোলনের মধ্যে দিয়ে সাধারণতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠান শুরু হয়। প্রজাতন্ত্র দিবসের আকর্ষণের কেন্দ্র ছিল সেনাবাহিনীর কুচকাওয়াজ। এরই সঙ্গে যোগ হয়েছিল সেনা ও আধাসামরিক বাহিনীর জওয়ানদের কসরত। এর পাশাপাশি দেশের সাংস্কৃতিক বৈচিত্রও এই কুচকাওয়াজে ফুটে উঠেছিল। বিভিন্ন রাজ্য ও কেন্দ্রের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে সুসজ্জিত ট্যাবলো বের করা হয়। 

তবে করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে এছর অনুষ্ঠানের সময়সীমা অনেকটাই কমিয়ে আনা হয়। এমনকি বিজয়চক থেকে রেড ফোর্ট ময়দান পর্যন্ত-প্রায় ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ যাত্রাপথও প্রায় অর্ধেক করে দেওয়া হয়েছিল। প্রতিবছর পায় ১ লাখ দর্শক হাজির থাকে এই অনুষ্ঠানে, কিন্তু সেখানেও কাটছাঁট করে মাত্র ২৫ হাজার দর্শকাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। প্রধানত এদিনই প্রকাশ্যে সামরিক শক্তি প্রদর্শন করে দেশটির সেনাবাহিনী। 

সেকথা মাথায় রেখেই যুদ্ধবিমান রাফাল থেকে তেজস, ট্যাঙ্ক, চপার, ক্ষেপণাস্ত্র- প্রজাতন্ত্র দিবসে নিজেদের সামরিক শক্তি প্রদর্শন করে ভারত। এদিন দিল্লির আকাশে রাফাল যুদ্ধবিমানকে উড়তে দেখা যায়। একলব্য ফর্মেশনে একটি রাফাল, দুইটি জাগুয়ার এবং সেইসাথে ছিল ২টি মিগ-২৯। প্রতি ঘন্টায় যার গতিবেগ ছিল ঘন্টায় ৭৮৯ কিলোমিটার। এগুলির নেতৃত্বে ছিলেন ১৭ নম্বর স্কোয়াড্রনের ফ্লাইট কমান্ডার গ্রæপ ক্যাপ্টেন রোহিত কাটারিয়া। প্রজাতন্ত্র দিবসের সময় জঙ্গি হামলার আশঙ্কায় দিল্লি সহ আশপাশের এলাকা নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছিল।

সারা দেশের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গ, অসম, ত্রিপুরা, গুজরাট, বিহার, অন্ধ্রপ্রদেশ সহ প্রতিটি রাজ্যেই যথাযথ মর্যাদায় প্রজাতন্ত্র দিবস পালন করা হয়। কড়া নিরাপত্তার মধ্যে প্রজাতন্ত্র দিবস পালন করা হল কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখায়। এলওসি (লাইন অব কন্ট্রোল) এর বেশ কিছু ফরওয়ার্ড পোস্টে পতাকা উত্তোলন করে সেনাবাহিনীর সদস্যরা। উত্তর কাশ্মীরের বান্দিপুরায় প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে সামিল হতে দেখা যায় সাধরণ মানুষকেও। দেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলনের সাথে জাতীয় সঙ্গীতেও গলা মেলান তারা। 

মাটি থেকে ১৭ হাজার ফুট উচ্চতায় লাদাখেও উদযাপিত হল ৭২ তম প্রজাতন্ত্র দিবস। মাইনাস ২৫ ডিগ্রী তাপমাত্রায় ইন্দো-তিব্বত সীমান্ত পুলিশ (আইটিবিপি)-এর জওয়ানরা লাদাখে প্রজাতন্ত্র দিবস উদযাপন করে। 


বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর