কানাডায় একের পর এক আদিবাসী শিশুদের গণকবর খুঁজে পাওয়ার পর ব্রিটিশ উপনিবেশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ক্রমেই বাড়ছে। এদিকে, বৃহস্পতিবার উইনিপেগ শহরে স্থাপিত রানি ভিক্টোরিয়া ও রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের ভাস্কর্য ভেঙে ফেলেছেন বিক্ষুব্ধ জনতা।
ব্রিটিশ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কানাডার রানি অর্থাৎ রাষ্ট্রপ্রধান। রানি ভিক্টোরিয়াও কানাডা শাসন করেছেন। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে ব্রিটেন। খবর-পার্সটুডে।
প্রথমে ভেঙে ফেলা হয় রানি ভিক্টোরিয়ার ভাস্কর্য। এসময় মাটিতে পড়ে থাকা ভাস্কর্যটিকে লাথি দিতে দেখা যায়। অনেকে আবার এটি ঘিরে নাচতেও থাকে। ঘটনাস্থলের কাছে থাকা রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের ভাস্কর্যটিও ভেঙে উল্লাস প্রকাশ করেন বিক্ষোভকারীরা।
ভাস্কর্য ভেঙে ফেলার আগে বিক্ষোভকারীদের চিৎকার করে বলতে শোনা যায় ‘গণহত্যায় কোনো গর্ব নেই’। সাম্প্রতিক সময়ে কানাডার আদিবাসী শিশুদের বেশ কিছু গণকবরের সন্ধান পাওয়া যায়। কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়া এবং সাসকাচোয়ান প্রদেশে বন্ধ হয়ে যাওয়া আদিবাসীদের জন্য স্থাপিত আবাসিক স্কুলে ১ হাজারের মতো শিশুর গণকবরের সন্ধান পাওয়া যায়।
তৎকালীন ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক সরকারের অর্থায়নে এসব স্কুল ক্যাথলিক চার্চদের দ্বারা পরিচালিত হতো। প্রায় দুইশ বছর আগের এসব স্কুলে আদিবাসী শিশুদের জোর করে তাদের পরিবার থেকে আলাদা করা হতো। এরপর তাদের ওপর চালানো হতো শারীরিক ও যৌন নিপীড়ন। অনেক শিশু অপুষ্টিতে ভোগে মৃত্যুবরণ করেছে। কানাডার ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশনের ২০১৫ সালে প্রতিবেদনে এ ঘটনাকে সাংস্কৃতিক গণহত্যা হিসেবে অভিহিত করা হয়।
এদিকে, ব্রিটেন ভাস্কর্য ভাঙার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। বিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের এক মুখপাত্র বলেছেন, ব্রিটিশ সরকার রানির ভাস্কর্য অবমাননার নিন্দা জানায়।
আদিবাসী শিশুদের গণহত্যা কানাডার ইতিহাসের এক মানবিক ট্রাজেডি।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন