রবিবার, ২১ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

ইরানের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যে সৌদিতে যাচ্ছে মার্কিন সেনা

ইরানের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যে সৌদিতে যাচ্ছে মার্কিন সেনা

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকে ইরানের সঙ্গে উত্তেজনার পারদ যেন আরও বাড়তে থাকে। দুই দেশের মধ্যে ক্রমাগত হুমকি-ধমকি চলছেই। এবার ইরানের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যেই সৌদি আরবে মার্কিন সেনা মোতায়েনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে (মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের সদরদফতর) পেন্টাগন। মধ্যপ্রাচ্যে ‘উদ্ভূত হুমকি’ থেকে মার্কিন স্বার্থকে রক্ষা করতেই এ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, বলেছে তারা। পেন্টাগনের ঘোষণার পাশাপাশি সৌদি আরবও তার দেশে মার্কিন সেনা মোতায়েনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। বাদশা সালমান ‘আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা জোরদারে’ দেশে মার্কিন সেনা উপস্থিতিতে অনুমোদন দিয়েছেন, সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের টুইটের বরাত দিয়ে এমনটাই জানিয়েছে বিবিসি। পারস্য উপসাগরে তেলবাহী ট্যাংকার চলাচলের নিরাপত্তা নিয়ে পশ্চিমাদের সঙ্গে তেহরানের মুখোমুখি অবস্থানের মধ্যেই ওয়াশিংটন মধ্যপ্রাচ্যে তার ঘনিষ্ঠ মিত্রদেশটিতে সৈন্য পাঠানোর এ সিদ্ধান্ত নিল। ইরাকের কুয়েত দখলের পর ১৯৯১ সালে ‘অপারেশন ডেজার্ট স্টর্মের’ মাধ্যমে সৌদি আরবে মার্কিন সেনা মোতায়েন শুরু হয়েছিল। ২০০৩ সালের পর সেটি বন্ধ রাখা হয়। ওই বছর ইরাক অভিযান শেষে যুক্তরাষ্ট্র সৌদি ঘাঁটি থেকে তার সৈন্যদের ফিরিয়ে আনে। এবার পেন্টাগন সৌদি আরবের প্রিন্স সুলতান ঘাঁটিতে বিমান প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থাপনা প্যাট্রিয়ট ও ৫০০ সেনা মোতায়েন করতে যাচ্ছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। ঘাঁটিটিতে এফ-২২ জঙ্গিবিমানের একটি স্কোয়াড্রন পাঠানোরও পরিকল্পনা আছে। সৌদি আরবে মার্কিন সেনা মোতায়েনের এ ঘটনা তেহরান-ওয়াশিংটন উত্তেজনায় ঘি ঢালবে বলে আশঙ্কা পর্যবেক্ষকদের। গত বছর যুক্তরাষ্ট্র ইরান পরমাণু চুক্তি থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর থেকে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার পারদ চড়তে শুরু করে। তেহরানের তেল রপ্তানি বন্ধে ওয়াশিংটনের একের পর এক পদক্ষেপও দুই দেশকে মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড় করিয়েছে। সম্প্রতি ইরান যুক্তরাষ্ট্রের একটি মনুষ্যবিহীন ড্রোনকে গুলি করে ভূপাতিতও করেছে। বৃহস্পতিবার হরমুজ প্রণালিতে মার্কিন নৌযান ইউএসএস বক্সার একটি ইরানি ড্রোনকে ভূপাতিত করেছে বলে ওয়াশিংটন দাবি করলেও তেহরান তা উড়িয়ে দিয়েছে।

দাবি কখনোই পূরণ হবে না : ইরানের কাছে যুক্তরাষ্ট্র যেসব অতিরিক্ত দাবি করছে তা কখনোই পূরণ হওয়ার নয় বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাওয়াদ জারিফ। ভেনিজুয়েলার রাজধানী কারাকাসের উদ্দেশে যাত্রা করার আগে ওয়াশিংটনে এক সংবাদ সম্মেলনে জারিফ এসব মন্তব্য করেন। ইরানকে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি স্থগিতের পাশাপাশি তেহরানের সঙ্গে একশো বছরের চুক্তি অবসানের ব্যাপারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যে আহ্বান জানিয়েছেন তার প্রতিক্রিয়ায় জারিফ এসব বক্তব্য দেন। বিবিসি

জারিফ বলেন, ট্রাম্পের এসব বক্তব্যের মাধ্যমে এটা প্রতিয়মান হচ্ছে যে জেসিপিএএ একটি যৌক্তিক চুক্তি। তিনি বলেন, যদি ইউরোপের দেশগুলো পরমাণু সমঝোতাকে বাঁচানোর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে চায় তাহলে তাদের উচিত বিশেষ অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ইন্সটেক্সকে বাস্তবায়ন করা। জারিফ বলেন, আমেরিকা পরমাণু সমঝোতা থেকে বের হয়ে যাওয়ার পর ইউরোপ যে ১১টি প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তার সবগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে। ইরানের তেল বিক্রি, শিপিং, ব্যাংকিং, বিনিয়োগ এবং বৈজ্ঞানিক সহযোগিতার ব্যাপারে ইউরোপের পক্ষ থেকে যেসব প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল সে বিষয়ে তেহরান এখনো অপেক্ষা করছে বলেও জানান জারিফ।

সর্বশেষ খবর