মঙ্গলবার, ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি রাশিয়ার

ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি রাশিয়ার

ইইউ পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক নেতা জোসেপ বরেল ও রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সার্গেই লাভরভ

ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান জোসেফ বোরেলের অভিমত, তাদের এই জোটের সঙ্গে রাশিয়ার বর্তমান সম্পর্ক একেবারে তলানিতে পৌঁছেছে। রাশিয়ার বিরোধী দলের নেতা অ্যালেক্সি নাভালনির আটকের ঘটনা ঘিরে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের এমন অবনতি এবং অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। জোসেফ বোরেল সম্প্রতি তিন দিনের সফরে মস্কো যান এবং শনিবার ছিল সে সফরের শেষ দিন। মস্কো অবস্থানকালে তিনি ইইউর পক্ষ থেকে নাভালনিকে মুক্তি দেওয়ার জন্য মস্কোর কাছে জোরালো আহ্বান জানিয়েছেন। নাভালনিকে সম্প্রতি মস্কোর একটি আদালত সাড়ে তিন বছরের কারাদন্ড দিয়েছে। সাত বছর আগের একটি অর্থ আত্মসাতের মামলায় স্থগিতাদেশ থাকলেও তখন তিনি শর্ত লঙ্ঘন করায় ওই রায় দেওয়া হয়েছে। ইইউসহ পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ায় রুশ বিরোধী দলের এই নেতার প্রতি আচরণকে ভালো চোখে দেখছে না। নাভালনিকে আটকের পর ইউরোপের কোনো কোনো দেশ রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। কিন্তু রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের সঙ্গে আলাপের সময় জোসেফ বোরেল দাবি করেছেন, নাভালনিকে কেন্দ্র করে ইইউ মস্কোর বিরুদ্ধে কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেনি। যদিও রাশিয়া পশ্চিমাদের চাপ ও অভিযোগ একেবারে আমলে নিচ্ছে না।

তবে ইতিমধ্যে রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে অযথা হস্তক্ষেপ করছে এমন অভিযোগ এনে তাদের দেশ থেকে তিনটি ইউরোপীয় দেশের কূটনীতিককে বহিষ্কার করে রাশিয়া। ওই তিন দেশ হলো সুইডেন, পোল্যান্ড ও জার্মানি। রাশিয়ার এমন আচরণ দেখে ওই তিনটি দেশ সমালোচনায় মুখর হয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শুক্রবার ঘোষণা করেছিল, সে দেশের সরকারবিরোধী নেতা অ্যালেক্সি নাভালনির সমর্থনে মস্কোয় অনুষ্ঠিত বিক্ষোভে অংশগ্রহণের অভিযোগে তিন ইউরোপীয় কূটনীতিককে বহিষ্কার করা হয়েছে। তখন ওই তিন কূটনীতিককে রাশিয়ায় ‘অবাঞ্ছিত’ অ্যাখ্যা দেওয়া হয়েছিল।

রাশিয়ার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের চাপ : মস্কো সফর শেষে ইইউর শীর্ষ পররাষ্ট্রবিষয়ক কর্মকর্তা সে দেশের ওপর আরও নিষেধাজ্ঞার মতো কড়া পদক্ষেপের পরামর্শ দিয়েছেন। আমেরিকা ও ইউরোপে এমন মনোভাব বেড়েই চলেছে। রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের প্রশ্নে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বিগত বছরগুলোয় বারবার বিড়ম্বনায় পড়ছে। একদিকে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বেশ কিছু আচরণ বরদাশত করা কঠিন হয়ে পড়ছে, অন্যদিকে পূর্ব প্রান্তে এমন বিশাল ও শক্তিশালী প্রতিবেশীকে উপেক্ষা করাও কঠিন। কৌশলগত ও বাণিজ্যিক স্বার্থও এ ক্ষেত্র বিবেচনা করতে হচ্ছে। অন্যদিকে সংলাপের মাধ্যমে উত্তেজনা কমানোর পথও পুরোপুরি বন্ধ করতে চাইছেন না কিছু ইইউ নেতা। তবে সফরের পর রবিবার বোরেল বলেন, রাশিয়া ইইউর সঙ্গে গঠনমূলক সংলাপ চালাতে প্রস্তুত নয়। এক ব্লগ পোস্টে তিনি নিজের মূল্যায়ন তুলে ধরেন। তাঁর মতে রাশিয়া ইউরোপ থেকে আরও বিচ্ছিন্ন হওয়ার পথ বেছে নিয়েছে এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে হুমকি হিসেবে বিবেচনা করছে। বোরেল ২২ ফেব্রুয়ারি ইইউ পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাবেন। তারপর মার্চে ইইউ শীর্ষ সম্মেলনে রাশিয়ার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিষয়ে কড়া সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।

সর্বশেষ খবর