বুধবার, ১৮ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত হাইতিতে ঝড়-বন্যা, মৃত্যু বেড়ে ১৪১৯

ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত হাইতিতে ঝড়-বন্যা, মৃত্যু বেড়ে ১৪১৯

ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর রোগীতে উপচে পড়া হাসপাতালের বাইরে অস্থায়ীভাবে বানানো তাঁবুতে শিশু-বৃদ্ধসহ শত শত আহত মানুষের জীবন বাঁচাতে মরিয়া চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন হাইতির চিকিৎসকরা।

শনিবারের ৭ দশমিক ২ মাত্রার ওই ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে এক হাজার ৪১৯ জনে দাঁড়িয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। উদ্ধারকর্মীরা যখন ধ্বংসস্তূপের মধ্যে জীবিতদের সন্ধানে তৎপরতা চালাচ্ছে, তখনই একটি ঝড় হাইতির দক্ষিণাঞ্চলীয় উপকূলে তুমুল বৃষ্টি ঝরিয়েছে। ভারী বর্ষণে ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত এলাকার কাছে দেখা দেওয়া বন্যা মানবিক সংকটকে তীব্রতর করে তুলেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বন্যার বিষয়টি রয়টার্সকে নিশ্চিত করেছেন জেকমেল এলাকার রাজনীতিক ডিউস ডেরোনেথ; শহরের মধ্য দিয়ে বন্যার পানির স্রোত বয়ে যাচ্ছে- টুইটারে এমন ভিডিও-ও পোস্ট করেছেন তিনি। ভূমিকম্পে অর্থনৈতিকভাবে নাজুক দেশটির হাজার হাজার ভবন ধসে পড়েছে। ক্যারিবীয় এ দেশটি এখনো ১১ বছর আগের আরেকটি ভয়াবহ ভূমিকম্পের ধকল সামলে উঠতে পারেনি। ২০১০ সালের ওই ভূমিকম্প দেশটির দুই লাখের বেশি মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল।

চলতি বছর ৭ জুলাই হাইতির প্রেসিডেন্ট জোভেনেল ময়িস নিজের বাড়িতে খুন হন। এ ঘটনাও ক্যারিবিয়ান সাগরের দ্বীপ দেশটিকে টালমাটাল করে রেখেছে।  সোমবার স্থানীয় সময় বিকালে হাইতির কর্তৃপক্ষ ভূমিকম্পে এক হাজার ৪১৯ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। ছয় হাজার ৯০০ জনের মতো আহত এবং ৩৭ হাজার ৩১২টি ঘর ধ্বংস হয়েছে বলেও জানিয়েছে তারা।

মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

সবচেয়ে বিপর্যস্ত লি কাইয়ে শহর ও এর আশপাশের এলাকার হাসপাতালগুলোতে সৃষ্টি হয়েছে রোগীর মারাত্মক চাপ; এ হাসপাতালগুলোর বেশ কয়েকটি ভূমিকম্পে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। লি কাইয়ে শহরটি হাইতির রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের প্রায় দেড় শ’ কিলোমিটারের পশ্চিমে অবস্থিত।

হাইতির প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি বলেছেন, এখন নষ্ট করার সময় নেই। ‘এই সোমবার থেকে আমরা দ্রুতগতিতে অগ্রসর হব। সাহায্যের ব্যবস্থা ত্বরান্বিত হতে চলেছে। যত বেশি সংখ্যক ক্ষতিগ্রস্তের কাছে সাহায্য পৌঁছানো যায়, তার জন্য আমরা আমাদের চেষ্টা কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেবো,’ টুইটারে এমনটাই লিখেছেন তিনি। সোমবার পোর্ট-অ-প্রিন্সের বিমানবন্দরে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে ত্রাণ ও অন্যান্য সামগ্রী নিয়ে যেতে চাওয়া বিপুল সংখ্যক চিকিৎসক ও সাহায্যকর্মীকে দেখা গেছে।

ভূমিকম্পে কিছু এলাকার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি লি কাইয়েতে প্রবেশের গুরুত্বপূর্ণ পথগুলো বিভিন্ন অপরাধী গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে থাকায় শহরটিতে সড়কপথে সহজে যাওয়াও যাচ্ছে না।

অপরাধী গোষ্ঠীগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকা এলাকা দিয়ে ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে যেতে ‘মানবিক করিডোর’ তৈরির আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ।

সর্বশেষ খবর