বাতাসের গুণমান চরম এবং বিপজ্জনক মাত্রায় পৌঁছানোয় গতকাল ভারতের রাজধানী দিল্লির শত শত বাসিন্দা বিক্ষোভ করেছেন। তারা সরকারের কাছে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান। দিল্লিবাসীর অভিযোগ, পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য সরকার যথেষ্ট ব্যবস্থা নিচ্ছে না। কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তথ্য অনুযায়ী, কয়েক সপ্তাহ ধরে দিল্লি এবং এর সংলগ্ন প্রায় ৩ কোটি মানুষের বাসস্থান এই মহানগরীর দূষণের মাত্রা ‘খুব খারাপ’ শ্রেণিতে রয়েছে। গতকাল কিছু এলাকায় তা ‘গুরুতর’ শ্রেণিতে পৌঁছে যায়। যেখানে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স স্কোর ছিল কমপক্ষে ৪০২। ০ থেকে ৫০০-এর এই স্কেলে ৫০-এর নিচের মাত্রা ভালো বায়ুর গুণমান নির্দেশ করে। কিন্তু ৩০০-এর বেশি মাত্রা অত্যন্ত বিপজ্জনক বলে মনে করা হয়। সুইজারল্যান্ডের সংস্থা আইকিউ এয়ারের তথ্য অনুসারে, গতকাল বিকালে দিল্লি ছিল বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহর। এ সময়ে বাতাসে পিএম ২.৫-এর ঘনত্ব বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রস্তাবিত মাত্রার চেয়ে প্রায় ৪৯.৪ গুণ বেশি ছিল।
সায়েন্টিস্ট ফর সোসাইটি ছাত্র সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ সংগঠক আদিত্য আনন্দ আরব নিউজকে জানান, দিল্লির বর্তমান পরিস্থিতি অত্যন্ত বিপজ্জনক। দূষণ ক্রমাগত বাড়ছে এবং আমাদের সরকার তা প্রতিরোধে কিছুই করছে না।
সারা বছর ধরেই কোটি কোটি গাড়ি থেকে নির্গত বিষাক্ত দূষণ, নির্মাণকাজ, কলকারখানার ধোঁয়া এবং বর্জ্য পোড়ানোর কারণে দিল্লি ও এর আশপাশে বায়ুর গুণমান খারাপ থাকে। তবে শীতকালে উত্তর-পশ্চিম ও দক্ষিণ-পূর্ব ভারতের কৃষি জমিতে ফসল কাটার পর খড়কুটো পোড়ানোর ফলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। গত ১১ নভেম্বর থেকে দিল্লি অঞ্চলে সরকারের গ্রেডেড রেসপন্স অ্যাকশন প্ল্যানের তৃতীয় স্তর কার্যকর হয়েছে। যার ফলে সমস্ত অপ্রয়োজনীয় নির্মাণকাজ এবং দিল্লিতে ডিজেল গাড়ির চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে বিক্ষোভকারীরা জানিয়েছেন, দূষণ মোকাবিলায় বর্তমান পদক্ষেপগুলো যথেষ্ট নয়। যন্তর মন্তরে জড়ো হয়ে তারা আমাদের শ্বাস নিতে সাহায্য করুন, যদি বাতাস বিনামূল্যে হয়, তবে শ্বাস নেওয়া কেন বিশেষ অধিকার? ধোঁয়াশা দূর কর লেখা ব্যানার প্রদর্শন করেন তারা।