রাজধানী কিয়েভসহ ইউক্রেনের বিভিন্ন অঞ্চলে বড় ধরনের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এতে অন্তত চারজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও বহু মানুষ। রয়টার্স জানায়, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে পূর্ণ যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে কিয়েভে রবিবার রাতের এ হামলা সবচেয়ে বেশি সময় ধরে চলা আক্রমণগুলোর একটি ছিল। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি নিজে হতাহতের কথা জানিয়েছেন। প্রতিবেশী পোল্যান্ড দক্ষিণাঞ্চলীয় দুটি শহরের কাছাকাছি আকাশপথ বন্ধ করে দেয় আর তাদের বিমান বাহিনীর যুদ্ধবিমানগুলো বিপদ কেটে না যাওয়া পর্যন্ত ওই এলাকার আকাশে টহল দেয়। ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী জানায়, রাশিয়া রাতে ৫৯৫টি ড্রোন ও ৪৮টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছিল আর তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা বাহিনী ৫৬৮টি ড্রোন ও ৪৩টি ক্ষেপণাস্ত্র গুলি করে ভূপাতিত করেছে। রাশিয়ার এই হামলার প্রধান লক্ষ্য কিয়েভ ছিল বলে উল্লেখ করেছে তারা। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, ১২ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে হামলাটি চলেছে আর এতে একটি কার্ডিওলজি ক্লিনিক, কয়েকটি কারখানা ও আবাসিক ভবন ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
রাতে বিকট বিস্ফোরণের শব্দে কিয়েভের বাসিন্দাদের ঘুম ভেঙে যায়। তখন রাজধানীর আকাশজুড়ে ড্রোন উড়ছিল আর সেগুলোকে লক্ষ্য করে প্রতিরক্ষা বাহিনীর ছোড়া গোলায় চারদিক প্রকম্পিত হয়ে উঠছিল। আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত একটি এলাকা থেকে ওঠা ধোঁয়ায় ভোরের আকাশ ছেয়ে যায়। চালু করার প্রায় সাত ঘণ্টা পর স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ১৩ মিনিটে আকাশ হামলার সতর্কতা তুলে নেওয়া হয়।
রয়টার্সের সাংবাদিকরা কিয়েভের একটি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় গিয়েছিলেন। সেখানে নতুন করে তৈরি করা দুই সারি বাড়ি প্রায় সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। একটি অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকের জানালাগুলো বিস্ফোরণের ধাক্কায় উড়ে গেছে। ওই এলাকার বাসিন্দারা ভূগর্ভস্থ মেট্রো স্টেশনগুলোতে গিয়ে আশ্রয় নেন। আর বাইরে কী ঘটছে মোবাইল ফোনে সেগুলো দেখেছেন তারা।
প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি জানিয়েছেন, ইউক্রেনের উত্তর, দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলের বিভিন্ন অংশেও হামলা চালানো হয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলের জাপোরিঝঝিয়া শহরে অন্তত ১৬ জন আহত হয়েছেন বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।
দেশটির জরুরি পরিষেবা জানায়, এসব হামলায় দেশজুড়ে অন্তত চারজন নিহত এবং ৬৭ জন আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ১২ বছর বয়সি এক বালিকাও আছে বলে টেলিগ্রামে জানিয়েছেন কিয়েভের সামরিক প্রশাসনের প্রধান। তবে দেশটির সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করেনি।