৩ এপ্রিল, ২০২১ ১৫:০৪

রসুল (সা.) সবার জন্য অনুসরণীয়

আবদুর রশিদ

রসুল (সা.) সবার জন্য অনুসরণীয়

রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছিলেন জীবনের সব ক্ষেত্রে যে কোনো মানুষের জন্য আদর্শ। তিনি ছিলেন আল্লাহর রসুল। নবী-রসুলদের মধ্যে তিনি ছিলেন সেরা। একজন মানুষ হিসেবে মানবিক গুণাবলির সর্বোচ্চ সমাবেশ ঘটেছে তাঁর মধ্যে। তিনি তাঁর স্ত্রী, নাতি, সাহাবিদের সঙ্গে কখনো কখনো কৌতুকভরে কথা বলতেন। তাঁদের আনন্দ দিতেন। নিজেও আনন্দিত হতেন। একবার হজরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা.)-কে আনন্দ দেওয়ার জন্য রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর সঙ্গে দৌড় প্রতিযোগিতা দিলেন। নবীর স্বাস্থ্য ভারী ও আয়েশার স্বাস্থ্য হালকা হওয়ায় আয়েশা দৌড় প্রতিযোগিতায় জয়ী হলেন। কিছুদিন পর হজরত আয়েশার স্বাস্থ্য ভারী হয়ে যাওয়ার পর রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর সঙ্গে আবার দৌড় প্রতিযোগিতা দিলেন এবং জয়ী হলেন। তখন তিনি আয়েশাকে বললেন, আগের প্রতিশোধ নিলাম। আবু দাউদ। সাহাবিদের সঙ্গেও রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অনেক সময় কৌতুক করতেন। তাতে তাদের প্রতি তাঁর মহব্বতের প্রকাশ ঘটত। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘একবার রসুলুল্লাহ বাজারে আগমন করলেন। তাঁকে মহব্বতকারী জাহের নামে এক গ্রাম্য সাহাবি সেখানে পণ্য বিক্রি করছিলেন। তখন রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অগ্রসর হয়ে জাহেরকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলেন। তিনি রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে দেখতে পেলেন না; সুতরাং বলে উঠলেন কে আপনি? আমাকে ছেড়ে দিন। এরপর তিনি আড় চোখে দেখলেন যে তাঁকে জড়িয়ে আছেন রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তখন তিনি (আনন্দে) তাঁর পিঠ রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বুকের সঙ্গে মিলিয়ে রাখলেন (এবং আরও বেশিক্ষণ ওইভাবে থাকার চেষ্টা করলেন)। এদিকে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলতে লাগলেন এ গোলামটিকে কে খরিদ করবে? তখন জাহের বললেন ইয়া রসুলুল্লাহ! আল্লাহর কসম! আপনি আমাকে সামান্য মূল্যের বস্তু হিসেবে পেয়েছেন কি? তখন রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন আমার কাছে সামান্য মূল্যের বস্তু হলেও আল্লাহর কাছে তা নয়।’ শরহে সুন্নাহ। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পারিবারিক জীবনের উল্লেখ-সংবলিত একটি হাদিস বেশ শিক্ষণীয়। হজরত নোমান ইবনে বশির (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘একবার হজরত আবুবকর (রা.) রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ঘরে প্রবেশের অনুমতি চাইলেন, ওই সময় তিনি হজরত আয়েশা (রা.)-এর উচ্চ আওয়াজ শুনতে পেলেন। এরপর ভিতরে প্রবেশ করেই তিনি হজরত আয়েশাকে ধরে তাঁকে হাত উঠিয়ে ধমক দিয়ে বললেন, সাবধান! ভবিষ্যতে আর কখনো যেন রসুলের সামনে তোমাকে ওইভাবে চিৎকার করতে না দেখি। তখন রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হজরত আবুবকর (রা.)-কে বাধা দিচ্ছিলেন। এরপর হজরত আবুবকর (রা.) রাগান্বিত অবস্থায় সেখান থেকে বের হয়ে গেলেন। তিনি বের হয়ে যাওয়ার পর রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হজরত আয়েশা (রা.)-কে বললেন, তুমি দেখলে তো এই ব্যক্তির হাত থেকে আমি তোমাকে কীভাবে রক্ষা করলাম?’ আবু দাউদ।

লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক।


বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর