৬ অক্টোবর, ২০১৯ ২১:২১

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে যে কোনো মৃত্যুই দুঃখজনক: বিএসএফ

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে যে কোনো মৃত্যুই দুঃখজনক: বিএসএফ

বাংলাদেশ-ভারত আন্তর্জাতিক সীমান্ত বরাবর মানুষের অবাঞ্ছিত মৃত্যু কোনভাবেই কাম্য নয়। আমরা এটা সমর্থন করি না। এ ব্যাপারে সীমান্তে প্রতিটি সদস্যদের বার্তা পাঠানো হয়েছে। এই মন্তব্য করেছেন ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)'র বিএসএফ আইজি (দক্ষিণবঙ্গ) যোগেশ বাহাদুর খুরানিয়া। 

রবিবার কলকাতার একটি পাঁচ তারকা হোটেলে (ওবেরয় গ্র্যান্ড) সংবাদ সম্মেলনের ফাঁকে সীমান্ত হত্যা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে খুরানিয়া জানান, ‘আমরা সীমান্তে নন-লিথাল ওয়েপন ব্যবহার করছি। দীর্ঘদিন ধরেই আমরা এই ব্যবস্থা অনুসরণ করে আসছি। সীমান্তে বাহিনীর শেষ সদস্যটিও মারণাস্ত্র নয়-এমন অস্ত্র ব্যবহারে অত্যন্ত প্রশিক্ষিত। লিথাল ওয়েপন (মারণাস্ত্র) তখনই ব্যবহার করা হয়ে থাকে, যখন আর কোন উপায় থাকে না। বাহিনীর সদস্যদের আত্মরক্ষার জন্যই লিথাল ওয়েপন ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যখনই কোন মৃত্যুর ঘটনা ঘটে-সেটা খুবই দুঃখজনক। সেক্ষেত্রে বিএসএফ'র নিজস্ব আদালতেই নয়, স্থানীয় পুলিশও তদন্ত করে।’  

গত ৩ অক্টোবর থেকে ৬ অক্টোবর-চারদিন ধরে কলকাতায় দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর আইজি পর্যায়ের বৈঠকে বিভিন্ন ধরণের আলোচনার পর এদিন সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ভারতীয় প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন খুরানিয়া। অন্যদিকে ১০ সদস্যের বিজিবির প্রতিনিধি দলে ছিলেন বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) অতিরিক্ত ডিজি, আঞ্চলিক কমান্ডার (দক্ষিণবঙ্গ, যশোর) মোহম্মদ জালাল গনি খান। দুই বাহিনীর আইজি’রা এ সম্পর্কিত একটি সমঝোতাও বিনিময় করেন।

খুরানিয়া জানান, ‘ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্ত বরাবর মানুষের অবাঞ্ছিত মৃত্যু, গবাদি পশু, মাদক দ্রব্য, অস্ত্র, জাল নোট পাচার রোধসহ যে কোন ধরনের সীমান্ত নাশকতা ঠেকানোর ব্যাপারে আলোচনা করেছে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী। সেই সাথে নিয়মিত ব্যবধানে টহলদারি, গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ ও অপরাধপ্রবণ সীমান্ত এলাকা চিহ্নিত করা এবং দুই বাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বৈঠক করার ব্যাপারেও আলোচনা হয় চারদিনের বৈঠকে। আলোচনা অত্যন্ত ফলপ্রসূ বলেও আখ্যায়িত করেন খুরানিয়া। 

অন্যদিকে, বৈঠককে ফলপ্রসূ আখ্যা দিয়েও বিজিবির পক্ষ থেকে মোহম্মদ জালাল গনি খান জানান, ‘বিজিবির তরফে মাদক পাচার রোধ, মানুষ হত্যার বিষয়টি উত্থাপন করা হয়েছিল। বিএসএফর তরফে গরু পাচার রোধের বিষয়টির ওপর জোর দেওয়া হয়েছিল। তার অভিযোগ ‘নির্বিচারে গুলি চালানোর ফলে এই হত্যার ঘটনা ঘটছে। কোথাও আত্মরক্ষার কথা বলেও গুলি চালানো হচ্ছে। এই মৃত্যু শুন্যের কোটায় নিয়ে আসার ব্যাপারে কথা হয়েছে।’ 

গবাদিপশু পাচার রোধে জালাল গনি খান বলেন, ‘গরু পাচারের উৎস খুঁজে বের করে সেটিকে নষ্ট করার একটা প্রচেষ্টা নেওয়া হচ্ছে বিএসএফ এর পক্ষ থেকে। গত সাত মাসে গরু পাচার ৪০ শতাংশ কমে গেছে। আগামী দিনে এটি আরও কমে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে ভারতীয় গরু পাচার কমার ফলে সেদেশের গবাদি ফার্মগুলি লাভজনক হয়ে উঠেছে বলে দাবি করেন জালাল। আমাদের তরফে গরু পাচারকারীদের নামের তালিকা প্রদান করা হচ্ছে, অন্যদিকে বাংলাদেশ সীমান্তের দিকে যারা এই পাচারের সাথে যুক্ত তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। 

বিডি-প্রতিদিন/মাহবুব

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর