না ফেরার দেশে ভারতের বিশিষ্ট স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ (বন্ধ্যাত্ব দূরীকরণ বিশেষজ্ঞ) ও টেস্ট টিউব বেবি গবেষণার পথিকৃৎ চিকিৎসক বৈদ্যনাথ চক্রবর্তী। শুক্রবার সল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর। তার মৃত্যুতে চিকিৎসক মহলে নেমেছে শোকের ছায়া।
গত বছরই মূত্রনালিতে সংক্রমণ ধরা পড়ে তার। এসময় তার শরীরে করোনা পজিটিভও ধরা পরে। সেসময় একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তিও হন তিনি এবং করোনাকে হারিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে আসেন তিনি। তবে শারীরিক অসুস্থতা তাঁর পিছু ছাড়েনি। এরপর গত ১৭ মার্চ সেরিব্রাল অ্যাটাক হয়েছিল এই বিশিষ্ট চিকিৎসকের, ছিল নিউমোনিয়া সংক্রান্ত সমস্যাও। তখনই সল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। প্রায় ২৯ দিন লড়াই করার পর শুক্রবার সকালে জীবনযুদ্ধে হার মানেন তিনি। এদিন দুপুরে হাসপাতাল থেকে তার মরদেহ প্রথমে নিয়ে আসা হয় বাড়িতে, সেখান থেকে সিআইটি রোডে তার ক্লিনিক এবং সবশেষে নিমতলা মহাশ্মশানে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
দেশজুড়ে আইভিএফ চিকিৎসার অতি পরিচিত নাম বৈদ্যনাথ চক্রবর্তী। কৃত্রিম উপায়ে প্রজনন অর্থাৎ নলজাতক নিয়ে গবেষণা ও চিকিৎসার ক্ষেত্রে পথপ্রদর্শক ছিলেন এই সিনিয়র চিকিৎসক। কৃত্রিম প্রজনন নিয়ে গবেষণা ও চিকিৎসার জন্যই ১৯৮৬ সালে ‘ইনস্টিটিউট অব রিপ্রোডাকটিভ মেডিসিন’ (আইআরএম) প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন বৈদ্যনাথ। ওই বছরেই প্রথম বাংলায় তার হাত ধরেই ‘টেস্ট টিউব বেবি’র জন্ম হয়। তিন বছর আগে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এই প্রতিষ্ঠানটি ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর মেডিক্যাল রিসার্চ’ (আইসিএমআর)-এর হাতে তুলে দেন চিকিৎসক বৈদ্যনাথ চক্রবর্তী।
এক শোকবার্তায় রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বলেন, ‘বৈদ্যনাথ চক্রবর্তী ভারতে আইভিএফ বা কৃত্রিম উপায়ে প্রজনন ও চিকিৎসার ক্ষেত্রে অগ্রগণ্য ছিলেন। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার ২০১৯ সালে তাকে বিশিষ্ট চিকিৎসা সম্মান’এ ভূষিত করে। তার মৃত্যুতে চিকিৎসা ও গবেষণা জগতের অপূরণীয় ক্ষতি হল। আমি তার আত্মীয়, পরিজন ও অনুরাগীদেও আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।’
বিডি প্রতিদিন/হিমেল