২ জুন, ২০২৩ ২১:০২

বীরভূমের মসজিদে ফলেছে দুষ্প্রাপ্য মিয়াজাকি আম

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

বীরভূমের মসজিদে ফলেছে দুষ্প্রাপ্য মিয়াজাকি আম

১ কেজি আমের দাম আড়াই থেকে ৩ লক্ষ রুপি। বিশ্বের মূল্যবান জাপানি 'মিয়াজাকি' আমের দেখা মিলল পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার দুবরাজপুরের এক মসজিদে। সম্পূর্ণ সতেজ একটি আপেলের মত দেখতে এই আম। ইতিমধ্যে এই আম দেখতে ওই মসজিদে ভিড় জমাচ্ছেন মানুষ। 

শুক্রবার জুমার নামাজের পর এই আম নিলামে ওঠায় মসজিদ কমিটি। নিলামের সেই অর্থ ব্যবহার করা হবে মসজিদের উন্নয়ন কাজে। 

জাপানের কিউশু প্রদেশের মিয়াজাকি শহরকে 'king of fruit' বলা হয়। সেই শহরেই একটি বিশেষ আমের ফলন হয়। গোটা বিশ্বে দামি আমগুলির মধ্যে অন্যতম এই 'মিয়াজাকি' আম- যা অনেকটা আপেলের মত দেখতে। শহরের নামানুসারে এই আমের নাম 'মিয়াজাকি'। এই প্রজাতির এক একটি আম ৩০০ থেকে ৩৫০ গ্রাম ওজনের হয়। মসৃণ ত্বক ও লাল রঙের সৌন্দর্য্যের জন্য সূর্যদয়ের দেশে এই আমের অপর একটি নাম 'egg of sun'। আমের আঁটি ছোট হয়, শ্বাস বেশি হয়। তবে সব জলবায়ুতে এই আমের ফলন হয় না। দুষ্প্রাপ্য বলে প্রতি কেজি আমের দাম ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় আড়াই থেকে ৩ লক্ষ রুপি। ভারতের মতো বাজারে প্রতি পিস আমের দাম ১৫ হাজার রুপি হয়ে থাকে। এতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, বেটা-ক্যারোটিন, ফলিক অ্যাসিড। এই আমের প্রচুর গুনাগুণও আছে। 
 
সেই দুষ্প্রাপ্য আমের দেখা মিলেছে বীরভূমের দুবরাজপুর পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত ইসলামপুর বনকাঠি পাড়ার গওসিয়া মসজিদে। ২০১৯ সালে এই মসজিদটি তৈরি করা হয়। এরপরেই প্রায় তিন বছর আগে স্থানীয় এক যুবক সৈয়দ নিজামুদ্দিন ওরফে সোনা এই গাছের চারা এনে মসজিদে লাগিয়েছিলেন। তবে নিজের হাতে ওই আমের চারা গাছ লাগানোর কয়েকদিন পরেই তিনি মারা যান। যদিও কোথা থেকে এই আমের চারা এই মসজিদে লাগানো হয়েছিল, তা কারো জানা নেই। সোনার সেই লাগানো গাছে চলতি বছর আমার ফলন হয়। যেহেতু আর পাঁচটি সাধারণ আমের থেকে এই আম একটু ভিন্ন দেখতে, তাই সহজেই সেটি সকলের নজরে আসে। প্রায় ৮ ফুট উচ্চতার এই গাছটিতে ১১ টি আম ধরে। এরমধ্যে ঝড়ে একটি আম পড়ে যায়। সেক্ষেত্রে ১০টা আমের মধ্যে এদিন একটি আম নিলাম করা হলো। 

মসজিদের ইমাম মহম্মদ রফিউদ্দিন খান বলেন, 'প্রথমে আমরা জানতাম না যে এটা এত দামি আম গাছ। স্যোসাল সাইট দেখে জানতে পারি এটা 'মিয়াজাকি' আম। এটি সহজে পাওয়া যায় না, খুব দামি৷ তাই আমরা ঠিক করি একটা আম নিলাম করা হবে। পরবর্তীতে বাকি আমগুলিকে বিক্রি করার জন্য দরপত্র ডাকা হবে।' 

সৈয়দ মোতায়ার হোসেন নামে মসজিদ কমিটির এক সদস্য বলেন, 'তিন বছর আগে আমার ভাই এই গাছটি এনে লাগিয়েছিলেন। তিনি এখন নেই, মারা গেছেন। মোবাইলের মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি যে এটি একটি দুষ্প্রাপ্য আম গাছ। প্রথমে সবুজ, পরে বেগুনি, শেষে পেকে লাল রঙের হয়েছে আমগুলি। অন্য আমের চেয়ে আলাদা দেখতে।'

মসজিদ কমিটির সভাপতি কাজী আবু তালেব বলেন, আমার ষাট বছর বয়স হল কিন্তু আমি আমার জীবনে কখনো এই ধরনের আম দেখিনি। আমের কথা শুনে অনেকেই দূর-দূরান্ত থেকে আসছেন ছবি তুলে নিয়ে যাচ্ছেন। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি আম নিলামের অর্থ মসজিদের উন্নয়নের কাজে লাগাবো।

বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর