মঙ্গলবার, ২৬ এপ্রিল, ২০১৬ ০০:০০ টা

থামছে না সহিংসতা নিহত আরও ২

প্রতিদিন ডেস্ক

থামছে না সহিংসতা নিহত আরও ২

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেও পরিস্থিতির উন্নতি করতে পারছে না নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে বলে মনে করছেন নির্বাচন সংশ্লিষ্টরা। গতকালও নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে মাগুরার শ্রীপুরের গয়েশপুর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের দলীয় ও বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন আওয়ামী লীগ কর্মী বাবলু মিয়া। এ ছাড়া গাজীপুরের শ্রীপুরেও নির্বাচনের জের ধরে এক ব্যবসায়ীকে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে। আমাদের প্রতিনিধিরা জানান—

মাগুরা : নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় মাগুরার শ্রীপুরের গয়েশপুর ইউনিয়নের বাগবাড়িয়া গ্রামে গতকাল বাবলু মিয়া নামে একজন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া ২৫ জন আহত হয়েছেন। শ্রীপুর থানার ওসি রেজাউল ইসলাম জানান, গত ২৩ মে অনুষ্ঠিত নির্বাচনী বিরোধ নিয়ে শ্রীপুর উপজেলার গয়েশপুর ইউনিয়নের বিজয়ী আওয়ামী লীগ প্রার্থী আবদুল হালিম ও পরাজিত আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী প্রার্থী ইউসুফ মণ্ডলের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সকালে সংঘর্ষ হয়। এ সময় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আবদুল হালিম চেয়ারম্যানের সমর্থক ও আওয়ামী লীগ কর্মী বাবলু মিয়া (৩৫) নামের একজন ঘটনাস্থলেই নিহত হন। এ সময় সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ২৫ জন আহত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য পুলিশ প্রায় ১০০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়েছে। গাজীপুর : শ্রীপুরে নির্বাচনোত্তর সহিংসতায় এক ব্যবসায়ীকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্বজনদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) চেয়ারম্যান পদে পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকরা উপর্যুপরি কিল-ঘুষি দিয়ে ওই ব্যবসায়ীকে হত্যা করে। গতকাল সকালে উপজেলার গোসিংগা মধ্য বাজারে ওই ঘটনা ঘটে। নিহতের নাম হযরত আলী সরদার (৫৫)। তিনি শ্রীপুর উপজেলার লতিফপুর উত্তরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। হযরত আলী গোসিংগা বাজারে বাঁশের ব্যবসা করতেন। নিহতের বড় ভাই আসাদ আলী সরদার জানান, গোসিংগা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের বিজয়ী প্রার্থী শাহজাহান সরকারের সমর্থক ছিলেন হযরত আলী। শাহজাহান সরকারের আরেক সমর্থক ফকির মোহাম্মদ আবদুল্লাহকে মারধর করে খোকার সমর্থকরা। আর তাকে বাঁচাতে গিয়ে মারধরের শিকার হন হযরত আলী। ঘটনা স্থলে তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়লে হামলাকারীরা চলে যায়। শ্রীপুর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ জানান, নিহতের গায়ে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।

সিরাজগঞ্জ : বেলকুচি উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নে কদমতলী পশ্চিমপাড়ায় বিজয়ী প্রার্থী নুরুল ইসলাম সমর্থকদের হামলায় পরাজিত মেম্বার প্রার্থীর ছয়জন  সমর্থক ও আত্মীয়স্বজন আহত হয়েছে। এ সময়  বসতবাড়িও ভাঙচুর করা হয়। এদিকে তাড়াশে আওয়ামী লীগ ও বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছে। এ সময় আওয়ামী লীগ দলীয় কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। ফরিদপুর : বোয়ালমারী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় অন্তত ৫০ নারী-পুরুষ আহত হয়েছে। শেখর ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ইস্রাফিল মোল্লা জানান, নির্বাচনে ভোট দেওয়া না দেওয়াকে কেন্দ্র করে স্থানীয় ওবায়দুর ও সালাউদ্দিনের পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে পাঁচ নারীসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়। কক্সবাজার : চকরিয়ায় ইউপি নির্বাচন পরবর্তী হাঙ্গামায় পুলিশের এসআইসহ ছয়জন আহত হয়েছেন। পুলিশ আটক করেছে দুজনকে। ভাঙচুর হয়েছে তিনটি যানবাহন। গত রবিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার হারবাং ইউনিয়নের ইনানী এলাকায় দুই মেম্বারের সমর্থকদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ শুরু হলে এ ঘটনা ঘটে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া : সরাইল উপজেলার চুন্টা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ভোট চলাকালে জাল ভোটের ছবি তোলায় তিন সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে সরাইল থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মুন্সীগঞ্জ : লৌহজংয়ে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের পরবর্তী নৌকায় ভোট দেওয়াকে কেন্দ্র কনে বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের সংখ্যালঘু পরিবারে ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে।  জানা যায়, উপজেলার খিদির পাড়া ইউনিয়নের পিংরোনালী গ্রামের পাঁচ শতাধিক সংখ্যালঘু পরিবারের ওপর নির্বাচনে নৌকায় ভোট দেওয়াকে কেন্দ্র করে শনিবার রাতে হামলা চালায় প্রতিপক্ষ স্বতন্ত্র প্রার্থী (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী) শাহনেওয়াজ মৃধার  সমর্থকরা। শেরপুর : ইউপি নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় ৩০ জন আহত হয়েছে। গতকাল দুপুরে সদর উপজেলার লছমনপুর ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর দক্ষিণপাড়ার পরাজিত ইউপি সদস্য প্রার্থী মোস্তফা ফকির ও বিজয়ী ইউপি সদস্য সেলিম মিয়ার সমর্থকদের মধ্যে এই সহিংসতার ঘটনা ঘটে।

সর্বশেষ খবর