সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

বিদেশি বন্দীদের নিয়ে বিপাকে কারা কর্তৃপক্ষ

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম কারাগারে ভালো নেই বিভিন্ন দেশের আটক ৮৮ বন্দী। অবৈধ অনুপ্রবেশ, হত্যা ও মাদকসহ নানা মামলায় গ্রেফতার হয়ে বছরের পর বছর ধরে তারা আটক রয়েছেন চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে। ভাষা, খাবার এবং অন্যান্য বিষয়ে এসব বন্দীকে নিয়ে কারা কর্তৃপক্ষও রয়েছে বিপাকে।

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার কামাল হোসেন বলেন, ‘কারা বিধি অনুযায়ী বিদেশি বন্দীদের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়। কারা বিধির বাইরে কাউকে কম কিংবা বেশি সুবিধা দেওয়ার, সুযোগ দেওয়ার সুযোগ নেই কারা কর্তৃপক্ষের। বিদেশি কোনো বন্দী আইন সহায়তার জন্য আবেদন করলে তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দিতে ব্যবস্থা নেবে চট্টগ্রাম কারা কর্তৃপক্ষ।’ জানা যায়, চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে বিদেশি বন্দী রয়েছেন ৮৮ জন। তাদের মধ্যে নারীবন্দী রয়েছেন চারজন। কারাগারে বন্দী এসব বিদেশির মধ্যে ৮১ জনই হচ্ছে মিয়ানমারের নাগরিক। ভারতীয়, ঘানা, পাকিস্তানি নাগরিক বন্দী রয়েছেন দুজন করে। বন্দীদের মধ্যে চীনের নাগরিক রয়েছেন একজন। কারাগারে আটক এসব বন্দীর বিরুদ্ধে হত্যা, মাদক ব্যবসা, প্রতারণা এবং বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের অভিযোগ রয়েছে। তারা একেকজন সর্বোচ্চ ৩০ বছর ধরে কারাগারে আটক রয়েছেন। কারাগারে বন্দী অধিকাংশেরই কোনো আইনজীবী নেই। তাই তাদের মামলাগুলো বছরের পর বছর ধরে বিচারাধীন অবস্থায় রয়েছে আদালতে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের এক কর্মকর্তা বলেন, কারাগারে আটক বিদেশি বন্দীদের নিয়ে প্রায়ই বেকায়দায় পড়তে হয় কারা কর্তৃপক্ষকে। ভাষা ছাড়াও খাবার ও অন্যান্য বিষয়ে সমস্যায় পড়তে হয় তাদের নিয়ে। ভাষা জটিলতার কারণে অনেক বন্দীর সমস্যা জানতে পারে না কারা কর্তৃপক্ষ। বিশেষ করে মিয়ানমারের নাগরিকদের দূতাবাস থেকে কোনো ধরনের সহায়তা দেওয়া হয় না। মামলা পরিচালনার জন্য তাদের নেই কোনো আইনজীবী। তাই কারাগারে আটক থাকা মিয়ানমারের নাগরিকদের কারাগারে বন্দী থাকতে হচ্ছে দীর্ঘ সময় ধরে। চট্টগ্রামের মানবাধিকার নেতা এম জিয়া হাবিব আহসান বলেন, ‘পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ তাদের নাগরিক গ্রেফতার হলে আইনি সহায়তার জন্য পদক্ষেপ নেয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম মিয়ানমার। তারা নিজ দেশের নাগরিকদের কোনো রকম আইনি সহায়তা করে না। কারাগারে কোনো বন্দী যদি আমাদের কাছে আইনি সহায়তা পেতে জেলারের মাধ্যমে আবেদন করেন, তাহলে আমরা তাদের সার্বিক সহায়তা করব।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর