শনিবার, ২৩ মে, ২০২০ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

নাইক্ষ্যংছড়ির পাহাড়ে নান্দনিক গাছবাড়ি

আলম শাইন

নাইক্ষ্যংছড়ির পাহাড়ে নান্দনিক গাছবাড়ি

বন-বনানী ঘেরা পাহাড়ের উঁচু চূড়ায় অবস্থিত ‘নাইক্ষ্যংছড়ি উপবন পর্যটন কেন্দ্র’। পর্যটন কেন্দ্রটি বান্দরবান জেলায় অবস্থিত। একেবারেই মিয়ানমারের পিঠ ঘেঁষেই অবস্থান। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা বান্দরবান জেলার অন্তর্গত হলেও জেলা সদর থেকে অনেকটাই দূর। দুর্গম পথ! বান্দরবান হয়ে ওখানে যাওয়া-আসা বেশ কঠিনতর। তবে কক্সবাজার থেকে কাছাকাছি; পথ সুগম। কক্সবাজার থেকে মাত্র ২৮ কিলোমিটার দূরত্ব নাইক্ষ্যংছড়ির। ১৯৯৪ সালে দুই পাহাড়ের মধ্যখানে কৃত্রিম হ্রদ খনন করে এ পর্যটন কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। হ্রদের জল বেশ স্বচ্ছ ও নীলাভ। প্রথম দর্শনেই যে কেউ মোহিত হয়ে পড়েন। জল এতটাই নীলাভ ও স্বচ্ছ যে মনে হতে পারে জলে কোনো ধরনের কেমিক্যাল মেশানো হয়েছে। পারতপক্ষে তা নয়, জল জালিয়াতির মতো ঘটনা ঘটেনি এখানে। প্রকৃতির লীলায় জল ভিন্নরূপ ধারণ করেছে। সে এক মনোমুগ্ধকর পরিবেশ নাইক্ষ্যংছড়ি উপবন পর্যটন কেন্দ্রের। এককথায় দারুণ এক নৈসর্গিক স্থান এটি। আরেকটি আকর্ষণীয় বিষয় হচ্ছে গাছবাড়ি। প্রকৃতির সঙ্গে মিল রেখেই গাছবাড়িটি নির্মাণ করা হয়েছে। দ্বিগুণ জৌলুস বাড়িয়ে দিয়েছে পর্যটন কেন্দ্রের গাছবাড়িটি। পাহাড়ের উঁচুতে মোটাসোটা রেইনট্রি গাছের মাঝামাঝি ডালে বাড়িটি নির্মাণ করা হয়েছে। উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে টিন-কাঠ। প্রায় ২০ ফুট ওপরে গাছবাড়ির অবস্থান। বারান্দায় বসে খানিকটা বিশ্রাম নিলেই পর্যটকদের শরীর-মন ফুরফুরে হয়ে যায় নিমেষেই। ওখানে বসলেই সবুজ বনপাহাড়ের হাতছানিতে আরও মুগ্ধ হয়ে যান পর্যটকরা। হ্রদের বড় বড় রুই-কাতল মাছের দাপাদাপি নজরে পড়ে গাছবাড়ির বারান্দায় বসলেই। এ ছাড়াও নজর পড়ে ছায়ানিবিড় সবুজ গাছ-গাছালি ও রাবার গাছের সারি। নজরে পড়ে জলের ওপরের ঝুলন্ত সেতুটি, যা পর্যটন কেন্দ্রটাকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে। বলা যায়, মনোমুগ্ধকর সেই বনপাহাড়ের নজরকাড়া দৃশ্যে মোহিত না হয়ে পারবে না পর্যটকরা। উপবনের অদূরেই রয়েছে কুমিরের খামার, রয়েছে গয়ালের প্রজনন কেন্দ্র। সেসবও দেখার মতো। এক কথায় দারুণ এক নৈসর্গিক স্থান পাহাড়ি কন্যা নাইক্ষ্যংছড়ির উপবন পর্যটন কেন্দ্রটি। কেন্দ্রের চূড়ায় উঠলে উঁচু সব পাহাড়ের সারি নজরে পড়ে। নজরে পড়ে রাস্তার দুই ধারে রাবার গাছের সারিও। গাছ কেটে রস সংগ্রহ করছেন চাষিরা, সেই দৃশ্যও উপভোগ করার মতো। চমৎকার সেসব দৃশ্য পর্যটকদের জন্য বাড়তি পাওনা বলা যেতে পারে। এ ছাড়াও রাস্তার পাশে পাহাড়ি খরস্রোতা নদীর তীব্র স্রোতের পাশ কেটে গাড়ি হাঁকিয়ে চলার অনুভূতি ভীষণ শিহরণ জাগিয়ে তোলে। সমতলের রূপ ভিন্ন। রাস্তার দুইধারে ফসলের মাঠ; শেষ প্রান্তে সারিবদ্ধ পাহাড়, মাঝে মধ্যে দু-চারটা গাছও নজরে পড়ে। সে এক দারুণ অনুভূতির জন্ম নেয় নাইক্ষ্যংছড়ি দর্শনে।

সর্বশেষ খবর