মঙ্গলবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

ঢাকা-১৮ ও সিরাজগঞ্জ-১ উপনির্বাচন ১২ নভেম্বর

ইসির বৈঠকে ফাইল উপস্থাপন নিয়ে ক্ষুব্ধ কমিশনাররা

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা-১৮ ও সিরাজগঞ্জ-১ আসনের উপনির্বাচনের ভোট গ্রহণ হবে আগামী ১২ নভেম্বর। গতকাল নির্বাচন কমিশনের সভা শেষে ইসি সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর এ দুই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন। তিনি জানান, এ দুই নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহীরা ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত মনোনয়ন দাখিল করতে পারবেন। ১৫ অক্টোবর বাছাই শেষে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সুযোগ থাকবে। ১২ নভেম্বর ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) এ দুই আসনে ভোট হবে। সাহারা খাতুনের মৃত্যুতে ৯ জুলাই ঢাকা-১৮ আসন শূন্য ঘোষণা করা হয়। আর মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুর পর গত ১৩ জুন সিরাজগঞ্জ-১ আসনটি শূন্য হয়। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিশনের ৭১তম সভায় ভোটের এই দিনক্ষণ চূড়ান্ত করা হয়। এদিকে গতকাল নির্বাচন কমিশনের সভায় ফাইল উপস্থাপন করা নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন দুই নির্বাচন কমিশনার। ইসি সচিবালয় কমিশনারদের অনেক কিছুই জানান না বলেও অভিযোগ উঠেছে। ইসির সভা শেষে ইসি সচিব আলমগীর বলেন, ঢাকা-১৮ ও সিরাজগঞ্জ-১ আসন মৃত্যুজনিত কারণে শূন্য হয়েছিল। সংবিধানে আসন শূন্য হওয়ার প্রথম ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার কথা বলা আছে। করোনার কারণে এই সময়ে নির্বাচন করার চেষ্টা করেনি ইসি। এরপরে নির্বাচন কমিশন আরও ৯০ দিন সময় বাড়িয়ে দিয়েছিল। এই ৯০ দিন অতিক্রম করার সুযোগ সংবিধানে দেওয়া হয়নি। অতএব নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত দিয়েছে। নির্বাচনের শিডিউল ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি বলেন, বিদেশে এনআইডি কার্ড করার ক্ষেত্রে ফি ধরার একটা অনুরোধ ছিল বিদেশি বাংলাদেশিদের। তারা বলছে, আমরা ফি দিতে রাজি আছি, তবে সেবাটা ভালো মানের হতে হবে। এ বিষয়টি কমিশন সভায় উপস্থাপন করা হয়েছিল। সভায় বলা হয়েছে, নীতিগত সিদ্ধান্ত নিতে হলে এটা আইনে থাকতে হবে। কমিশনে দেখতে বলা হয়েছে, আইনে এ ধরনের কিছু বলা আছে কি না। এনআইডি কার্ডের আইনে এ ধরনের ফি ধরার কোনো বিষয় আছে কি না। না থাকলে আইন পরিবর্তন করত হবে বা এ ধরনের কী আছে এটার যে কমিটি আছে, সেটার মাধ্যমে ঠিক করতে বলেছে।

ফাইল উপস্থাপন নিয়ে ক্ষুব্ধ কমিশনাররা :  গতকাল ইসির বৈঠকে আলোচ্যসূচিতে নির্বাচন কমিশন (কর্মকর্তা-কর্মচারী) নিয়োগ বিধিমালা ও বিদেশে বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা প্রদানে ফি নির্ধারণের বিষয় ছিল। কিন্তু এই দুই বিষয়ে ফাইল ইসির সভায় উপস্থাপন করা হলেও ইসির সংশ্লিষ্ট কমিটির সভাপতিরা (কমিশনাররা) কেউ কিছু জানেন না। ইসির বৈঠকে কমিশনারদের পাশ কাটিয়ে ফাইল উপস্থাপন করায় চরম ক্ষোভপ্রকাশ করেন দুই নির্বাচন কমিশনার। বৈঠকে সূত্র জানিয়েছে, ‘ইসির নিয়োগ, পদোন্নতি, প্রশাসনিক সংস্কার ও পুনর্বিন্যাস এবং দক্ষতা উন্নয়ন’ কমিটির সভাপতি নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। কিন্তু ইসির বৈঠকে ‘নির্বাচন কমিশন (কর্মকর্তা-কর্মচারী) নিয়োগ’ সংক্রান্ত যে ফাইল উপস্থাপন করা হয়েছে সেই বিষয়ে এই নির্বাচন কমিশনার কিছুই জানেন না। ইসি সচিবালয় তাকে পাশ কাটিয়ে বিধিমালা সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়ায় তিনি কমিশন বৈঠকে ক্ষোভপ্রকাশ করেন। এ ছাড়া পাবনার নির্বাচনের আগে গ্রেফতারের ঘটনার বিষয়েও তিনি কমিশন সভায় ব্যাখ্যা চান। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, ‘বিদেশে বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা প্রদানে ফি নির্ধারণ’ সংক্রান্ত ফাইল সংশ্লিষ্ট কমিটির সভাপতি নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদত হোসেন চৌধুরীকে না জানিয়েই কমিশন সভায় উপস্থাপন করা হয়। এই এজেন্ডা আলোচনার সময় ক্ষোভ প্রকাশ করেন এই নির্বাচন কমিশনার। সভায় তিনি বলেন, আমি এ সংক্রান্ত কমিটির প্রধান হলেও আমাকে না জানিয়ে আলোচনার জন্য তোলা হয়েছে। এটা আমার জন্য বিব্রতকর। এমন চলতে থাকলে কমিটি রাখা ও আমারও এ সভায় অংশগ্রহণের কোনো প্রয়োজন নেই। এ সময় সংশ্লিষ্টরা দুঃখ প্রকাশ করেন। পরে শাহাদাত হোসেন চৌধুরী বলেন, ইসি সচিবালয় অনেক বিষয় কমিশনারদের জানায় না। এভাবে অবজ্ঞা করা হলে কমিটি বাতিল করে দেন। বৈঠকে ফাইল উপস্থাপনের বিষয়ে ইসি সচিব বলেন, সিইসির ক্ষমতা আছে, প্রয়োজনে তিনি বৈঠকে আলোচ্য বিষয় ঠিক করতে পারেন। সিইসি বলেছেন, এসব বিষয়ে প্রাথমিক আলোচনা হতে পারে। যেহেতু সিইসি বলেছেন, তাই খালি হাতে তো আর যাওয়া যায় না। তাই সংশ্লিষ্ট অফিসাররা কিছু কাগজপত্র নিয়ে গিয়েছিলেন। এটা কিন্তু সচিবের মাধ্যমে সিইসি কর্তৃক অনুমোদিত হয়ে যায়নি। 

পাবনায় ভোট পড়েছে ৬৫ ভাগ : পাবনা-৪ আসনের উপনির্বাচনে ৬৫ ভাগের বেশি ভোট পড়েছে বলে জানিয়েছেন ইসির সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর। কম বয়সীদের ভোটের লাইনে দাঁড়ানোর বিষয়ে তিনি বলেন, কেউ যখন লাইনে দাঁড়ায় তিনি ভোটার কি না, তা তো তখন দেখা হয় না। চেক করা হয় না। পাবনা-৪ আসনের উপনির্বাচনে কম বয়সীদের ভোট (জালভোট) দেওয়ার প্রমাণ কেউ কমিশনের কাছে উপস্থাপন করলে তদন্ত করা হবে। তিনি বলেন, আইনের সবকিছু তো বাস্তবায়ন করা যায় না। আমার কাছে কাগজপত্রে এসেছে নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হয়েছে।

সর্বশেষ খবর