বুধবার, ১০ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

পি কে ও তার ৩৭ সহযোগীর বিরুদ্ধে আরও ১০ মামলার অনুমোদন

৪৫ জনের বিদেশ যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা

আনিস রহমান

বিদেশে পলাতক এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রশান্ত কুমার হালদার (পি কে হালাদার) ও তার ৩৭ সহযোগীর বিরুদ্ধে আরও ১০টি মামলার অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। একই সঙ্গে ৩৩ জনের বিরুদ্ধে সম্পদ বিবরণীর নোটিস জারির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই তাদের বিরুদ্ধে সম্পদ বিবরণী চেয়ে নোটিস জারি করার কথা। ইতিমধ্যে পি কে হালদারের মা লীলাবতী হালদারসহ ৪৫ সহযোগীর বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা চেয়ে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

পি কে হালদারের বিরুদ্ধে অর্থ পাচার ও আত্মসাতের অভিযোগগুলো তদন্ত করছেন দুদকের অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা উপপরিচালক মো. গুলশান আনোয়ার প্রধানসহ চার সদস্যের টিম। গতকাল কমিশন থেকে এসব মামলা দায়েরের অনুমোদন দেওয়া হয় বলে দুদকের সচিব মুহা. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান। দুদকের তদন্তকারী একাধিক সূত্র জানায়, ১০টি ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে বিদেশে পালিয়ে থাকা পি কে হালদারসহ ৩৭ জনের বিরুদ্ধে শিগগিরই এসব মামলা করা হতে পারে। পি কে হালদার ছাড়াও এই মামলায় উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন- দ্রিনান এ্যাপারেলস লিমিটেডের চেয়ারম্যান কাজী মমরেজ মাহমুদ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবু রাজীব মারুফ, ইমেক্সো মালিক ইমাম হোসেন, লিপরো ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক উত্তম কুমার মিস্ত্রি, উইন্টেল ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের পরিচালক সুকুমার সাহা, অনিন্দিতা সাহা, আর্থস্কোপ লিমিটেডের চেয়ারম্যান প্রশান্ত           দেউরী, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিরা দেউরী, ওকায়ামা লিমিটেডের চেয়ারম্যান সুব্রত দাস, আরবি এন্টারপ্রাইজের প্রপাইটার রতন কুমার বিশ্বাস, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের পরিচালক পাপিয়া ব্যানার্জী, তার স্বামী ও প্রতিষ্ঠানের পরিচালক বাসু দেব ব্যানার্জী, এম নুরুল আলম মো. নওশের-উল ইসলাম, নাসিম আনোয়ার, মো. নুরুজ্জামান, এম এ হাশেম, মোহাম্মদ আবুল হাসেম, জহিরুল আলম উল্লেখযোগ্য।

দুদক সূত্র জানায়, আসামিরা অসৎ উদ্দেশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতারণার মাধ্যমে যাচাই-বাছাই ছাড়াই কোনো মর্টগেজ না নিয়ে ১০টি কাগুজে প্রতিষ্ঠানের মালিককে ঋণ পাইয়ে দিতে সহযোগিতা করেন। বেনিফিশিয়ারিরা ইন্টারন্যাশনাল লিজিং থেকে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা ভুয়া ঋণের নামে তুলে আত্মসাৎ করেন এবং পরবর্তীতে বিভিন্ন লেয়ারিংয়ের মাধ্যমে ভুয়া কোম্পানি ও বিভিন্ন ব্যক্তির হিসাবে উক্ত অর্থ স্থানান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে অবস্থান গোপনপূর্বক পাচার করে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে অপরাধ করেছেন। পি কে হালদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নানা কৌশলে নামে-বেনামে অসংখ্য কোম্পানি খুলে শেয়ারবাজার থেকে বিপুল পরিমাণ শেয়ার কেনেন এবং ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে ও পরে নিজের আত্মীয়, বন্ধু ও সাবেক সহকর্মীসহ বিভিন্ন ব্যক্তিকে পর্ষদে বসিয়ে অন্তত চারটি ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ নেন। এসব কোম্পানি থেকে তিনি ঋণের নামে বিপুল অঙ্কের টাকা সরিয়ে বিদেশে পাচার করেছেন বলে তদন্তকারী সূত্র জানিয়েছে। এর মধ্যে আইএলএফএসএল গ্রাহকদের অভিযোগের মুখে গত বছরের শুরুতে পি কে হালদারের বিদেশ পালানোর পর দুদক তার ২৭৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের খবর দিয়ে মামলা করে। পি কে হালদারকে গ্রেফতারে ইতিমধ্যে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিস জারি করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর