বৃহস্পতিবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

রাজধানীতে স্বামীর হাতে স্ত্রী ও ভাইয়ের হাতে ভাই খুন

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীতে পৃথক ঘটনায় এক গৃহবধূ ও এক দর্জি দোকানদার খুন হয়েছেন। তারা হলেন- ক্যান্টনমেন্টের মানিকদিতে শাকিলা পারভিন সুমি (২৮) ও শ্যামপুরে মুরাদ (৪০)। নিহতদের পরিবারের অভিযোগ, স্বামীর হাতে সুমি ও ছোট ভাইয়ের হাতে মুরাদ খুন হয়েছেন। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ দুটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (ঢামেক) মর্গে পাঠিয়েছে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ।

নিহত সুমির মামাতো ভাই শাকিব মোল্লা জানান, নিহত শাকিলার গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানার গোল্লীতে। তিন বোনের মধ্যে তিনি মেজো। ২০১৯ সালে প্রেম করে বিয়ে হয়। তার স্বামী রাইসুল আলম সৌরভ একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। তাদের কোনো সন্তান নেই। স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে রাজধানীর পশ্চিম মানিকদি ২২৭/২ নম্বর বাড়ির নিচতলায় থাকতেন।

শাকিব আরও বলেন, বিয়ের পর থেকেই    তাদের মধ্যে ঝগড়াবিবাদ চলছিল। শাকিলাকে প্রায়ই মারধর করতেন তার স্বামী রাইসুল। মঙ্গলবার রাতে তার মায়ের মাধ্যমে শাকিলার মৃত্যুর খবর শুনতে পাই। তার স্বামী দাবি করছেন, শাকিলা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তবে তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। আমাদের সন্দেহ তার স্বামী তাকে হত্যা করেছেন। ক্যান্টনমেন্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাহান হক জানান, শাকিলার শরীরে কিছু জখমের চিহ্ন রয়েছে। তার স্বামী দাবি করেছেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ইফতারের সময় ছোলা বুটে লবণ কম-বেশি হওয়া নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে শাকিলা পাশের রুমে গিয়ে ফ্যানের হুকের সঙ্গে পরনের শাড়ি দিয়ে গলায় ফাঁস নেয়। পরে স্বামী তাকে দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এরপর তিনি মৃতদেহটি আবার বাসায় নিয়ে যান। পরে পুলিশ বিষয়টি অবহিত হয়ে রাতেই লাশ উদ্ধার করে। প্রাথমিকভাবে ঘটনাটি আমাদের কাছে সন্দেহজনক মনে হচ্ছে। তাকে হত্যা করা হয়েছে কি না তা ময়নাতদন্ত ও বিস্তারিত তদন্তের পরই নিশ্চিত হওয়া যাবে। এ ঘটনায় ক্যান্টনমেন্ট থানায় নিহতের ছোট বোন বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন। অভিযুক্ত রাইসুলের বিরুদ্ধে একটি মাদক মামলাও হয়েছে। ওই দুই মামলায় রাইসুলকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

এদিকে, গতকাল দুপুরে শ্যামপুর থানার ফরিদাবাদের হরিচরণ রায় রোডের একটি বাড়িতে ছোট ভাই মাসুদের ছুরিকাঘাতে বড় ভাই মুরাদ খুন হয়েছেন। মুরাদকে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে আসা লিটন জানান, ফরিদাবাদের ঘটনাস্থল মুরাদের নিজের বাড়ি। তিনি দর্জি দোকানদার। বাড়ির দোতলায় কাঠমিস্ত্রিরা কাজ করছিল। তারা হঠাৎ মুরাদের ছোট ভাই মাসুদকে বাড়ি থেকে দৌড়ে পালাতে দেখে। কিছুক্ষণ পর মুরাদকে রক্তাক্ত অবস্থায় বাড়ি থেকে নিচে নামতে দেখে তারা। এরপর তাকে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। নিহতের বোন ছন্দা আক্তার জানান, দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে মুরাদ বড়। মাকে নিয়ে ওয়ারী এলাকায় থাকেন তিনি। মুরাদ পরিবার নিয়ে শাহজাহানপুরে থাকেন। শ্যামপুরে তাদের নিজেদের বাড়িতে থাকেন ছোট ভাই মাসুদ।

শ্যামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মফিজুল আলম জানান, মুরাদ নিহতের ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত মাসুদকে ধরতে অভিযান চলছে।

সর্বশেষ খবর