বুধবার, ৩ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

পুনরুদ্ধার ও গবেষণা হবে সুলতানের শিল্পকর্মের

সাংস্কৃতিক প্রতিবেদক

পুনরুদ্ধার ও গবেষণা হবে সুলতানের শিল্পকর্মের

বরেণ্য চিত্রশিল্পী এস এম সুলতানের শিল্পকর্ম নিয়ে প্রথমবারের মতো গবেষণা ও পুনরুদ্ধার কাজ শুরু করতে যাচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস। যুক্তরাষ্ট্রের ‘অ্যাম্বাসাডরস ফান্ড ফর কালচারাল প্রিজারভেশন’-এর ২০ বছর পূর্তি এবং বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তীর সম্মানে দূতাবাস বেঙ্গল ফাউন্ডেশনকে অর্থায়ন করছে। এ লক্ষ্যে গতকাল মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার এবং বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মুহম্মদ নূরুল হুদা ধানমন্ডির বেঙ্গল শিল্পালয়ে যৌথভাবে এস এম সুলতানের শিল্পকর্মবিষয়ক একটি সংস্কুতি সংরক্ষণ প্রকল্প উদ্বোধন করেন।

প্রকল্পটি বাংলাদেশের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সম্পর্কে সামষ্টিক বোঝাপড়া বাড়াতে সহায়তা এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য শিল্প ও ইতিহাস সংরক্ষণে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। রাষ্ট্রদূত মিলার আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকল্পের ঘোষণা দেওয়ার জন্য বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক লুভা নাহিদ চৌধুরীর হাতে ঘোষণাফলক তুলে দেন এবং তিনি বেঙ্গল গ্যালারিতে চলমান সুলতানের কয়েকটি বিখ্যাত শিল্পকর্মের প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন। ‘অ্যাম্বাসাডরস ফান্ড ফর কালচারাল প্রিজারভেশন’ বিদেশে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক উদ্যোগগুলোর অন্যতম। গত ২০ বছরে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও উত্তরাধিকার সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধারমূলক ১২টি এএফসিপি প্রকল্পে ৮ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলারের বেশি আর্থিক সহায়তা দিয়েছে। প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে- লালবাগ দুর্গে অবস্থিত ১৭ শতকে নির্মিত মুঘল হাম্মামখানা সংস্কার ও পুনরুদ্ধার; বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘরের সংগ্রহকে সমৃদ্ধ করা ও জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা; বাউল গান ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, জামদানি বুনন পদ্ধতি এবং ২০০০ বছরের পুরনো ধাতব ঢালাই কৌশলের ওপর তথ্যচিত্র তৈরি ও সংরক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ। এএফসিপি কার্যক্রম আমেরিকান মূল্যবোধের প্রতিফলন ঘটায় এবং যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধুত্বকে তুলে ধরে। ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের ১৩০ দেশে ১ হাজারের বেশি এএফসিপি সংরক্ষণ প্রকল্পে সহায়তা করেছে।

হেমন্তের সাঁঝের বেলায় শিল্পের রসে ¯œাত শিল্পকলা : হেমন্তের সন্ধ্যা। দিনের আলো নিভে যাওয়ার পর প্রকৃতিতে আঁধার নেমে এলেও রাজধানীর সর্বত্র সর্বদাই বর্ণিল। বৈদ্যুতিক বাতির সঙ্গে নিয়নবাতির ঝলকানিতে মহানগরী নানা রঙে সাজলেও সব আলোর ঝলকানি ম্লান করে শিল্পকলা থেকে বিচ্যুত হচ্ছিল শিল্পের আলোর ফল্গুধারা। যার কারণে হেমন্তের নাতিশীতোষ্ণ এই সাঁঝের বেলায় উদ্দীপনায় মেতে উঠল শিল্পের এই আঙিনায় আগতরা। উন্মুক্ত প্রাঙ্গণের মুক্তমঞ্চ থেকে কখনো ভেসে আসছিল সুরের প্রবহমান ধারা আবার কখনো নৃত্যের শৈল্পিক ছন্দের তালে তালে তারুণ্যের উন্মাদনা সৃষ্টি হয়েছিল একাডেমিজুড়ে। আর সুর ও নৃত্যের নান্দনিকতায় ¯œাত হয়ে করতালির মাধ্যমে শিল্পীদের প্রতি অভিনন্দনের ঢালিও ছুড়ে দিচ্ছিলেন সংস্কৃতি অনুরাগী দর্শক-শ্রোতারা। গতকাল সন্ধ্যায় ‘বঙ্গবন্ধু যুবমেলা’র উদ্বোধনী দিনের সাংস্কৃতিক আসরে এমন চিত্রকল্পই ফুটে উঠেছিল। বাউল গান, একক নৃত্য, দলীয় নৃত্য, একক গান, দলীয় গান, আবৃত্তি সংস্কৃতির এমন নানা মাধ্যমের সমাহারে সাজানো ছিল মনোজ্ঞ এ আসর। প্রতিটি পরিবেশনাতেই শিল্পের আলো ছড়িয়ে পড়েছিল সমগ্র একাডেমিতে। অনুষ্ঠানের শুরুতেই দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে জেনেসিস ইয়ুথ সোসাইটির বিকাশ ও প্রজাপতি। এরপর সারুলিয়ার ইয়ুথ সোসাইটির সজল সাহা ও আফরিন জাহান দ্বৈত কণ্ঠে পরিবেশন করে আঞ্চলিক গান। অনুষ্ঠানে ফারজানা রনি গেয়ে শোনান ‘মারিয়া ভুজুঙ্গু তীর কলিজা করিলা চৌচির’, সামিয়া হাওলাদার পরিবেশন করেন চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গান ‘মধু হই হই আঁরে বিষ হাওয়াইলা’, জে আফরোজের কণ্ঠে গীত হয় ‘তোমার ঘরে বসত করে কয়জনা’, আবু লেইস পরিবেশন করে ‘মনের জানালা ধরে’, শেখ জয়নুল আবেদীন গেয়ে শোনান বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে একটি গান। বাউল গান পরিবেশন করেন পাগলা শাহীন, লালনের গান গেয়ে শোনান কুমার বিষ্ণু, আধুনিক গান পরিবেশন করে চ্যানেল আইয়ের খুদে গানরাজ রাইসা, শাখাওয়াত হোসেন।

সাপ খেলা গানের সঙ্গে একক নৃত্য পরিবেশন করে রিয়া মণি, এরিনা ইসলাম ইভা। দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে অন্তরঙ্গ যুব শিশু কিশোর সংগঠন। জে আফরোজ ও সুমি দ্বৈত কণ্ঠে আবৃত্তি করেন ‘আমি ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাড়ির কথা বলছি’। অনুষ্ঠান সমন্বয়ে ছিলেন জেনেসিস থিয়েটারের নূর হোসেন রানা। উপস্থাপনায় ছিলেন ইমন খান ও সুমাইয়া ইসলাম তিশা।

সর্বশেষ খবর