শনিবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

বাড়ছে সংক্রমণ, বাড়ছে মৃত্যু

২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত আরও ১১ হাজার ৪৩৪, মৃত্যু ১২ জনের

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাড়ছে সংক্রমণ, বাড়ছে মৃত্যু

একদিনের ব্যবধানে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা রোগী শনাক্তের হার, রোগী শনাক্তের সংখ্যা ও মৃত্যু আরেক দফা বেড়েছে। শনাক্তের হার বেড়েছে দুই শতাংশের বেশি। এক দিনে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা গত ৯ আগস্টের পর আবারও ১১ হাজার ছাড়িয়েছে গত ২৪ ঘণ্টায়।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যানুযায়ী, গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৪০ হাজার ১৩৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১১ হাজার ৪৩৪ জনের দেহে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। শনাক্তের হার ২৮.৪৯ শতাংশ। এ সময়ে মারা গেছেন ১২ জন করোনা রোগী। এর আগের দিন শনাক্ত হয়েছিল ১০ হাজার ৮৮৮ জন করোনা রোগী। শনাক্তের হার ছিল ২৬.৩৭ শতাংশ। মৃত্যু হয়েছিল চারজনের। গতকাল পর্যন্ত দেশে মোট ১৬ লাখ ৬৪ হাজার ৬১৬ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১৫ লাখ ৫৫ হাজার ৫৯৭ জন। প্রাণ হারিয়েছেন ২৮ হাজার ১৯২ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত ১২ জনের মধ্যে ছয়জন মারা গেছেন ঢাকা বিভাগে। এছাড়া সিলেট বিভাগে দুইজন এবং খুলনা, চট্টগ্রাম, রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগে একজন করে মারা গেছেন। সবার মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালে। গারা দেশেই বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। ঘরে ঘরে অনেকেরই সর্দি-জ্বর। পরীক্ষা করলেই ধরা পড়ছে করোনা। অনেকে পরীক্ষাই করছেন না। আবার জিনোম সিকোয়েন্সে ওমিক্রন আক্রান্তের হার বেড়েছে। আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো আরও খবর-

চট্টগ্রাম : এ জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) ল্যাবে সাতজনের নমুনায় প্রাথমিকভাবে ওমিক্রন শনাক্ত করা হয়েছে। গবেষকরা নমুনাগুলোতে ওমিক্রনের অস্তিত্ব থাকার বিষয়টি প্রায় ৯০ ভাগ নিশ্চিত হয়েছেন। তবুও অধিকতর নিশ্চিত হতে নমুনাগুলোর জিনোম সিকোয়েন্সের জন্য ঢাকায়  পাঠানো হয়। পক্ষান্তরে চট্টগ্রামের দুটি হাসপাতালে ৩০ কভিড পজিটিভ রোগীর মধ্যে ৭৫ শতাংশই ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত বলে শনাক্ত করা হয়েছে। অন্যদিকে, চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় পাঠানো সন্দেহজনক করোনা পজিটিভ রোগীর মধ্যে আটজনের নমুনায় ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে শনাক্ত হয়েছে।

খুলনা : খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় করোনা সংক্রমণ আরও বেড়েছে। গতকাল এক দিনে এক হাজার ৬৭৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৪২৩ জন শনাক্ত হয়। শনাক্তের হার ২৫ দশমিক ২৩। এর আগে ২০ জানুয়ারি এক হাজার ১৮৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২৮৭ জন করোনা শনাক্ত হয়। শনাক্তের হার ছিল ২৪ দশমিক ১৫। সংক্রমণের ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে খুলনা, যশোর, কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ জেলা। এর মধ্যে গতকাল যশোরে ৩৫৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১২৯ জন শনাক্ত হয়। শনাক্তের হার ৩৬ দশমিক ৪৪। খুলনা জেলায় গতকাল ৪৪৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১২৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়। শনাক্তের হার ২৮ দশমিক ১২। ঝিনাইদহে গতকাল ১১৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৫০ জন শনাক্ত হয়। শনাক্তে হার ৪৩ দশমিক ৮৫ এবং কুষ্টিয়া জেলায় ২৫৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয় ৫৫ জন। শনাক্তের হার ২১ দশমিক ৭৩।

বরিশাল : প্রতিদিন লাফিয়ে বাড়ছে শনাক্তের হার। গত বুধবারের চেয়ে বৃহস্পতিবার শনাক্তের হার আট ভাগেরও বেশি বৃদ্ধি পায়। গত বৃহস্পতিবার রাতে শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজের আরটি পিসিআর ল্যাবে ১২৫ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৪১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৩২.৮ শতাংশ। বুধবার শনাক্তের হার ছিল ২৪.৫৪ ভাগ, মঙ্গলবার ২৬.৩৮ ভাগ, সোমবার ১৭.৭২ ভাগ, রবিবার ১২.২২ ভাগ এবং গত শনিবার ৫.০৪ ভাগ।

রংপুর : বিভাগে করোনা সংক্রমণ হার ২৯ শতাংশ ছুঁই ছুঁই করছে। বিভাগীয় স্বাস্থ্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, করোনা সংক্রমণের হার প্রতিদিনই বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায়  নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার ছিল ২৮ দশমিক ৯২ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় রংপুর বিভাগে মৃত্যু না থাকলেও এ পর্যন্ত এক হাজার ২৫২ জন করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। করোনা শনাক্তের দিক দিয়ে বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও মৃত্যু হয়েছে দিনাজপুর জেলায়।

সর্বশেষ খবর