শুক্রবার, ৮ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

সারা দেশে ৬ হাজারের বেশি ভুয়া চিকিৎসক

দুই দশক ধরে সার্টিফিকেট বাণিজ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি নামে নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের আড়ালে প্রায় দুই দশক ধরে চলছিল ডাক্তারির ভুয়া সার্টিফিকেট বাণিজ্য। ওই ইউনিভার্সিটি খুলে এমবিবিএস, বিডিএস, এমফিল, পিএইচডি, ইঞ্জিনিয়ারিং ও অ্যাডভোকেটশিপসহ ১৪৪টি বিষয়ের ওপর সার্টিফিকেট দিতেন ডাক্তার পরিচয় দেওয়া মো. নুরুল হক সরকার ওরফে শেখ গনি সরকার (৭২)। সারা দেশে অন্তত ৬ হাজারের বেশি মানুষ ডাক্তারির ভুয়া সার্টিফিকেট নিয়েছেন। ১৯৯৬ সাল থেকে গনি সরকার শত শত ভুয়া ডিগ্রি দিয়েছেন। প্রতিটি ভুয়া এমবিবিএস-বিডিএস সার্টিফিকেটের বিনিময়ে হাতিয়েছেন ৫ থেকে ২৫ লাখ টাকা। এসব ভুয়া চিকিৎসক এখন ছড়িয়ে রয়েছেন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।

গতকাল দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) এ কে এম হাফিজ আক্তার।

এর আগে বুধবার রাজধানীর মালিবাগের প্যারামাউন্ট টাওয়ারে অভিযান চালিয়ে ভুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও একজন সহযোগীসহ ভুয়া চার এমবিবিএস ডাক্তারকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওয়ারী বিভাগ। গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন- প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির কথিত ভিসি নুরুল হক সরকার ওরফে শেখ গনি সরকার (৭২), তার সহযোগী মোয়াজ্জেম হোসেন (৫৮), ভুয়া ডাক্তার সাইদুর রহমান ওরফে নজরুল (৩০), মাহফুজুর রহমান ওরফে মাহফুজ (৩৭), আমান উল্লাহ (৩৮) এবং দেবাশীষ কুন্ডু (৫২)। ডিবির একটি সূত্র জানিয়েছে, এদের হাত ধরে সারা দেশে অন্তত ৬ হাজারের বেশি মানুষ ডাক্তারির ভুয়া সার্টিফিকেট নিয়েছেন। এসব সার্টিফিকেটের বিপরীতে অনেকে বিএমডিসির রেজিস্ট্রেশন নম্বরও নিয়েছেন। এমন অসংখ্য ভুয়া চিকিৎসক দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে, ডাক্তারির ভুয়া সার্টিফিকেটধারীর সংখ্যা নুরুল হকের কম্পিউটারে রয়েছে। সেখান থেকে সুনির্দিষ্ট সংখ্যাটি বের করার চেষ্টা চলছে। এ ছাড়া গ্রেফতার ব্যক্তিরা মাদরাসা থেকে দাখিল ও কামিল পাস করে টাকার বিনিময়ে এমবিবিএস ডিগ্রি নেন। দাখিল ও কামিল পাসে কোনোভাবেই এমবিবিএস ডিগ্রি নেওয়া সম্ভব নয়। এমবিবিএস ডিগ্রি নিয়ে সুসজ্জিত চেম্বার খুলে এসব চিকিৎসক রোগীও দেখতেন নিয়মিত। গ্রেফতার অভিযানের সময় ভুয়া সনদপত্র, টেস্টিমোনিয়াল, ট্রান্সক্রিপ্ট, রেজিস্ট্রেশন কার্ড, অ্যাডমিট কার্ড, নকল সিল উদ্ধার করা হয়েছে। ৪টি বিভিন্ন ব্যাংকের চেক, ভুয়া সনদ প্রদানের চটকদার বিজ্ঞাপনের পেপার কাটিং ও লিফলেট, প্রেসক্রিপশন, অসংখ্য ভিজিটিং কার্ড, নব দিগন্ত ডায়াগনস্টিক সেন্টার অ্যান্ড ডক্টরস চেম্বারের কপি ও একটি সিপিইউ ও একটি প্রিন্টার জব্দ করা হয়। যা ভুয়া সনদপত্র তৈরি ও ছাপার কাজে ব্যবহৃত হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর