রবিবার, ২২ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

অস্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে

কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদ

অস্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে

চলমান প্রেক্ষাপটে দ্রব্যমূল্য ও মূল্যস্ফীতি কমানোর কৌশল নিতে সরকারকে তাগিদ দিয়েছেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদ। তিনি বলেছেন, ‘দেশে রিজার্ভের সুরক্ষা দরকার। এটা শুধু সরকার বুঝলে হবে না। দেশে-বিদেশে    একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এই পরিস্থিতিতে মিতব্যয়ী হতে হবে। অন্যথায় মার্কিন ডলারের মূল্য কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, তা বলা কঠিন। কারণ আমরা বিশ্ব অর্থনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে পারি না।’ গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সাবেক এই সভাপতি সভাপতি বলেন, ‘ডলার সংকটের প্রধান কারণ হলো করোনা মহামারির পর সারা বিশ্বে সব ধরনের কর্মকা  শুরু হয়েছে। আমাদের এখানেও বিনিয়োগ বাড়ছে। হঠাৎ করেই সব ধরনের মূলধনি যন্ত্রপাতির আমদানি বাড়তে শুরু করেছে। মানুষ এখন দেশের বাইরে নানা কাজের জন্য যাচ্ছে। ফলে ডলারের চাহিদা বেড়েছে। এ ছাড়া ইউক্রেন ও রাশিয়া যুুদ্ধের কারণেও ডলারের দাম বেড়েছে। অন্যদিকে জ্বালানির দামও বেড়েছে। এ ছাড়া গত নয় মাসে আমাদের আমদানিতে ব্যয় হয়েছে ২৫ বিলিয়ন ডলার। আর একই সময়ে রপ্তানি আয় হয়েছে ৪ বিলিয়ন ডলার এবং রেমিট্যান্স এসেছে ১৭ বিলিয়ন ডলার। তাহলে এখানে নয় মাসে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৪ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। এটাই মূল কারণ। এখানে আমাদের রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স বাড়াতে হবে। একইভাবে বৈদেশিক ঋণের ক্ষেত্রে একটু রক্ষণশীল হতে হবে। কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদ বলেন, টাকার বিপরীতে ডলারের ক্রমবর্ধমান মূল্য বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে সরকারের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে করোনা মহামারির পর বাংলাদেশের অর্থনীতি বর্তমানে আগের অবস্থায় ফিরে আসছে। এটি ইতিবাচক। তবে অতিসম্প্রতি টাকার বিপরীতে মার্কিন ডলারের ক্রমবর্ধমান মূল্য বৃদ্ধির কারণে অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এই শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতা বলেন, ডলারের এই ঊর্ধ্বগতির ফলে শিল্পের আমদানি করা কাঁচামাল ও ভোগ্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। অথচ বর্তমানে রেমিট্যান্স এবং রপ্তানি আয়ের ক্ষেত্রে যথেষ্ট প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। কাজেই অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে ডলারের এই উচ্চমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। তফসিলি ব্যাংকে ডলার সরবরাহ বৃদ্ধিসহ কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে টাকার অবমূল্যায়ন রোধ করা সম্ভব হলে একদিকে মূল্যস্ফীতি যেমন নিয়ন্ত্রণে আসবে, অন্যদিকে শিল্পোৎপাদন ও রপ্তানি বৃদ্ধির মাধ্যমে অর্থনীতি শক্তিশালী অবস্থানের দিকে অগ্রসর হবে।

টাকার বিপরীতে ডলারের অতিরিক্ত দাম নিয়ন্ত্রণে করণীয় নির্ধারণ ও বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ব্যাংকে নির্দেশনা প্রদান জরুরি।

এফবিসিসিআইর সাবেক এই সভাপতি বলেন, বৈশ্বিক মহামারি ও ইউক্রেন - রাশিয়া সংকটের ফলে বিশ্বব্যাপী খাদ্যপণ্য, শিল্পের কাঁচামাল ও উৎপাদন উপকরণসহ সব খাতে ব্যাপক মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। মাত্রাতিরিক্ত পরিবহন ব্যয় ও ব্যবসা পরিচালনার খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে।বিশ্বের প্রায় সর্বত্র মূল্যস্ফীতির হার দুই সংখ্যার বেশি হওয়ার প্রকোপে জনজীবন বিপর্যস্ত এবং আশঙ্কাজনক পরিস্থিতিতে উপনীত হয়েছে।

সর্বশেষ খবর