শনিবার, ২৫ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

৪১৫ সড়কবাতিতে নান্দনিক রূপ

জিন্নাতুন নূর

সব অন্ধকার কাটিয়ে আলোয় উদ্ভাসিত এখন স্বপ্নের পদ্মা সেতু। সরাসরি বিদ্যুৎ সংযোগের মাধ্যমে পদ্মা সেতুর উভয় প্রান্তে ৪১৫টি সড়কবাতিতে সফলভাবে আলো জ্বালানো হয়েছে। ১৪ জুন সন্ধ্যায় মুন্সীগঞ্জের মাওয়া ও শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে পদ্মা সেতুর সব সড়কবাতি একসঙ্গে জ্বলে ওঠে। এতে পুরো পদ্মা সেতু আলোয় ঝলমলে হয়ে ওঠে। এর আগে কয়েকটি ধাপে পরীক্ষামূলকভাবে সেতুতে আলো জ্বালানো হয়। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুটিতে এই সড়কবাতিগুলো লাগানো হয়েছে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, বাংলাদেশের এই ঐতিহাসিক অর্জনে যেসব বিদ্যুৎকর্মী নিরলস শ্রম দিয়েছেন তাদের অভিনন্দন জানাই। সড়ক ও রেলপথের পাশাপাশি পদ্মা সেতুর মাধ্যমে গ্যাসও পৌঁছে যাবে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে। এর ফলে গড়ে উঠবে নতুন নতুন শিল্পপ্রতিষ্ঠান। বাড়বে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান। শরীয়তপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার মো. জুলফিকার রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমরা জাজিরা প্রান্তে পদ্মা সেতুর ৪২ নম্বর পিলারে ৮০ কিলোওয়াট লোড দিয়েছি। এর মাধ্যমে এই প্রান্তের সড়কবাতিগুলোর বিদ্যুতায়নের কাজ করা হয়েছে। পদ্মা সেতু কর্তৃপক্ষ স্থায়ীভাবে বিদ্যুতায়নের জন্য নিজস্ব ভবন তৈরি করছে। যেখান থেকে স্থায়ীভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হবে। এটি তৈরি করতে কিছুটা সময় লাগবে।

মুন্সীগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার এ এইচ এম মোবারক উল্লা বলেন, মুন্সীগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি এই সেতুতে ৮০ কিলোওয়াটের বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়েছে। তবে সেতু কর্তৃপক্ষ একটি স্থায়ী বৈদ্যুতিক সাবস্টেশন নির্মাণ করছে। এর কাজ এখনো চলছে। এটি নির্মাণ শেষ হলে সেতুর বৈদ্যুতিক কাজ এই সাবস্টেশন থেকেই করা হবে। জানা যায়, এরই মধ্যে মূল সেতুতে ৩২৮টি, জাজিরা প্রান্তে ৪৬টি এবং মাওয়া প্রান্তে ৪১টি সড়কবাতি বসানো হয়েছে।

উদ্বোধনের বেশ আগেই সেতুতে বিদ্যুৎ সংযোগের কাজ শেষ করেছে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বিআরইবি)। এর আওতাধীন দুটি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি থেকে ৮০ কিলোওয়াট করে মোট ১৬০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়েছে আরইবি কর্তৃপক্ষ। 

গত বছরের ২৫ নভেম্বর পদ্মা সেতুর মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে প্রথম সড়কবাতি বসানোর কাজ শুরু হয়। চলতি বছরের ১৮ এপ্রিল এসব সড়কবাতি ও এর ভিতরে বাতি লাগানোর কাজ শেষ হয়। এরপর পুরো সেতুতে টানা হয়েছে বৈদ্যুতিক ক্যাবল।

গত ২৫ মে রাত সাড়ে ৮টায় সেতু কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার নাওডোবা প্রান্তে ৪২ নম্বর পিলারে শরীয়তপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি থেকে সেতুতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়।  সেতুর সড়কবাতিতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার জন্য ১৫ মে মুন্সীগঞ্জ ও শরীয়তপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে চিঠি দেয় সেতু কর্তৃপক্ষ। সেই চিঠিতে নির্দেশনা ছিল মূল সেতুতে ৮০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ ৩০ মের মধ্যে সরবরাহ করতে হবে। তবে সম্ভব না হলে জুনের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে হবে। এ জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে জমা দেওয়া হয়। তবে সেতু কর্তৃপক্ষের অনুরোধে ৩০ মের আগেই পদ্মা সেতুতে বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়া হয়।

 

সর্বশেষ খবর