সাড়ে তিন শ বছর ধরে চলে আসা ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ও রাধার আরাধনায় এ গোষ্ঠপূজা ও দিনব্যাপী মেলা ভক্তদের মিলনমেলায় পরিণত হয়। গতকাল ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও যথাযোগ্য মর্যাদায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শত শত বর্ষের উৎসব এ গোষ্ঠমেলা অনুষ্ঠিত হয়।
দিনাজপুর শহরের আনন্দসাগর শিবমন্দির প্রাঙ্গণে দিনব্যাপী প্রতি বছরের ন্যায় এবারও হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অতি প্রাচীনকালের গোষ্ঠপূজা ও মেলায় হাজার হাজার দর্শনার্থী ও পুণ্যার্থীর ভিড়ে মুখরিত হয়ে ওঠে। গতকাল সকালে দিনাজপুর রাজবাটীস্থ কালিয়াজিউ মন্দির থেকে রাধা কৃষ্ণের মূর্তি নগ্ন পদব্রজে আনন্দসাগর এলাকায় শ্রী শ্রী গোষ্ঠধাম শিব মন্দিরের পাশে নিয়ে আসা হয়। সেখানে আলাদা করে রাধা কৃষ্ণ রেখে বাদ্য বাজনা নিয়ে পূজা ও ভক্তদের প্রসাদ বিতরণ করা হয়। পূজা উপলক্ষে বসে দিনব্যাপী মেলা। ১৭৫২ সাল থেকে এই গোষ্ঠপূজা এবং দিনব্যাপী মেলা হয়ে আসছে। পূজা ও মেলা দেখতে বিভিন্ন এলাকা থেকে সনাতন ধর্মপ্রাণ হাজার হাজার দর্শনার্থী ও পুণ্যার্থীরা এখানে আসেন। হিন্দু সম্প্রদায়ের মতে, বিশেষ এ দিনটিতে সবার মঙ্গল কামনা করেছেন তারা। নগ্ন পদব্রজে আনন্দসাগর এলাকায় শ্রী শ্রী গোষ্ঠধাম শিব মন্দিরে আসা রাজু বিশ্বাস জানান, প্রচলিত আছে, গোষ্ঠ অষ্টমীর দিনে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কালিয়া নাগকে দমন করেছিল। এ ছাড়াও আশি^ন-কার্তিক মাসে অভাবের কারণে এ অঞ্চলের মানুষ বলে থাকেন গোষ্ঠ গেলে কষ্ট শেষ হয়ে যায়। কার্তিক মাসে নতুন ধান ওঠে আর ঘরে ঘরে শুরু হয় নবান্ন উৎসব।
পূজারিদের মতে, কালীপূজার পরের অষ্টমীকেই গোষ্ঠ অষ্টমী বলা হয়। এই দিনে মূর্তি নিয়ে আসা হয়, আবার পূজা শেষে রাজবাড়ীতে প্রতিমাকে নিয়ে যাওয়া হয়। মহারাজার চিরাচরিত প্রথা ও ধর্মীয় নিয়ম অনুযায়ী এই উৎসব পালিত হয় বলে আয়োজকরা জানান।
