মঙ্গলবার, ৩ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

বিলীনের পথে খদ্দরের চাদর

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

বিলীনের পথে খদ্দরের চাদর

রংপুর নগরীতে বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন সিরাজুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি। কয়েকদিনের প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় তার ইচ্ছা হয় একটি খদ্দরের চাদর কিনবেন। নগরীর প্রায় সবগুলো কাপড়ের দোকান ঘুরেও কোথাও পাননি খদ্দরের চাদর।

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এই চাদর তৈরির পুরো প্রক্রিয়াটি চলে হাতে হাতে। এক সময় কুমিল্লা-কুষ্টিয়ার গ্রাম্য বধূরা ঘর-গৃহস্থালি কাজের ফাঁকে ফাঁকে চরকায় সুতা কেটে তাঁতিদের কাছে খদ্দর চাদর বিক্রি করে বাড়তি আয় করতেন। তাঁতিরা চরকার সুতা দিয়ে খদ্দরের চাদর তৈরি করতেন। বিভিন্ন স্থানের পাইকাররা এই চাদর ক্রয় করে সারা দেশে বিক্রি করতেন। কিন্তু এখন এ শিল্প ধ্বংসের মুখে। কারণ খাদি বা খদ্দরের কাপড়ের দাম বেশি। সেই তুলনায় মেশিনের কাপড়ের দাম অনেক কম। ফলে এ শিল্পটি হারিয়ে যেতে বসেছে। রংপুরে অবস্থানরত কুমিল্লার ব্যবসায়ী জহির উদ্দিন খদ্দরের চাদর প্রসঙ্গে উল্লেখ করেন, সুতার দাম বেশি, কারিগর সংকটসহ নানা কারণে এখন খদ্দরের চাদর তৈরি করেন না তাঁতিরা। তিনি জানান, তার এলাকার অধিকাংশ কারিগরই এখন বিদেশে গিয়ে চাকরি করছেন। ফলে খদ্দরের কারিগর নেই বললেই চলে। খদ্দরের চাদর প্রসঙ্গে সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কাজী মোহাম্মদ জুননুন বলেন, ‘১৯২১ সালে মহাত্মা গান্ধীর ডাকে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন শুরু হয়।

তখন বিদেশি পণ্য বর্জনের ডাক দেওয়া হয়। সেই সময়  থেকে খাদি কাপড়ের প্রচলন শুরু হয়। বিট্রিশ আমলে নোয়াখালীর গান্ধী আশ্রমে খাদি বা খদ্দর কাপড় বোনা হতো। তখন  সারা ভারতবর্ষে খদ্দরের চাদরের ব্যবহার ব্যাপক হারে শুরু হয়। এখন খদ্দরের চাদর আমাদের কাছে অতিত হয়ে গেছে।’ তিনি বড় বড় শিল্পপতিদের খদ্দরে ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার জন্য উদ্যোগী হওয়ার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন।

 

 

সর্বশেষ খবর