শুক্রবার, ৫ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

সংঘর্ষে উত্তাল মণিপুর, দেখা মাত্রই গুলি

নয়াদিল্লি প্রতিনিধি

ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্য মণিপুরে জানমালের ক্ষতিসাধনে লিপ্ত ব্যক্তিদের ‘দেখামাত্রই গুলি’র আদেশ জারি করেছে রাজ্য সরকার। মণিপুরে কয়েক দিন ধরে দুই জনজাতি গোষ্ঠীর মধ্যে লাগাতার সংঘর্ষে জনজীবন বিপর্যস্ত। তাই রাজ্য সরকার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সম্মতি নিয়ে সেনাবাহিনী মোতায়েন করেছে। ভারত সরকার বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে বাংলাদেশকে সতর্ক থাকতে বলেছে। বাংলাদেশকে তাদের সীমান্তে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। দিল্লি থেকে অত্যাধুনিক অস্ত্রসহ আধুনিক পুলিশ বাহিনী র‌্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে।

সংঘর্ষের কারণ হলো, গত সপ্তাহে মণিপুর উচ্চ আদালত রাজ্যের বাসিন্দা মেইতি গোষ্ঠীকে তফসিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। এতেই অন্য জনজাতি গোষ্ঠীর আপত্তি। এ মর্যাদা দেওয়ার অর্থ মেইতি জনগোষ্ঠীর সরকারি চাকরি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য সংরক্ষিত পদ থাকবে। রাজ্যে অন্য জনগোষ্ঠীর সংখ্যা অপেক্ষাকৃত কম। তাদের আশঙ্কা এর ফলে তাদের সব ধরনের সরকারি সুযোগ-সুবিধা কমে যাবে। আপত্তির অন্যতম বড় কারণ, সম্প্রতি মিয়ানমারে অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষের কারণে বহু মানুষ পালিয়ে মণিপুরসহ উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলোয় আশ্রয় নিচ্ছে। এতে স্থানীয় স্তরে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। বুধবার রাত থেকেই মণিপুর রাজ্যের রাজধানী ইম্ফলে সহিংসতার ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি সামাল দিতে রাজ্যের ৯টি জেলায় কার্ফু জারি করা হয়েছে। সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনী এলাকা থেকে ১০ হাজারের বেশি বিপন্ন মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে গেছে। মণিপুরে মোবাইল ও ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মণিপুরের উপজাতি ছাত্র সংগঠনের উদ্যোগে সংহতি দিবস পালন করা হয়। সেখানে ছাত্রদের অস্ত্র নিয়ে ঘুরে বেড়াতে দেখা যাচ্ছে। সামাজিক গণমাধ্যমে সেসব চিত্র ভাইরাল হয়েছে। তাতে আতঙ্ক বেড়েছে। মঙ্গলবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিজেপির বীরেন্দ্র সিং এক উপজাতি এলাকায় গিয়ে সভা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু উন্মত্ত জনতা সভাস্থলে আগুন লাগিয়ে দেয়। উত্তর-পূর্ব ভারতের অন্য রাজ্যের মধ্যে মিয়ানমার সীমান্ত এলাকা মিজোরাম ও মেঘালয় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরাও উদ্বেগ প্রকাশ করছেন।

সর্বশেষ খবর