বরিশাল জেলা মডেল মসজিদ এখন এক দর্শনীয় স্থান। এক নামে যার পরিচিতি। নান্দনিক স্থাপত্যশৈলীর এই মসজিদের কারণে বেড়েছে অত্র এলাকার সুখ্যাতি। নিয়মিত মুসল্লি ছাড়াও দর্শনার্থীদের আনাগোনা বেড়েছে এই এলাকায়। এতে আশপাশের ক্ষুদ্র ও ভাসমান ব্যবসায়ীরা পেয়েছে বেঁচে থাকার অবলম্বন। জেলা মডেল মসজিদ একটি দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা। এ কারণে অত্র এলাকার আভিজাত্য বেড়েছে বলে দাবি ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও গণপূর্ত কর্মকর্তার।
বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের নগরীর আলেকান্দা এলাকায় গণপূর্ত বিভাগের সরকারি বাসভবন চত্বরের ৪৩ শতাংশ জমির ওপর প্রায় সাড়ে ১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০২০ সালের ১৬ অক্টোবর জেলা মডেল মসজিদ নির্মাণ শুরু হয়। চলতি বছরের শুরুর দিকে মসজিদের নির্মাণকাজ শেষ হয়। চারতলা বিশিষ্ট মডেল মসজিদে ৩২ হাজার ৪৮৫ স্কয়ার ফুট জায়গা ব্যবহারযোগ্য।
মসজিদ নির্মাণকারী গণপূর্ত বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. ইউসুফ জানান, এই মসজিদে ১০০ ফুট উঁচু একটি মিনার রয়েছে। বিভিন্ন তলায় একসঙ্গে ১ হাজার নারী ও পুরুষ পৃথকভাবে নামাজ আদায় করতে পারেন। এ ছাড়া ইমাম প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, গণশিক্ষা কেন্দ্র, সভাকক্ষ, অফিস কক্ষ, ইসলামিক চর্চা কেন্দ্র, গেস্ট রুম, মক্তব, নারী ও পুরুষের পৃথক অজুখানা, লাইব্রেরি, মৃত ব্যক্তির গোসল করানোর স্থান, ইমাম-মুয়াজ্জিনের থাকার স্থান এবং পার্কিং সুবিধা রয়েছে। সামনের দিকে এসএস গ্রিল থাকায় এর নান্দনিকতা ফুটে উঠেছে। গত ১৬ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি এই মসজিদ উদ্বোধন করেন। স্থানীয় বাসিন্দা নজরুল ইসলাম জানান, নান্দনিক স্থাপত্যশৈলীর কারণে উদ্বোধনের আগেই জেলা মডেল মসজিদ একটি দর্শনীয় স্থানে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন বিভিন্ন স্থান থেকে বহু মানুষ মডেল মসজিদের সৌন্দর্য দেখতে আসেন। প্রিয় মুহূর্তগুলো ক্যামেরাবন্দি করেন দর্শনার্থীরা।আমতলার বাসিন্দা রেজাউল কবির জানান, গত ১৬ মার্চ উদ্বোধনের পরদিন প্রথম জুমায় এই মসজিদে মুসল্লিদের ঢল নেমেছিল। এরপর থেকে প্রতি জুমায় আশপাশসহ দূরদূরান্তের অনেকে জুমার নামাজ আদায় করতে মডিল মসজিদে আসেন। দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজেও এই মসজিদে প্রচুর মুসল্লি হয়।
স্থানীয় শ্রমিক লীগ নেতা মিজানুর রহমান মুন্না বলেন, আমতলা লেক এবং মডেল মসজিদ ঘিরে দিনের দ্বিতীয়ভাগে দর্শনার্থীদের প্রচুর আগমন ঘটে। বিশেষ উৎসবে দর্শনার্থীদের ভিড় বেড়ে যায়। মানুষের আনাগোনা বেড়ে যাওয়ায় ফুটপাতে বসেছেন অর্ধশতাধিক ক্ষুদ্র ও ভাসমান ব্যবসায়ী। এতে সংসার-পরিজন নিয়ে ভালোই কাটছে ক্ষুদ্র ও ভাসমান ব্যবসায়ীদের দিনকাল। মডেল মসজিদ ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব ইসলামিক ফাউন্ডেশনের। বরিশাল ইসলামিক ফাউন্ডেশেনের উপ-পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম বলেন, অবশ্যই মডেল মসজিদ একটি দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা। প্রতিদিন অনেক দর্শনার্থী এর নান্দনিকতা দেখতে আসেন। সরকারি ছুটি কিংবা বিশেষ উৎসবে দর্শনার্থীদের উপস্থিতি বেড়ে যায়। জুমাসহ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে মুসল্লিতে মসজিদ ভরে যায়।
তিনি আরও বলেন, এই মসজিদে গণশিক্ষা ও মক্তব কার্যক্রম এখনো শুরু হয়নি। এ বছরের শেষের দিকে এই দুটি কর্মসূচি চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। এ ছাড়া মৃত ব্যক্তি গোসল কার্যক্রমও শুরু হয়নি। তবে শিগগিরই মৃত ব্যক্তি গোসল করানোর কাজ শুরু হবে। ইসলামিক চর্চা ছাড়াও জেলা মসজিদ একটি দর্শনীয় স্থানে পরিণত হয়েছে বলে জানিয়েছেন বরিশাল গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কামরুল হাসান।