ভুলভাবে অভিযুক্ত হওয়া এক ব্যবসায়ীর কবরে গিয়ে ফুল অর্পণ ও নতজানু হয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করেছে জাপানি পুলিশ ও প্রসিকিউশনের কর্মকর্তারা। কিন্তু ততদিনে দেরি হয়ে গেছে—শিজুও আইশিমা নামের ওই উদ্যোক্তা বিচার প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার আগেই ক্যান্সারে মারা গেছেন।
২০২০ সালের মার্চে আইশিমা ও আরও তিনজন নির্বাহীকে বেআইনি রপ্তানির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, স্প্রে ড্রায়ার নামের একটি শিল্প যন্ত্র রপ্তানি করেছেন, যা তরলকে গুঁড়োতে পরিণত করতে ব্যবহৃত হয় এবং সামরিক খাতে ব্যবহারযোগ্য হতে পারে। তবে সংশ্লিষ্ট কোম্পানি জানিয়েছিল, এই যন্ত্র রপ্তানি নিয়ন্ত্রণের আওতায় পড়ে না।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে পাকস্থলীর ক্যান্সারে আইশিমার মৃত্যু হয়। মাত্র পাঁচ মাস পর, একই বছরের জুলাইয়ে প্রসিকিউটররা অভিযোগ প্রত্যাহার করেন এবং জানান অভিযুক্তদের দোষ নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
আইশিমা জীবদ্দশায় আটবার জামিনের আবেদন করেছিলেন, কিন্তু প্রতিবারই তা খারিজ হয়। প্রসিকিউটর হিরোশি ইচিকাওয়া পরে স্বীকার করেন, ভুলভাবে আটক ও মামলা করার মাধ্যমে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে এবং অযথা জামিন প্রত্যাখ্যানের কারণে আইশিমা যথাযথ চিকিৎসার সুযোগ থেকেও বঞ্চিত হয়েছেন।
আইশিমার পরিবার টোকিও আদালতে মামলা করে ক্ষতিপূরণ দাবি করে। আদালত রায় দেন অভিযোগ দায়ের বেআইনি ছিল এবং ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১৬৬ মিলিয়ন ইয়েন (প্রায় ১.১২ মিলিয়ন ডলার) প্রদানের নির্দেশ দেন। টোকিও মেট্রোপলিটন পুলিশ ও জেলা প্রসিকিউটর অফিস এ রায়ের বিরুদ্ধে কোনো আপিল না করায় তা গত জুনে চূড়ান্ত হয়।
সোমবার ইয়োকোহামায় আইশিমার কবরে গিয়ে ক্ষমা চায় কর্তৃপক্ষ। তার স্ত্রী জানান, তিনি এই ঘটনার জন্য দোষীদের কখনও ক্ষমা করতে পারবেন না।
তদন্তে ভুল অভিযোগের প্রকৃত কারণ উদঘাটন হয়নি বলে অভিযোগ পরিবারের। তাদের মতে, যে শাস্তির সুপারিশ করা হয়েছে তা ঘটনাটির গুরুত্বের তুলনায় অতি সামান্য।
সূত্র: বিবিসি
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল