সংবিধান সংশোধন করে বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা সংসদের হাতে দেওয়া হচ্ছে। এজন্য ‘সংবিধান (ষোড়শ সংশোধন) আইন, ২০১৪’ এর খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সভাকক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূঁইঞা প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, 'ভোটিং সাপেক্ষে আইনের খসড়াটি চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।'
যুক্তরাজ্য সফর নিয়ে গত ২৬ জুলাই গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উচ্চ আদালতের বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা জনপ্রতিনিধিদের হাতে থাকা উচিত বলে মন্তব্য করেন। আইন কমিশনও বিচারপতিদের আভিশংসণের ক্ষমতা সংসদের হাতে দেওয়ার বিষয়ে মত প্রকাশ করেছে।
১৯৭২ সালের সংবিধানে ৯৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী অদক্ষতা, অযোগ্যতা, দুর্নীতিসহ অসদাচরণের কারণে বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের হাতে ছিল। ১৯৮৯ সালে সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান এক সামরিক ফরমানে বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা বাতিল করেন। এ সময় বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা দেওয়া হয় সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের কাছে।
গত মহাজোট সরকারের সময়ে সুপ্রিম কোর্টের জমি নিয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগকে দেওয়া হাইকোর্টের আদেশের বিষয়ে স্পিকার আবদুল হামিদ ২০১২ সালের গত ২৯ মে একটি বক্তব্য দেন। তিনি সংসদে বলেছিলেন, ‘দেশের মানুষের বিচারের ক্ষেত্রে বছরের পর বছর লেগে যাবে আর নিজেদের বিষয় বলে বিচার বিভাগ ঝটপট সিদ্ধান্ত নিয়ে নেবেন, এটি ভালো দেখায় না। আদালতের রায়ে ক্ষুব্ধ হলে জনগণ বিচার বিভাগের বিরুদ্ধেও রুখে দাঁড়াতে পারে।’
এরপর হাইকোর্টে এ সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে স্পিকারের বক্তব্য রাষ্ট্রদ্রোহের শামিল বলে মন্তব্য করেন বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী। এরপরই বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা সংসদের হাতে দেওয়ার বিষয়টি আলোচিত হয়।