লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপলির উপশহর মিশরাতা থেকে অপহৃত দুই বাংলাদেশি শ্রমিক আসাদ ও রিপনকে উদ্ধার করেছে লিবিয়া পুলিশ।
উদ্ধার হওয়ার পর আসাদ টেলিফোনে বাবা আব্বাস আলীকে জানান, তাদেরকে আইএস জঙ্গির কোন সদস্য অপহরণ করেনি। তবে যুদ্ধের অস্থিতিশীলতার সুযোগ নিয়ে স্থানীয় কিছু সন্ত্রাসী বহিরাগত শ্রমিকদের প্রায় অপহরণ করে এবং কিছু টাকা পয়সা আদায় করে তাদের ছেড়ে দেয়। কিছুদিন আগে বাংলাদেশি আরো ৩ শ্রমিক, ভারতীয় ২ জন এবং শ্রীলংকান ৫ শ্রমিককে সন্ত্রাসীরা অপহরণ করে এবং তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে ২ হাজার করে লিবিয় মুদ্রা নিয়ে ছেড়ে দেয়। অর্থ দিতে অস্বীকার করলে, তারা মারধর ও নির্যাতন করে।
গত শুক্রবার বাংলাদেশ সময় রাত ১২ টার দিকে লিবিয়ার মিশরাতা উপশহরের একটি বাজারের পাশ থেকে তাদের ধরে নিয়ে যায় ওই সন্ত্রাসীরা। অপহরণ হওয়া এই দুই যুবক হলেন ঠাকুরগাওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার গড়গাঁও গ্রামের আব্বাস আলীর ছেলে আসাদুজ্জামান রাসেল (২৪) ও মুন্সিগঞ্জ জেলার রিপন (২২)।
উদ্ধার হওয়া রিপন টেলিফোনে জানায়, এই তিনদিন তারা দুইজনসহ ভারতীয় ও শ্রীলংকার মোট ৭ জনকে মিশরাতা শহর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে একটি ঘরের মধ্যে আটকে রাখা হয়। তারা অপহরণ হবার পরে বিষয়টি তাদের রুমমেট শাহীন, তবারুলসহ আল-মদিনা লিমিটেড এর মালিক পক্ষ স্থানীয় পুলিশকে জানায়।
রিপন জানান, অপহরণের পরে তাদের কাছ থেকে অপহরণকারীরা ১০ হাজার লিবিয়া দিনার মুক্তিপন দাবি করে। পরের দিন থেকে পুলিশের তৎপরতার কারণে কারো সাথে তাদের ফোনে যোগাযোগ করতে দেয়া হয়নি। সোমবার বাংলাদেশ সময় দুপুর ২ টার দিকে পুলিশ ওই বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাদের দু'জনসহ ভারতীয় ও শ্রীলংকার ৭ জনকে উদ্ধার করে মিশরাতার ক্যারাং থানায় আনা হয়। সেখান থেকে আল-মদিনা গ্রুপের লোকজন তাদের নিয়ে আসে। পুলিশের অভিযানের সময় তাদের সাথে থাকা ৫ জন সন্ত্রাসী অপহৃতদের ঘরে আটকে রেখে তালা মেরে পালিয়ে যায়। পুলিশ তালা ভেঙে তাদের উদ্ধার করে।
আসাদ জানায়, মিশরাতা শহর আইএস জঙ্গিদের দ্বারা এখনো আক্রান্ত হয়নি। তবে যুদ্ধ ও কিছু সন্ত্রাসীর কারণে এই জায়গাটিও বহিরাগত শ্রমিকদের জন্য ঝুকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
আসাদের মা আলেমা খাতুন সরকারের তৎপরতার জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, উদ্ধার হওয়া ছেলের সাথে ফোনে কথা হয়েছে, সে ভাল আছে।
অপর দিকে আসাদের সঙ্গে বাংলাদেশ প্রতিদিনের ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি সাথে আজ মঙ্গলবার দুপুরে ফোনে কথা হয়। ওই সময় আসাদ তার পরিবারের সাথেও কথা বলেন।
বিডি-প্রতিদিন/২৯ মার্চ ২০১৬/ এস আহমেদ