ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেম আলীর সঙ্গে শেষ দেখা করে এসেছেন তার স্বজনরা। কারা কর্তৃপক্ষ ডেকে পাঠানোর পর শনিবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে ছয়টি মাইক্রোবাসে করে কাসেম আলীর স্ত্রী, ছেলে, ছেলের বউ, তাদের শিশু সন্তান ও স্বজনসহ ৪৫ জন কেন্দ্রীয় কাশিমপুর কারাগারে উপস্থিত হয়। খবর বিডি নিউজের।
মীর কাসেমের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে মোট ৩৮ জনকে দেখা করার জন্য ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় বলে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর জেলার নাশির আহমেদ জানান। সন্ধ্যা ৬টা ৩৫ মিনিটে তারা বেরিয়ে আসেন। কারা ফটক থেকে বের হয়েই গাড়িতে উঠে চলে যান তারা।
মীর কাসেম আলীর ফাঁসি কখন কার্যকর হবে সে বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষ বা সরকার কিছু না বললেও দুপুরের পর থেকে কাশিমপুর কারাগার কমপ্লেক্সের বাইরের নিরাপত্তা আরও বাড়ানো হয়। আরপি চেকপোস্ট সংলগ্ন দোকানপাটও বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর আগে যুদ্ধাপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পাঁচজনের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, পরিবারের শেষ সাক্ষাতের দিনই তাদের ফাঁসি কার্যকর করেছে কর্তৃপক্ষ।
মীর কাসেম আলীকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ২০১২ সালের ১৭ জুন গ্রেফতার করা হয়। ২০১৩ সালের ৫ সেপ্টেম্বর তার বিরুদ্ধে ১৪টি অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করে ট্রাইব্যুনাল। মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ২০১৪ সালের ২ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ে দুটি অভিযোগে মীর কাসেমের ফাঁসি ও আটটি অভিযোগে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড হয়। ওই বছরের ৩০ নভেম্বর আপিল করেন মীর কাসেম। চলতি বছরের ৮ মার্চ আপিলের রায়ে ১৯৭১ সালে চট্টগ্রামের কিশোর মুক্তিযোদ্ধা জসিমকে হত্যার দায়ে মীর কাসেমের ফাঁসির আদেশ বহাল রাখে সর্বোচ্চ আদালত। অন্য ছয়টি অভিযোগে বিভিন্ন মেয়াদে তার কারাদণ্ড বহাল রাখে আপিল বিভাগ। ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ১৯ জুন আবেদন করেন মীর কাসেম। তার আবেদনের ওপর ২৪ আগস্ট শুনানি শুরু হয়। মীর কাসেমের রিভিউ আবেদনের ওপর গত ২৮ আগস্ট শুনানি শেষ হয়। এরপর ৩০ আগস্ট মীর কাসেমের করা আবেদন খারিজ করে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। মীর কাসেমের আইনি লড়াইয়ে রিভিউ আবেদনই ছিল শেষ ধাপ।
বিডি-প্রতিদিন/ ০৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৬/ আফরোজ