মো. নুরুল হক সরকার ওরফে শেখ গনি সরকার (৭২) নামের এক ব্যক্তি টাকার বিনিময়ে ১৪৪টি বিষয়ের ওপর সার্টিফিকেট দিতেন বলে অভিযোগ। প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি নামে নাম সর্বস্ব একটি বিশ্ববিদ্যালয়ও খুলেন তিনি। তিনিই এই ভুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি। এই প্রতিষ্ঠান থেকে তিনি এমবিবিএস, বিডিএস, এমফিল, পিএইচডি, ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ের সার্টিফিকেট দিতেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
১৯৯৬ সাল থেকে তিনি এমন শতশত ভুয়া এমবিবিএস-বিডিএস সার্টিফিকেট দিয়েছেন। তথা শতশত ভুয়া চিকিৎসক বানিয়েছেন। বিনিময়ে প্রতিটি এমবিবিএস সার্টিফিকেটের জন্য হাতিয়েছেন ৪ থেকে ২৫ লাখ টাকা।
এসব অভিযোগের ভিত্তিতে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ওই ভুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও একজন সহযোগীসহ চারজন ভুয়া এমবিবিএস চিকিৎসককে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা ওয়ারী বিভাগের ওয়ারী জোনাল টিম। গতকাল বুধবার রাজধানীর মালিবাগের প্যারামাউন্ট টাওয়ারে অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার জানান, গ্রেফতাররা মাদরাসা থেকে দাখিল ও কামিল পাস করে টাকার বিনিময়ে এমবিবিএস ডিগ্রি নেন। দাখিল ও কামিল পাসে কোনোভাবেই এমবিবিএস ডিগ্রি নেওয়া সম্ভব নয়। এমবিবিএস ডিগ্রি নিয়ে সুসজ্জিত চেম্বার খুলে এসব চিকিৎসক রোগীও দেখতেন নিয়মিত।
গ্রেফতাররা হলেন- চক্রের মূলহোতা প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির ভিসি ডা. মো. নুরুল হক সরকার ওরফে শেখ গনি সরকার (৭২), মো. মোয়াজ্জেম হোমেন (৫৮), ডা. মো. সাইদুর রহমান ওরফে নজরুল (৩০), মো. মাহফুজুর রহমান ওরফে মাহফুজ (৩৭), ডা. মো. আমান উল্লাহ (৩৮) ও দেবাশীষ কুন্ডু (৫২)।
গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার জানান, গ্রেফতার চক্রটি প্রায় দুই দশক ধরে প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির নামে ভুয়া সার্টিফিকেট বিক্রির ব্যবসা করে আসছিল। প্রতারণার কাজে তারা ভুয়া ওয়েবসাইট, বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চটকদার বিজ্ঞাপন দিতেন। তাদের কম্পিউটারাইজড ক্যাম্পাস যা বাস্তবে অস্তিত্বহীন এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভুয়া আদেশ ও হাইকোর্টের জাল রিট দেখাতেন। এমনকি প্রতারক চক্রের সদস্যদের রোগী দেখার চেম্বার অত্যাধুনিক উপায়ে সজ্জিত এবং নামফলক সংবলিত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ডিগ্রি উল্লেখসহ আকর্ষণীয়ভাবে প্রদর্শন করতেন।
ডিবি প্রধান বলেন, মো. সাইদুর রহমান ওরফে নজরুল, মো. মাহফুজুর রহমান ওরফে মাহফুজ ও মো. আমান উল্লাহ একটি মাদরাসা থেকে দাখিল পাস করে টাকার বিনিময়ে এমবিবিএস ডিগ্রি নেন। দাখিল ও কামিল পাসে যা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। এমবিবিএস ডিগ্রি নিয়ে সুসজ্জিত চেম্বার খুলে এসব চিকিৎসক রোগীও দেখতেন নিয়মিত।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ